>

রবিবার, ১১ Jun ২০২৩, ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন

ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

ফিচার ডেস্ক :  ডেঙ্গুজ্বরের কোন ভ্যাক্সিন নেই। ডেঙ্গুজ্বরের ভাইরাস চার ধরনের। এ ভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করে এমন ভ্যাক্সিন আবিষ্কৃত হয়নি। তাই ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধের মূলমন্ত্র হলো এডিস মশার বিস্তার রোধ এবং এ মশা যেন কামড়াতে না পারে, তার ব্যবস্থা করা। এনিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে পরামর্শ দিয়েছেন প্রফেসর ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ।

আরো পড়ুন :  চিচিঙ্গার এতো গুণ!

এডিস একটি ভদ্র মশা, অভিজাত এলাকায় বড় বড় সুন্দর সুন্দর দালান কোঠায় এরা বাস করে। স্বচ্ছ পরিষ্কার পানিতে এ মশা ডিম পাড়ে। ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত ড্রেনের পানি এদের পছন্দসই নয়। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার ডিম পাড়ার উপযোগী স্থানগুলোকে পরিষ্কার রাখতে হবে এবং একই সাথে মশক নিধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এ রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো ব্যক্তিগত সতর্কতা এবং এডিস মশা প্রতিরোধ।

সতর্কতা: ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সতর্কতার গুরুত্ব অপরিসীম। মনে রাখতে হবে এডিস মশা মূলত দিনের বেলা, সকাল ও সন্ধ্যায় কামড়ায়, তবে রাত্রে উজ্জ্বল আলোতেও কামড়াতে পারে। তাই-
১. দিনের বেলা যথাসম্ভব শরীর ভালোভাবে কাপড়ে ঢেকে রাখতে হবে, পায়ে মোজা ব্যবহার করা যেতে পারে।
২. বাচ্চাদের হাফপ্যান্টের বদলে ফুলপ্যান্ট বা পায়জামা পরাতে হবে।
৩. মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য দিনে ও রাতে মশারি ব্যবহার করতে হবে। দরজা-জানালায় নেট লাগাতে হবে।
৪. প্রয়োজনে মসকুইটো রিপেলেন্ট, স্প্রে, লোশন বা ক্রিম, কয়েল, ম্যাট ব্যবহার করা যেতে পারে।

মশা নিধন: যেহেতু এডিস মশা মূলত এমন বস্তুর মধ্যে ডিম পাড়ে যেখানে স্বচ্ছ পানি জমে থাকে, তাই-
১. ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, বাড়িঘরে এবং আশপাশে যে কোন পাত্র বা জায়গায় জমে থাকা পানি ৩-৫ দিন পরপর ফেলে দিলে এডিস মশার লার্ভা মারা যাবে।
২. পাত্রের গায়ে লেগে থাকা মশার ডিম অপসারণে পাত্রটি ঘঁষে পরিষ্কার করলে ভালো।
৩. ঘরের বাথরুমে কোথাও জমানো পানি ৫ দিনের বেশি যেন না থাকে।
৪. অ্যাকুরিয়াম, ফ্রিজ বা এয়ার কন্ডিশনারের নিচে এবং মুখ খোলা পানির ট্যাংকে যেন পানি জমে না থাকে সে ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. বাড়ির ছাদে অনেককে বাগান করতে দেখা যায়, সেখানে টবে বা পাত্রে যেন জমা পানি ৫ দিনের বেশি না থাকে, সেদিকেও যত্নবান হতে হবে।
৬. বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড়, জঙ্গল, জলাশয় ইত্যাদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

মশার বংশ বিস্তার রোধ: এ কাজগুলোর দায়িত্ব বর্তায় প্রশাসনে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের ওপর।
১. ঘরের বাইরে মাঝে মাঝে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হওয়ার ফলে পানি জমতে পারে। যেমন- ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, কন্টেইনার, মটকা, ব্যাটারির শেল, পলিথিন বা চিপসের প্যাকেটে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করতে হবে।
২. মশা নিধনের জন্য স্প্রে বা ফগিং করতে হবে।
৩. বিভিন্ন রাস্তার আইল্যান্ডে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ফুলের টব, গাছপালা, জলাধার ইত্যাদি দেখা যায়। এখানে বৃষ্টির পানি জমে থাকতে পারে। সেগুলোতেও যেন পানি জমে না থাকে, সে ব্যপারে যত্নবান হতে হবে।

পরিশেষে বলা যায়, ডেঙ্গুজ্বর হয়তোবা নির্মূল করা যাবে না, এর কোন ভ্যাক্সিন কিংবা কার্যকরী ওষুধও আবিষ্কৃত হয়নি। ডেঙ্গুজ্বরের মশাটি আমাদের দেশে আগেও ছিল, এখনও আছে। মশা প্রজননের এবং বংশবৃদ্ধির পরিবেশও আছে। তাই ডেঙ্গুজ্বর ভবিষ্যতেও থাকবে। একমাত্র সচেতনতা ও প্রতিরোধের মাধ্যমেই এর হাত থেকে মুক্তি সম্ভব।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2018 Dainikalorjagat.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com