আলোর জগত ডেস্ক : অতিরিক্ত ব্যয়ের অনুমোদন দিয়ে চলতি (২০১৮-১৯) অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাস করা হয়েছে। গতকাল সোমবার আলোচ্য অর্থবছরে যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বরাদ্দের বেশি খরচ করেছে, তার অনুমোদন দিতে সংসদে এটি উপস্থাপন করা হয়।
আরো পড়ুন : সাকিব-লিটন-মাশরাফিকে ফোন করে অভিনন্দন জানালেন প্রধানমন্ত্রী
আরো পড়ুন : ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পূরক বাজেট উপস্থাপন করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়।
আগামী ৩০ জুন সমাপ্ত চলতি অর্থবছরের কার্যাদি নির্বাহের জন্য সংযুক্ত তহবিল হতে মঞ্জুরিকৃত অর্থের অধিক অর্থ প্রদান ও নির্দিষ্টকরণের কর্তৃপক্ষ প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০১৯ উত্থাপন করেন। পরে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
সম্পূরক বাজেটে বাড়তি ১৫ হাজার ১৬৬ কোটি ১৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকার বরাদ্দ অনুমোদন করা হয়। মোট ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে চলতি অর্থবছর ৩৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উল্লেখিত পরিমাণ বাড়তি ব্যয় হয়। ২০১৮-১৯ বছরের জন্য চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট পাস করা হলেও কাটছাঁটের পর সংশোধিত বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা।
৩৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সর্বাধিক দুই হাজার ৪৪৭ কোটি ৮৮ লাখ ২৩ হাজার টাকা নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়কে বরাদ্দের অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপরই রয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এ খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হয় এক হাজার ৬০৪ কোটি ৬৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।
এ ছাড়া এক হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ পাওয়া অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ খাতে এক হাজার ৫৪২ কোটি ৮৪ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, বিদ্যুৎ বিভাগ এক হাজার ২৭৬ কোটি ৭৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এক হাজার ১৮২ কোটি ৯৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
সম্পূরক বাজেট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৮ শতাংশ অনুমান করেছিলাম। সংশোধিত বাজেটে তা ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ হবে বলে আশা করছি। বাজেট পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সতর্ক থাকার জন্যই মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ এখন যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। এটা দেখে সারা বিশ্ব আজ অবাক হচ্ছে। বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে এখন উন্নয়নের বিস্ময়। যেখানে যাই সেখানেই সেই কদরটা পাই। দেশবাসী সেই সম্মানটা পায়। কাজেই অযথা কিছু কথা বলে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত না করাই ভালো।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে সম্পূরক বাজেটের অর্থ অনুমোদনের জন্য ৫৮টি মঞ্জুরি দাবি উত্থাপন করা হয়। এসব দাবির মধ্যে ৪টি দাবির ওপর আনা ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়।
এগুলো হচ্ছে- জননিরাপত্তা বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বাকি মঞ্জুরি দাবিগুলো সরাসরি ভোটে দেওয়া হয়।
অবশ্য সব ছাঁটাই প্রস্তাবই কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা `নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০১৯` উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। প্রধানমন্ত্রী সংসদে বিল উত্থাপনের ঘটনা এটাই প্রথম।
এদিকে, সংসদ অধিবেশনে সম্পূরক বাজেটের ওপর মোট ৫৮টি দাবির ওপর ২১৭টি ছাঁটাই প্রস্তাব আনা হয়। ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, মো. ফখরুল ইমাম, লিয়াকত হোসেন খোকা, পীর ফজলুর রহমান, ডা. রুস্তম আলী ফরাজী ও রওশন আরা মান্নান এবং বিএনপির মো. হারুনুর রশীদ ও গণফোরামের মোকাব্বির খান। তারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমালোচনার পাশাপাশি সম্পূরক বাজেট বরাদ্দ না দেওয়ার দাবি জানান।