আলোর জগত ডেস্ক : দীর্ঘ সময় পরিক্রমায় ম্লান হয়ে গেছে কত কিছু! পাল্টে গেছে মানচিত্র, জন্ম নিয়েছে নতুন দেশ। কিন্তু জন্মের দেড় শ বছর পেরিয়েও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেদীপ্যমান। অন্ধকার যতই আসুক, তাঁর আলোর কাছে যেন তা ম্লান। ধ্রুপদি এই আলো পথ দেখায়, এগিয়ে নিয়ে যায়। কবিগুরু তাই প্রতিক্ষণের, প্রতিদিনের। আর বিশেষ দিবস হলে তো কথাই নেই। তখন রবির আলোয় রাঙা হয়ে ওঠে চারদিক।
বছর ঘুরে আবার এসেছে সেই দিন। আজ বুধবার, পঁচিশে বৈশাখ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম জন্মজয়ন্তী। ১২৬৮ বঙ্গাব্দে এবং ১৮৬১ সালের এই দিনে তিনি পশ্চিমবঙ্গের জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কবির ভাষায়, ‘আকাশভরা সূর্যতারা/বিশ্বভরা প্রাণ…’। সেই বিশ্বভরা প্রাণের উচ্ছ্বাসে আজ গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হবে কবিগুরুকে তাঁরই লেখা গানে, কবিতায়, নাটকে।
আরো পড়ুন : দেশে পৌঁঁছেছে সঙ্গীতশিল্পী সুবীর নন্দীর মরদেহ
আরো পড়ুন : আগারগাঁওয়ে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ১
এশিয়ার প্রথম নোবেল বিজয়ী বাংলার এই কবি নিজেকে বিশ্বচরাচরের অংশ মনে করতেন। বাঙালির উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘তুমি নিছক বাঙ্গালী নও, তুমি বিশ্বচরাচরের অংশ।’ ‘সকলের সঙ্গে মিলিত হয়ে প্রেমের মধ্যে বাঁচতে’ বলেছেন রবীন্দ্রনাথ। সঙ্গে যুক্ত করতে বলেছেন প্রাণিজগৎ, নিসর্গ, প্রকৃতিকে। শুধু তাই নয়, শিল্পের জগৎ, কল্পনার জগতের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিজের বিস্তার ঘটাতে বলেছেন তিনি।
প্রতি বছরের মতো এবারও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কবিকে স্মরণ করবে তার অসংখ্য ভক্ত। শুধু দুই বাংলার বাঙালিই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাংলা ভাষাভাষীরা কবির জন্মবার্ষিকীর দিবসটি উদ্যাপন করবে হৃদয় উৎসারিত আবেগ ও শ্রদ্ধায়।
জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন। এবার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মানবিক বিশ্ব বিনির্মাণে রবীন্দ্রনাথ’।
এ বছর জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে রাজধানীতে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আজ বেলা ৩টায় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি।
বিশেষ বক্তা হিসেবে থাকবেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী, লেখক, গবেষক, সংগঠক ও শিক্ষক অধ্যাপক সন্জীদা খাতুন। স্বাগত বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল। রবীন্দ্র স্মারক বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থলের পাশে এবং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে তিন দিনব্যাপী কবির চিত্রশিল্প প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।