ঢাকা ১১:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

নিউজিল্যান্ডের সেই মসজিদে জুমায় মুসল্লিদের ঢল

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ   নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুই মসজিদে গত শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের সময় মুসল্লিদের ওপর বন্দুক হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে ৫০ জনকে হত্যা করেছিলো ঘাতক ব্রেন্টন ট্যারেন্টো। কিন্তু ওই হামলা সে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায়কে আতঙ্কিত করতে পারেনি। আজ শুক্রবার সেখানকার আল নূর মসজিদে ফের জুমার নামাজ আদায় করেছেন হাজার হাজার মুসল্লি।

সেই নামাজ সরাসরি সম্প্রচার করে নিউজিল্যান্ডের টেলিভিশন ও রেডিও। এর আগে প্রথমবারের মত ওই দুই গণমাধ্যমে আজানও সম্প্রচার করা হয়েছে। আজান সম্প্রচারের পর রাষ্ট্রীয়ভাবে দুই মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়।

মুসল্লিরা যখন নামাজ আদায় করছিলেন তখন আল নুর মসজিদে সামনে হেগলি পার্কে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। সেখানে যোগ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডান।

মসজিদটির ইমাম জামাল ফাওদা তার খুতবায় বলেন, ‘গত শুক্রবার আমি এ মসজিদটিতে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন এক সন্ত্রাসীর চোখেমুখে ঘৃণা ও ক্ষোভ দেখেছি। এতে অর্ধশত মুসল্লি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪২ জন। এতে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের হৃদয়ে কষ্ট পেয়েছেন।’

‘আজ একই স্থানে দাঁড়িয়ে যখন চারপাশে তাকিয়েছি, তখন নিউজিল্যান্ড ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষের চোখে ভালোবাসা ও সহানুভূতি দেখতে পেয়েছি। এতে আরও লাখ লাখ মানুষের হৃদয় ভরে গেছে, যারা আমাদের সঙ্গে এখানে শারীরিকভাবে নেই, কিন্তু আত্মীকভাবে আছেন।’

‘সন্ত্রাসী আমাদের দেশকে শয়তানি মতাদর্শ দিয়ে ছিন্নভিন্ন করতে চেয়েছে, যা বিশ্ববাসীকে হতাশ করে দিয়েছে। কিন্তু এসব কিছু সত্ত্বেও আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে নিউজিল্যান্ড হচ্ছে একেবারে অবিচ্ছেদ্য। বিশ্ব ভালোবাসা ও ঐক্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখতে পারে। আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। কিন্তু আমরা ভেঙে পড়িনি। আমরা বেঁচে আছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে কাউকে আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেব না।’

শুক্রবার মুসল্লিরা যখন নামাজ আদায় করছিলেন তখন তাদের পাহারায় ছিলো শত শত পুলিশ। নামাজের আগেই বুলেট জর্জরিত আল নূর মসজিদটির মেরামত ও রং করার কাজ শেষ হয়। এরপর বৃহস্পতিবারই ধুয়ে মুছে পরিস্কার করে মুসল্লিদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় হামলাকারী ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারেন্টের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই জঙ্গির বাড়ি সিডনির ৬০০ কিলোমিটার উত্তরে গ্রাফটন শহরে। আটক ব্রেন্টন ট্যারেন্টোর মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ এপ্রিল। এর আগ পর্যন্ত তাকে হাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

নিউজিল্যান্ডের সেই মসজিদে জুমায় মুসল্লিদের ঢল

আপডেট টাইম : ০৪:৫১:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ   নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুই মসজিদে গত শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের সময় মুসল্লিদের ওপর বন্দুক হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে ৫০ জনকে হত্যা করেছিলো ঘাতক ব্রেন্টন ট্যারেন্টো। কিন্তু ওই হামলা সে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায়কে আতঙ্কিত করতে পারেনি। আজ শুক্রবার সেখানকার আল নূর মসজিদে ফের জুমার নামাজ আদায় করেছেন হাজার হাজার মুসল্লি।

সেই নামাজ সরাসরি সম্প্রচার করে নিউজিল্যান্ডের টেলিভিশন ও রেডিও। এর আগে প্রথমবারের মত ওই দুই গণমাধ্যমে আজানও সম্প্রচার করা হয়েছে। আজান সম্প্রচারের পর রাষ্ট্রীয়ভাবে দুই মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়।

মুসল্লিরা যখন নামাজ আদায় করছিলেন তখন আল নুর মসজিদে সামনে হেগলি পার্কে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। সেখানে যোগ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডান।

মসজিদটির ইমাম জামাল ফাওদা তার খুতবায় বলেন, ‘গত শুক্রবার আমি এ মসজিদটিতে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন এক সন্ত্রাসীর চোখেমুখে ঘৃণা ও ক্ষোভ দেখেছি। এতে অর্ধশত মুসল্লি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪২ জন। এতে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের হৃদয়ে কষ্ট পেয়েছেন।’

‘আজ একই স্থানে দাঁড়িয়ে যখন চারপাশে তাকিয়েছি, তখন নিউজিল্যান্ড ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষের চোখে ভালোবাসা ও সহানুভূতি দেখতে পেয়েছি। এতে আরও লাখ লাখ মানুষের হৃদয় ভরে গেছে, যারা আমাদের সঙ্গে এখানে শারীরিকভাবে নেই, কিন্তু আত্মীকভাবে আছেন।’

‘সন্ত্রাসী আমাদের দেশকে শয়তানি মতাদর্শ দিয়ে ছিন্নভিন্ন করতে চেয়েছে, যা বিশ্ববাসীকে হতাশ করে দিয়েছে। কিন্তু এসব কিছু সত্ত্বেও আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে নিউজিল্যান্ড হচ্ছে একেবারে অবিচ্ছেদ্য। বিশ্ব ভালোবাসা ও ঐক্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখতে পারে। আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। কিন্তু আমরা ভেঙে পড়িনি। আমরা বেঁচে আছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে কাউকে আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেব না।’

শুক্রবার মুসল্লিরা যখন নামাজ আদায় করছিলেন তখন তাদের পাহারায় ছিলো শত শত পুলিশ। নামাজের আগেই বুলেট জর্জরিত আল নূর মসজিদটির মেরামত ও রং করার কাজ শেষ হয়। এরপর বৃহস্পতিবারই ধুয়ে মুছে পরিস্কার করে মুসল্লিদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় হামলাকারী ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারেন্টের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই জঙ্গির বাড়ি সিডনির ৬০০ কিলোমিটার উত্তরে গ্রাফটন শহরে। আটক ব্রেন্টন ট্যারেন্টোর মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ এপ্রিল। এর আগ পর্যন্ত তাকে হাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।