আলোর জগত ডেস্ক : কারাবন্দি দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে নামার আগে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে শক্তি বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও জামায়াতকে নিয়ে সমালোচনা হয়েছে দলটির স্থায়ী কমিটির নেতাদের মধ্যে। কেউ কেউ বলেছেন, বিএনপির রাজনীতি যেন শুধু জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে সেই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। অন্যদিকে জামায়াতও দলের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব আলোচনা হয়। লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক স্কাইপির মাধ্যম বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠক সূত্রে এসব জানা গেছে।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কড়া সমালোচনা হয়েছে। ফ্রন্টের একজন শীর্ষ নেতার বিষোদগার করেছেন স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য।
এছাড়াও জামায়াত ইসলামী ইস্যুকে প্রাধান্য দিয়ে জেষ্ঠ্য নেতারা তাদের মতামত তুলে ধরেন। পাশাপশি ডাকসু নির্বাচন, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও মামলা প্রসঙ্গেও নেতারা বক্তব্য রাখেন। নেতাদের এসব বক্তব্যের সারমর্ম তৈরি করে দুই-একদিনের মধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে পাঠানোর জন্যও সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বৈঠকে। দলের নেতাদের বক্তব্যের এ সারমর্ম তৈরি করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ‘পেটে ঢুকে পড়েছে’ এমন মন্তব্য করে দলটিকে জোট নির্ভর না হয়ে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার পক্ষে মত দিয়েছেন কেউ কেউ। বিএনপির রাজনীতি যেন শুধু জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে সেদিকেও নজর রাখার তাগিদ দিয়েছেন অনেকে।
বিএনপির একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য গণমাধ্যমে বলেছেন, বিএনপির রাজনীতি এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টমুখী হয়ে গেছে। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। নিজেদের রাজনৈতিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। যদিও তাদের এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বলেন নি তারেক রহমান।
একটি সূত্রে জানা গেছে, ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করা সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ার বিষয়টি আলোচনায় তোলেন একজন সদস্য। এ প্রসঙ্গ উঠলে অন্যরাও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতার সমালোচনা করেন। তার পর সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন কতটুকু সঠিক ছিল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিএনপি নেতারা।
গণমাধ্যম সূত্রের খবর অনুযায়ী, দলটির স্থায়ী কমিটির দুই জন নেতা বৈঠকে বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে হবে। আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজপথের আন্দোলনেও নামতে হবে। তবে এর আগে দলের বিভিন্ন জেলার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো এবং অঙ্গ সংগঠনগুলোকে পুনর্গঠন করা জরুরি।
এ সময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তেমন কোন কথা না বললেও দলের স্থায়ী কমিটির নেতাদের জেলাপর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। একইসঙ্গে মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কেও জানতে চেয়েছেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।