০১:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আমল কবুলে ইখলাসের গুরুত্ব

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:০৭:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৯৯ Time View

ফাইল ছবি

দৈনন্দিন জীবনে মানুষের প্রতিটি কাজই ইবাদত। আল্লাহ তাআলা মানুষে তাঁর ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। কুরআনের বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনাই মানুষের একমাত্র কাজ। তবে মানুষের প্রতি কাজেই ইখলাস তথা একনিষ্ঠতার গুরুত্ব অনেক বেশি।

জান্নাত লাভে ইখলাসপূর্ণ ইবাদতের গুরুত্ব যেমন বেশি তেমনি মানুষের আমল কবুল হওয়ার জন্য ইখলাসপূর্ণ ইবাদতও জরুরি। ইখলাস তথা এননিষ্ঠতাকে আমল কবুলের পূর্বশর্ত করা হয়েছে।

আল্লাম ইবনে কাসির রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘দু’টি শর্ত সমন্বয় ব্যতিত আল্লাহ তাআলা বান্দার কোনো আমলই গ্রহণ করবেন না।

প্রথমত : মানুষ আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভে যে আমল করবে, সে আমল ইসলামি শরিয়ত কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।

দ্বিতীয়ত : ইখলাস সহকারে শিরকমুক্তভাবে (একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য নিবেদিত হয়ে) ইবাদত করতে হবে। (ইবনে কাসির)

আল্লামা সাজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘মানুষের ইবাদত ও আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হতে ৫টি কাজ আবশ্যক।
>> আল্লাহ তাআলার পরিচয় লাভ করে আমল করা;
>> হক বা সত্য সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে আমল করা;
>> ইখলাস বা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আমল করা;
>> রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত মোতাবেক আমল করা;
>> হালাল খাদ্য গ্রহণ করে আমল করা। (আল-জামে লি-আহকামিল কুরআন : কুরতুবী)

আল্লাহর কাছে মানুষের আমল গ্রহণযোগ্য হতে ইখলাসের গুরুত্ব উঠে এসেছে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসে পাকে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
‘যে আমল বা ইবাদত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইখলাসের সঙ্গে করা হয় না;
আল্লাহ তাআলা সে আমল কবুল করবেন না।’ (নাসাঈ)

এ কারণেই আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের অনেক জায়গায় ইখলাসের সঙ্গে তাঁর ইবাদত-বন্দেগি করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।

হাদিসে ইখলাসবিহীন আমলকারীর জন্য পরকালে মহাক্ষতি ও বিপদের সতর্কবাণী করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

‘কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা যখন সব মানুষকে একত্র করবেন,
তখন একজন ঘোষণাকারী এ মর্মে ঘোষণা করবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে
নিবেদিত কাজে অন্য কাউকে তাঁর সঙ্গে শরিক করেছে; সে যেন আল্লাহকে
বাদ দিয়ে সেই শরিকের কাছ থেকে প্রতিদান বুঝে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা
সব ধরনের অংশীদার ও অংশীদারিত্ব থেকে মুক্ত।’ (ইবনে মাজাহ)

সুতরাং আমল কবুলে ইখলাসের গুরুত্ব অনুধাবনে কুরআন ও সুন্নাহরে নির্দেশ মেনা চলা জরুরি। মুসলিম উম্মাহর উচিত কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা মোতাবেক শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য একনিষ্ঠভাবে ইবাদত-বন্দেগি করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার প্রতিটি কাজেই আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইখলাসের সঙ্গে করার তাওফিক দান করুন। পরকালের সফলতা দান করুন। দুনিয়ার সব আমলগুলো কবুল করুন। আমিন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সাকিবকে টপকে টেস্ট সেরা তাইজুল

আমল কবুলে ইখলাসের গুরুত্ব

Update Time : ০৫:০৭:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০১৭

দৈনন্দিন জীবনে মানুষের প্রতিটি কাজই ইবাদত। আল্লাহ তাআলা মানুষে তাঁর ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। কুরআনের বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনাই মানুষের একমাত্র কাজ। তবে মানুষের প্রতি কাজেই ইখলাস তথা একনিষ্ঠতার গুরুত্ব অনেক বেশি।

জান্নাত লাভে ইখলাসপূর্ণ ইবাদতের গুরুত্ব যেমন বেশি তেমনি মানুষের আমল কবুল হওয়ার জন্য ইখলাসপূর্ণ ইবাদতও জরুরি। ইখলাস তথা এননিষ্ঠতাকে আমল কবুলের পূর্বশর্ত করা হয়েছে।

আল্লাম ইবনে কাসির রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘দু’টি শর্ত সমন্বয় ব্যতিত আল্লাহ তাআলা বান্দার কোনো আমলই গ্রহণ করবেন না।

প্রথমত : মানুষ আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভে যে আমল করবে, সে আমল ইসলামি শরিয়ত কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।

দ্বিতীয়ত : ইখলাস সহকারে শিরকমুক্তভাবে (একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য নিবেদিত হয়ে) ইবাদত করতে হবে। (ইবনে কাসির)

আল্লামা সাজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘মানুষের ইবাদত ও আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হতে ৫টি কাজ আবশ্যক।
>> আল্লাহ তাআলার পরিচয় লাভ করে আমল করা;
>> হক বা সত্য সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে আমল করা;
>> ইখলাস বা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আমল করা;
>> রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত মোতাবেক আমল করা;
>> হালাল খাদ্য গ্রহণ করে আমল করা। (আল-জামে লি-আহকামিল কুরআন : কুরতুবী)

আল্লাহর কাছে মানুষের আমল গ্রহণযোগ্য হতে ইখলাসের গুরুত্ব উঠে এসেছে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসে পাকে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
‘যে আমল বা ইবাদত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইখলাসের সঙ্গে করা হয় না;
আল্লাহ তাআলা সে আমল কবুল করবেন না।’ (নাসাঈ)

এ কারণেই আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের অনেক জায়গায় ইখলাসের সঙ্গে তাঁর ইবাদত-বন্দেগি করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।

হাদিসে ইখলাসবিহীন আমলকারীর জন্য পরকালে মহাক্ষতি ও বিপদের সতর্কবাণী করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

‘কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা যখন সব মানুষকে একত্র করবেন,
তখন একজন ঘোষণাকারী এ মর্মে ঘোষণা করবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে
নিবেদিত কাজে অন্য কাউকে তাঁর সঙ্গে শরিক করেছে; সে যেন আল্লাহকে
বাদ দিয়ে সেই শরিকের কাছ থেকে প্রতিদান বুঝে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা
সব ধরনের অংশীদার ও অংশীদারিত্ব থেকে মুক্ত।’ (ইবনে মাজাহ)

সুতরাং আমল কবুলে ইখলাসের গুরুত্ব অনুধাবনে কুরআন ও সুন্নাহরে নির্দেশ মেনা চলা জরুরি। মুসলিম উম্মাহর উচিত কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা মোতাবেক শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য একনিষ্ঠভাবে ইবাদত-বন্দেগি করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার প্রতিটি কাজেই আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইখলাসের সঙ্গে করার তাওফিক দান করুন। পরকালের সফলতা দান করুন। দুনিয়ার সব আমলগুলো কবুল করুন। আমিন।