আলোর জগত ডেস্কঃ ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আগামী ২০ জুন মামলার চার্জ (অভিযোগ) গঠনের তারিখ ধার্য করা হয়েছে। এ ছাড়াও একই আদালতে মামলার ৫ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। আজ সোমবার সকালে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এসব আদেশ দেন।
আরো পড়ুন : মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে গড়িমসি করছে : প্রধানমন্ত্রী
আরো পড়ুন : শপথ নিয়েই দ্রুত নির্বাচন চাইলেন বিএনপির রুমিন ফারহানা
এ বিষয়ে জেলা জজ আদালতের সরকারী কৌসূলী (জিপি) প্রিয়রঞ্জণ দত্ত জানান, কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার ২১ আসামিকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় মামলার অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত। আদালত আগামী ২০ জুন চার্জ গঠনের দিন ধার্য করে।
জিপি প্রিয়রঞ্জণ দত্ত আরো জানান, নুসরাত হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন, সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, ওই মাদরাসার প্রভাষক আবসার উদ্দিন, মো. শামিম, ইফতেখার উদ্দিন, নুর উদ্দিনের পক্ষে তাদের আইনজীবিরা জামিন চাইলে আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এদের পক্ষে জামিন আবেদন করেন অডভোকেট গিয়াস উদ্দিন নান্নু ও অডভোকেট তাজুল ইসলাম। বাদি পক্ষে ছিলেন অ্যডভোকেট এম শাহজাহান সাজু।
আদালত সূত্র জানায়, এ মামলায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তারকৃত নুসরাতের সহপাঠি আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও শাহিদুল ইসলামকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
সূত্র আরো জানায়, গত ২৮ মে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে ১৬ জনকে আসামি করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের কর্মকর্তারা। সেদিন অভিযোগপত্রসহ মামলার নথি বিচারক ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে পাঠিয়ে দেন। এরপর ৩০ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে আসামিদের হাজির করা হলেও বিচারক সেদিন অভিযোগপত্র গ্রহণের ওপর শুনানি না করে ১০ জুন শুনানির তারিখ ধার্য করেন।
আদালত সূত্রের তথ্য মতে, বিভিন্ন সময়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ওই মাদরাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের, জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় অধ্যক্ষের সহযোগিরা। ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। এ ঘটনায় তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজহারভূক্ত ৮ আসামিসহ এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।