ঢাকা ১২:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

রায়পুরে শব্দমাত্রা মানছেনা প্রার্থীরা : মাইকিং এ অতিষ্ঠ পৌরবাসী

জয়নাল আবেদীন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভায় জোর প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রার্থীদের পক্ষে মাইকিং এ চলে বাহারী প্রচার প্রচারণা। শব্দমাত্রা না মেনে উচ্চশব্দে চলা এসব প্রচারণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। এতে ঝুঁকি বাড়ছে হার্ট ও কানের রোগীদের। পরিক্ষার্থী ও অফিসের কর্মীরা পড়েছেন সমস্যায়। প্রতিটি ওয়ার্ডে গড়ে প্রতিদিন ৮ প্রার্থীর মাইক বাজে। এসব প্রচারণায় অনেক সময় ৮০-১০০ ডেসিবল শব্দমাত্রায় মাইক চলে।

শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রন) বিধিমালা, ২০০৬- এ নিরব, আবাসিক, মিশ্র, বানিজ্যিক ও শিল্প এই পাঁচটি এলাকা চিহ্নিত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিধিমালায় নিরব এলাকায় দিনে ৫০ রাতে ৪০, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ রাতে ৪৫, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০ রাতে ৫০, বানিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ রাতে ৬০ এবং শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ রাতে ৭০ ডেসিবল শব্দের মান মাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া আছে। অথচ রায়পুর পৌরসভায় তা মানছে না অধিকাংশ প্রার্থীরা। তবে ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী তানজিদ কামাল সহ দু’একজনকে লক্ষ্য করা গেছে সহণীয় মাত্রায় ব্যাতিক্রমী প্রচারণা চালাতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ওয়ালে দুঃখ প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিতে।

রায়পুর সরকারী কলেজের ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুবেল ও মরিয়ম জানায়,গত ১৩ ফেব্রুয়ারী থেকে তাদের ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা চলমান রয়েছে। মাইকের উচ্চশব্দে তাদের লেখা পড়ার বিঘ্ন ঘটছে।

রায়পুর নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা শিক্ষানবিশ আইনজীবী মোঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ” আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয়ার লক্ষ্যে চুড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছি। দুপুর ২টার পর কানে তুলা দিয়ে পড়ার টেবিলে বসে থাকতে হয় “।

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার বাহারুল আলম বলেন, ” নিয়মিত তীব্র শ্রবণে সাধারনত মানুষ সাময়িক বধির ও ১০০ ডেসিবলের ধারাবাহিক শ্রবণে স্হায়ী বধির হয়ে যেতে পারে। মাইকিং এর উচ্চ শব্দ মানুষের মস্তিষ্কে আঘাত করে এতে শ্রবণশক্তি ছাড়াও হ্নদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ রকম শব্দদূষণে তিন বছর বা আরো কম বয়সি শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয় “।

রায়পুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌরসভা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নি অফিসার দিপক বিশ্বাস বলেন, প্রচারে কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে নিয়মনীতি ভঙ্গ করার অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেয়া হবে “।

প্রসঙ্গতঃ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি রায়পুর পৌরসভায় ইভিএম এ ভোট গ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে। পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছেন ২৩ হাজার ৬শ’ ৩১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ৯শ’ ৯০জন ও মহিলা ভোটার ১১ হাজার ৬শ’ ৪১ জন। এখানে ৯টি ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১৩টি। প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন মেয়র পদে ৬, সাধারণ পদে ৫০ ও সংরক্ষিত নারী পদে ৭ জন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

রায়পুরে শব্দমাত্রা মানছেনা প্রার্থীরা : মাইকিং এ অতিষ্ঠ পৌরবাসী

আপডেট টাইম : ১২:৩৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১

জয়নাল আবেদীন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভায় জোর প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রার্থীদের পক্ষে মাইকিং এ চলে বাহারী প্রচার প্রচারণা। শব্দমাত্রা না মেনে উচ্চশব্দে চলা এসব প্রচারণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। এতে ঝুঁকি বাড়ছে হার্ট ও কানের রোগীদের। পরিক্ষার্থী ও অফিসের কর্মীরা পড়েছেন সমস্যায়। প্রতিটি ওয়ার্ডে গড়ে প্রতিদিন ৮ প্রার্থীর মাইক বাজে। এসব প্রচারণায় অনেক সময় ৮০-১০০ ডেসিবল শব্দমাত্রায় মাইক চলে।

শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রন) বিধিমালা, ২০০৬- এ নিরব, আবাসিক, মিশ্র, বানিজ্যিক ও শিল্প এই পাঁচটি এলাকা চিহ্নিত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিধিমালায় নিরব এলাকায় দিনে ৫০ রাতে ৪০, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ রাতে ৪৫, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০ রাতে ৫০, বানিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ রাতে ৬০ এবং শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ রাতে ৭০ ডেসিবল শব্দের মান মাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া আছে। অথচ রায়পুর পৌরসভায় তা মানছে না অধিকাংশ প্রার্থীরা। তবে ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী তানজিদ কামাল সহ দু’একজনকে লক্ষ্য করা গেছে সহণীয় মাত্রায় ব্যাতিক্রমী প্রচারণা চালাতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ওয়ালে দুঃখ প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিতে।

রায়পুর সরকারী কলেজের ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুবেল ও মরিয়ম জানায়,গত ১৩ ফেব্রুয়ারী থেকে তাদের ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা চলমান রয়েছে। মাইকের উচ্চশব্দে তাদের লেখা পড়ার বিঘ্ন ঘটছে।

রায়পুর নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা শিক্ষানবিশ আইনজীবী মোঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ” আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয়ার লক্ষ্যে চুড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছি। দুপুর ২টার পর কানে তুলা দিয়ে পড়ার টেবিলে বসে থাকতে হয় “।

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার বাহারুল আলম বলেন, ” নিয়মিত তীব্র শ্রবণে সাধারনত মানুষ সাময়িক বধির ও ১০০ ডেসিবলের ধারাবাহিক শ্রবণে স্হায়ী বধির হয়ে যেতে পারে। মাইকিং এর উচ্চ শব্দ মানুষের মস্তিষ্কে আঘাত করে এতে শ্রবণশক্তি ছাড়াও হ্নদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ রকম শব্দদূষণে তিন বছর বা আরো কম বয়সি শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয় “।

রায়পুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌরসভা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নি অফিসার দিপক বিশ্বাস বলেন, প্রচারে কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে নিয়মনীতি ভঙ্গ করার অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেয়া হবে “।

প্রসঙ্গতঃ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি রায়পুর পৌরসভায় ইভিএম এ ভোট গ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে। পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছেন ২৩ হাজার ৬শ’ ৩১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ৯শ’ ৯০জন ও মহিলা ভোটার ১১ হাজার ৬শ’ ৪১ জন। এখানে ৯টি ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১৩টি। প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন মেয়র পদে ৬, সাধারণ পদে ৫০ ও সংরক্ষিত নারী পদে ৭ জন।