স্পোর্টস ডেস্ক : ত্রিদেশীয় সিরিজে যেমনটা আশা করা হয়েছিল, ঠিক তেমনটাই হয়েছে। ফাইনালে খেলার লক্ষ্য নিয়েই ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে আয়ারল্যান্ড গিয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড ঘরের মাঠে কম শক্তিশালী না। তার উপর সিরিজের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ১৯৬ রানে হারিয়ে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।টাইগাররা সেই ভয় জয় করেছিল সিরিজে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই।
আরো পড়ুন : প্রধানমন্ত্রী জাপান ও সৌদি সফরে যাচ্ছেন ২৮ মে
আরো পড়ুন : বৌদ্ধ পূর্ণিমায় ডিএমপির বিশেষ নিরাপত্তা
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম ম্যাচে হারিয়ে যখন স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডকে হারানোর ভাবনা, তখনই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বৃষ্টি। একটা ম্যাচ পণ্ড। সমান দুই পয়েন্ট পায় দুই দল।সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে বাংলাদেশ নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় ডাবলিনে।টস জিতে ক্যারিবিয় অধিনায়ক সিদ্ধান্ত নেন প্রথমে ব্যাট করার। প্রতিপক্ষের দুই উদ্বোধনী শাই হোপ আর সুনীল অ্যামব্রিস জুটি এগোতে পারেনি বেশিদূর। অ্যামব্রিসকে ২৩ রানে থামিয়ে দেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।এরপর টানা ৩ উইকেট পড়ে যায় খুব দ্রুতই। ডোয়াইন ব্রাভোকে ৬ রানে মেহেদী মিরাজ, রোস্টন চেজকে ১৯ ও জনাথন কার্টারকে মাত্র ৩ রানে ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান।এর ভেতর শাই হোপ আর জেসন হোল্ডার গড়ে ফেলেন শতরানের জুটি। এই জুটি ভাঙেন মাশরাফি। হোপকে আজ আর শতক হাঁকাতে দেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। দলকে আশাহত করে হোপ ফেরেন ৮৭ রানে। এরপর হোল্ডারকেও ফেরান তিনি ব্যক্তিগত ৬২ রানের মাথায়।
৫০ ওভার শেষ উইন্ডিজদের দলীয় রান হয় ৯ উইকেটে ২৪৭। নিজের অভিষেক ম্যাচে ৯ ওভার বোলিং করলেও কোনও উইকেট পাননি তিনি, দিয়েছেন ৫৬ রান। মাশরাফি নেন ৬০ রানে ৩ উইকেট। মিরাজ নেন ১টি, সাকিবের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১০ ওভারে দেন মাত্র ২৭ রান, নেন ১টি উইকেট।মুস্তাফিজ আজ গত ম্যাচের মতো খরুচে ছিলেন না। ১০ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট।ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেয়া ২৪৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে গত ম্যাচে অর্ধশত রানের ইনিংস খেলা দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল আর সৌম্য সরকার আজও শুরু করেন সাবধানী ব্যাটিংয়ে।কিন্তু আগে থামতে হলো তামিমকে। দলীয় ৫৪ রানের মাথায় ২১ রানে তামিমকে ফেরান অ্যাশলে নার্স।সৌম্য-সাকিবের জুটিটা বড় হচ্ছিল কিন্তু এতেও বাধ সাধে নার্স।
সাকিবকে ২৯ রানে ফেরান এই স্পিনার। সৌম্য তুলে নেন সিরিজে টানা দ্বিতীয় অর্ধশতক।সৌম্য ফিরে গেলেন ৫৪ রান করে সেই নার্সের বলেই। এরপর মুশফিক-মিথুনের জুটিতে জয়ের আভাস। দুজনেই খেলছিলেন সমানতালে। এখানে বাধা দিলেন জেসন হোল্ডার।
মিথুনকে ৪৩ রানের মাথায় বোল্ড করেন ক্যারিবিয় অধিনায়ক।মিথুনের ফেরাতেও থেমে যাননি মুশফিক, বরং তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৩৩ তম অর্ধশতক। মাহমুদুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় শেষের পথেই। তখনই খেই হারান দলীয় ২৪০ রানের মাথায় কেমার রোচের বলে ৬৩ রানে।শেষ পর্যন্ত মাহমুদুল্লাহ আর সাব্বির মিলে শেষ করে আসেন ম্যাচ। ১৫ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে সিরিজে দ্বিতীয়বার পরাজয়ের স্বাদ দেন ক্যারিবিয়দের। মাহমুদুল্লাহ করেন অপরাজিত ৩০ রান।ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৩ উইকেট নেন অ্যাশলে নার্স। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন কেমার রোচ ও জেসন হোল্ডার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৫ উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস: ২৪৭/৯ (৫০ ওভার)
(শাই হোপ ৮৭, সুনিল আমব্রিস ২৩, ড্যারেন ব্রাভো ৬, রস্টন চেজ ১৯, জনাথন কার্টার ৩, জ্যাসন হোল্ডার ৬২, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন ৭, অ্যাশলে নার্স ১৪, রেমন রেইফার ৭, কেমার রোচ ৩*, শেল্ডন কটরেল ৮*; আবু জায়েদ রাহি ০/৫৬, মাশরাফি বিন মর্তুজা ৩/৬০, মেহেদী হাসান মিরাজ ১/৪১, মোস্তাফিজুর রহমান ৪/৪৩, সাকিব আল হাসান ১/২৭, সৌম্য সরকার ০/১৫)।
বাংলাদেশ ইনিংস:২৪৮/৫ (৪৭.২ ওভার)
(তামিম ইকবাল ২১, সৌম্য সরকার ৫৪, সাকিব আল হাসান ২৯, মুশফিকুর রহিম ৬৩, মোহাম্মদ মিথুন ৪৩, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩০*, সাব্বির রহমান ০*; কেমার রোচ ১/৪৬, শেল্ডন কটরেল ০/৩৮, অ্যাশলে নার্স ৩/৫৩, রস্টন চেজ ০/২৪, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন ০/১১, জ্যাসন হোল্ডার ১/৪৩, রেমন রেইফার ০/৩১)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: মোস্তাফিজুর রহমান (বাংলাদেশ)।