ওসমান হারুনী,জামালপুর প্রতিনিধি:
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে এক নারী গ্রাম পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগে ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জামালপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভূক্তভোগী ওই নারী।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার চাপারকোনা গ্রামের সুমুতুল্লাহর মেয়ে সীমা আক্তার (৩৫) ডোয়াইল ইউনিয়নে একজন গ্রাম পুলিশ সদস্য হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বিগত ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপনের(৪৫) সহযোগী কামাল হোসেন(৫০) ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে সীমা আক্তারকে তার স্বামী সুরুজ মিয়াকে তালাক দিতে বাধ্য করে। এরপর কামাল হোসেন ডোয়াইল বাজার এলাকায় সীমা আক্তারকে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দেন। ভাড়া বাসায় সীমা আক্তারকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করে কামাল হোসেন। কিন্তু বিয়ের জন্য সময় ক্ষেপন করায় সীমা আক্তার ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপনকে বিষয়টি জানায়। ঘটনাটি জানার পর ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন গ্রাম পুলিশ সদস্য সীমা আক্তারকে সরিষাবাড়ী পৌর শহরের শিমলা বাজার এলাকায় একটি ভবনের ৫ম তলায় চেয়ারম্যানের ভাড়া বাসায় যাওয়ার জন্য বলেন। ওই ভাড়া বাসায় চলতি বছরের ২২ জানুয়ারী ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন তার স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে সীমা আক্তারকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। কিন্তু চেয়ারম্যানের অধীনে কর্মরত থাকায় গ্রাম পুলিশ সদস্য সীমা আক্তার ধর্ষণের বিষয়টি গোপন রাখেন। এছাড়াও গত ৫ মার্চ রাতে সীমা আক্তারের ভাড়া বাসায় গিয়ে পুনরায় বিয়ের আশ্বাস দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগী কামাল। পরে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন কামাল হোসেন।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী জানান, এ ব্যাপারে বিভিন্ন ব্যাক্তিবর্গের কাছে গিয়েও কোন বিচার না পাওয়ায় গত ১৫ মার্চ বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সীমা আক্তার। পরে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনদিন পর সুস্থ হয় সীমা। ন্যায্য বিচারের জন্য বৃহস্পতিবার সরিষাবাড়ী উপজেলার মাজালিয়া গ্রামের মান্নান মিয়ার ছেলে কামাল হোসেন ও ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন গ্রাম পুলিশ সদস্য সীমা আক্তার। তিনি আরও জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক শহিদুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।