মিহিরুজ্জামান, সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় সের আলী নার্সিং হোম এন্ড পাটকেলসরী ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে রোগীদের চিকিৎসা সেবা নামে চলছে প্রতারনা। এখানে সেবা নিতে এসে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে দুঃস্থ অসহায় সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভোধনের পরে তেমন কোন স্পেশালিষ্ট চিকিৎসক চেম্বারনা করলেও সাতক্ষীরা খুলনা সহ পার্শ্ববর্তী নামী দামী হাসপাতালে চিকিৎসকদের নামে উলেখ করে সাইনবোর্ড সাটানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দনের জন্য কিন্তু আদৌও ঐ সকল চিকিৎসকদের এখানে চেম্বার করতে দেখা যায়নি। ভুয়া ডিগ্রীধারী চিকিৎসক ডায়াগনষ্টিকের মালিক ডা: সাইদুর রহমানের কাছে কোন ছোট সমস্যা নিয়ে সেবা নিতে আসলে রোগীকে মিথ্যা ভুল বুঝিয়ে সমস্যাটি বিরাট আকার ধারন করেছে বিপদস্থ করে ফেলে। এখনই রোগীর সেবা নামে সরলতার সুযোগ নিয়ে কৌশলে অপারেশনের ফাদে ফেলে লুটে নেয় হাজার হাজার টাকা। শুধু তাই নয় অজানা শক্তি উপরে দাড়িয়ে অভিজ্ঞ চিকিৎসক, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও উন্নতমানের যন্ত্রপাতি ছাড়াই দিদারছে অপারেশনের নামে কসাইয়ের কাজ করে যাচ্ছে। এমন একাধিক অভিযোগ রয়েছে সের আলি নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে খোজ খবর নিয়ে জানা গেছে স¤প্রপ্তিকালে পাটকেলঘাটা বালিদা গ্রামের দিন মজুর রিয়াজুদ্দিনের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন পেটের সমস্যা নিয়ে ঐ চিকিৎসা কেন্দ্রে যান। এ ক্লিনিকে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক সাইদুর রহমানের কাছে ব্যবস্থাপত্র নেন। চিকিৎসক আল্ট্রাসনো সহ বিভিন্ন টেস্ট করাতে বলেন। তাৎক্ষনিক রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তার সাইদুর রহমানের কাছে গেলে তিনি রাজিয়া খাতুন ও তার অভিভাবকদের বলে তার পেটে টিউমার ও এপেনডিস্ক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দ্রুত অপারেশনের ব্যবস্থা করাতে হবে তা নাহলে রাজিয়া জীবনে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। চিকিৎসকের মুখে এমন খবর জানতে পেরে হতাশা গ্রস্থ হয়ে পড়েন দিন মজুর স্বামী রিয়াজ উদ্দীন। নিজের সঙ্গীকে বাঁচাতে অর্থের জন্য ছুটতে থাকে আত্মীয় সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে। বহু কষ্টের পরে বড় অংকের টাকা নিয়ে অপারেশনের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু অপারেশনের চিকিৎসক রাজিয়ার পেটে কোন টিউমার ও এপেনডিস্কের সন্ধান পাইনি। এতে রাজিয়া শারীরিক ভাবে যেমন অসুস্থ হয়ে পড়ে অন্যদিকে অর্থনৈতিক ভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।এখানে শেষ নয় ঋনদিয়ে গ্রামের কৃষক আকরাম আলীর স্ত্রী জামিলা খাতুন সাত মাসের অন্তঃস্বত্তা হয়ে নার্সিং হোমে পরামর্শ নিতে আসেন তখন চিকিৎসক সাইদুর রহমান ব্যবস্থাপত্রে আল্ট্রাসনো সহ ডজন খানীক টেস্ট করাতে বলেন। পেটের বাচ্চার কথা চিন্তা তড়িঘড়ি করে সকল রিপোর্ট সম্পন্ন করে চিকিৎসকের কাছে আসেন তখন চিকিৎসক সাইদুর রহমান বলেন, আপনার আল্ট্রাসনো রিপোর্ট বাচ্চার ওজন এসেছে ৩ কেজি ৮০০ গ্রাম এক্ষুনে আপারেশনের ব্যবস্থা না করলে জীবনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। এতবড় বাচ্চা কখনো নরমাল ডেলিভারী সম্ভব না। চিকিৎসকের পরামর্শ দারিদ্র কৃষক স্ত্রী সন্তানের কথা চিন্তা করে বহু কষ্টের অর্থ দিয়ে অপারেশনের ব্যবস্থা করান। ভুল রিপোর্টের কারণে বাচ্চার ওজন ১ কেজি ৮০০ গ্রাম দাড়ায়। বাচ্চাটি সাতক্ষীরায় নিয়ে আসার সময় পথে ভৈরব নগর স্থানে তার মৃত্যু হয়। এখানেই শেষ নয় নাম প্রকাশের একজন অনিচ্ছুক এক সার্জারী চিকিৎসক জানান তার কোন সার্জারী সার্টিফিকেট নেই। অনভিজ্ঞ সহকারি এমনকি অজ্ঞানের চিকিৎসক ছাড়া অপারেশন করেন। এ অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন রাজিয়া খাতুনের বিষয়ে উক্ত ক্লিনিকের স্বত্তাধিকারী ডা: সাইদুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,তার টিউমারের কথা বলেনি পেটে পানির ঢলা জাতীয় কিছু থাকতে পারে। কিন্তু রাজিয়া বলেন আমি সুস্থ ছিলাম ঐ চিকিৎসকের মিথ্যা তথ্য দিশাহারা হয়ে অপারেশন করে শারীরিক ও অর্থনৈতিক ভাবে মারাত্মক ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছি। তিনি চিকিৎসক সাইদুর রহমানের শাস্তির দাবি করেছেন।শের আলী নার্সিং হোম স্থায়ী ভাবে বন্দের দাবি করেন স্থানীয় ভুক্তভোগী মহল।