পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীতে যথাযথ মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ আনুষ্ঠানিকতার সহিত পালিত!
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। সফেদ পাজামা-পাঞ্জাবি আর হাতকাটা কালো কোট পরে দৃঢ়তার সঙ্গে হেঁটে এসে মঞ্চে উঠলেন দীর্ঘদেহী এক বাঙালি। সঙ্গে করে তিনি নিয়ে এসেছেন সাড়ে ৭ কোটি বাঙালির ভবিষ্যত্, আত্মসম্মান ও অধিকার আদায়ের মন্ত্র। পুরো জাতি তার কথা শোনার প্রতীক্ষায় উদগ্রীব।
সেই ভাষণ শুনতে ঢাকার প্রতিটি বাড়ির প্রতিটি ছেলে এসে উপস্থিত রেসকোর্স ময়দানে। শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে বসেছিল সেই ভাষণের প্রতীক্ষায়। বঙ্গবন্ধুর সেদিনের সেই ভাষণ শুধু বাংলার নয়, পৃথিবী জুড়ে মানবমুক্তির আন্দোলনের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী উদাহরণ। আর বঙ্গবন্ধু মানুষের মুক্তির আন্দোলনের পথে চিরপ্রেরণার প্রতীকে পরিণত হন। স্বাধীন বাংলাদেশে তিনিই হয়ে ওঠেন জাতির জনক।
এ দিন লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে এই মহান নেতা ঘোষণা করেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয়বাংলা।’ একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর এই বলিষ্ঠ ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
গত ৭ ই মার্চ ২১ ইং তারিখ শনিবার পটুয়াখালীতে যথাযথ মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ পালন। ৭ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে তাঁর বজ্রকন্ঠ ভাষণের মাধ্যমে জাতিকে মহান মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
জাতির পিতার ৭ই মার্চের ভাষণ এদেশের স্বাধীনতার মূল প্রেরণা। ইউনেস্কো ভাষণটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ইতোমধ্যেই ‘মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে’ অন্তর্ভূক্ত করেছে। ভাষণটির গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ সরকার প্রথমবারের মত জাতীয়ভাবে ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ’ দিবস পালন করছে।
দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হয়। পরবর্তীতে ডিসি স্কয়ারে মুজিবশতবর্ষে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এবং নতুন প্রজন্মের মাঝে জাতির পিতার আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে শতকণ্ঠে ৭ই মার্চের ভাষণ পাঠ করা হয়। ভাষণ পাঠ শেষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রসাশক মোঃ মতিউল ইসলাম চৌধুরী।