ঢাকা ০৮:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হলো ট্রাম্প-কিমের বৈঠক

ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :  ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দীর্ঘ দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলন কোনো চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে। যদিও এর আগে জানা গিয়েছিলো বৈঠকে দুই নেতা একাধিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। বৈঠক শেষে সামরিক বিমানে করে ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন ট্রাম্প। আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, এবার কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, উভয় পক্ষই ভবিষ্যতে আরও বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে।

কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, দুই নেতাই নিজেদের দাবিতে অনড় থাকায় কোনো রকম সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেননি ট্রাম্প ও কিম। ট্রাম্পের দাবি ছিল, উত্তর কোরিয়াকে পুরোপুরি পরমাণু অস্ত্র মুক্ত করার ক্ষেত্রে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন কিম।

অন্যদিকে পরমাণু অস্ত্র নির্মাণ বন্ধের শর্ত হিসেব পিয়ংইয়ং’র ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানান কিম। ফলে দুই নেতার দু দিনের এ বৈঠকে কোনো চুক্তিও হয়নি।

সিঙ্গাপুরে গত জুনে অনুষ্ঠিত ট্রাম্প-কিম প্রথম বৈঠকটি এই একই কারণে ব্যর্থ হয়েছিল। এ নিয়ে তখন মার্কিন নেতাদের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ট্রাম্প। যদিও ট্রাম্প এ বৈঠককে ব্যর্থ বলতে রাজি হননি। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘কোনো রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা হচ্ছে না, এতেই আমি খুশি।’

বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের বৈঠকটি অনেকটা তাড়াহুড়ো করেই শেষ করেন দুই নেতা। ফলে ট্রাম্প-কিমের আলোচনাতেও কাটছাট করা হয়।

আর বৈঠক সম্পর্কে হতাশা ব্যক্ত করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, কখনও কখনও আপনাকে খালি হাতে ফিরতে হয়। এবারও তেমনটাই হলো।

তিনি আরো জানান, কিম তার দেশের ওপর থেকে আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা এতে রাজি হইনি। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন,আশাপ্রদ অগ্রগতি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা আরো ভালো কিছু হবে বলে আশা করছি।

এর আগে কিম জং উন বৃহস্পতিবার হ্যানয়ে বিদেশি সাংবাদিকদের বলেন,তিনি উত্তর কোরিয়াকে সম্পূর্ণ পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করতে রাজি আছেন। এজন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। এতে ব্যর্থ হলে তিনি আর কখনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ভিয়েতনামে কোনো বৈঠক করবেন না।

কিমের এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, আপনাদের প্রশ্নের এটাই সবচেয়ে সেরা উত্তর।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় এক নৈশভোজের মধ্য দিয়ে কিমের সঙ্গে দু দিনের আলোচনা শুরু করেন ট্রাম্প।

এই বৈঠকে অংশ নিতে মঙ্গলবারই ভিয়েতনাম পৌঁছান ট্রাম্প ও কিম। ওইদিন সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বহনকারী মার্কিন বিমান বাহিনীর বিমানটি হ্যানয়ের নোয়ি বাই বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই দীর্ঘ ট্রেন যাত্রায় ভিয়েতনাম পৌঁছান কিম জং উন।

বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছিলেন, এই বৈঠকে ট্রাম্প কিমকে পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধের বিষয়ে সম্মত করাতে পারবেন। অন্যদিকে কিম তার দেশের ওপর থেকে জাতিসংঘের আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইবেন।

এর আগে গত জুনে সিঙ্গাপুরে ঐতিহাসিক প্রথম বৈঠকে মিলিত হন কিম ও ট্রাম্প। সেটি ছিল উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে কোনো ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম বৈঠক।

কিন্তু ওই বৈঠকের পর উত্তর কোরিয়া তার পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করেছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেননা জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেশটি তার পরমাণু কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে পিয়ংইয়ং’র ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়েও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি মার্কিন প্রশাসন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হলো ট্রাম্প-কিমের বৈঠক

আপডেট টাইম : ০৯:১৩:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :  ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দীর্ঘ দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলন কোনো চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে। যদিও এর আগে জানা গিয়েছিলো বৈঠকে দুই নেতা একাধিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। বৈঠক শেষে সামরিক বিমানে করে ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন ট্রাম্প। আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, এবার কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, উভয় পক্ষই ভবিষ্যতে আরও বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে।

কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, দুই নেতাই নিজেদের দাবিতে অনড় থাকায় কোনো রকম সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেননি ট্রাম্প ও কিম। ট্রাম্পের দাবি ছিল, উত্তর কোরিয়াকে পুরোপুরি পরমাণু অস্ত্র মুক্ত করার ক্ষেত্রে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন কিম।

অন্যদিকে পরমাণু অস্ত্র নির্মাণ বন্ধের শর্ত হিসেব পিয়ংইয়ং’র ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানান কিম। ফলে দুই নেতার দু দিনের এ বৈঠকে কোনো চুক্তিও হয়নি।

সিঙ্গাপুরে গত জুনে অনুষ্ঠিত ট্রাম্প-কিম প্রথম বৈঠকটি এই একই কারণে ব্যর্থ হয়েছিল। এ নিয়ে তখন মার্কিন নেতাদের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ট্রাম্প। যদিও ট্রাম্প এ বৈঠককে ব্যর্থ বলতে রাজি হননি। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘কোনো রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা হচ্ছে না, এতেই আমি খুশি।’

বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের বৈঠকটি অনেকটা তাড়াহুড়ো করেই শেষ করেন দুই নেতা। ফলে ট্রাম্প-কিমের আলোচনাতেও কাটছাট করা হয়।

আর বৈঠক সম্পর্কে হতাশা ব্যক্ত করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, কখনও কখনও আপনাকে খালি হাতে ফিরতে হয়। এবারও তেমনটাই হলো।

তিনি আরো জানান, কিম তার দেশের ওপর থেকে আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা এতে রাজি হইনি। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন,আশাপ্রদ অগ্রগতি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা আরো ভালো কিছু হবে বলে আশা করছি।

এর আগে কিম জং উন বৃহস্পতিবার হ্যানয়ে বিদেশি সাংবাদিকদের বলেন,তিনি উত্তর কোরিয়াকে সম্পূর্ণ পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করতে রাজি আছেন। এজন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। এতে ব্যর্থ হলে তিনি আর কখনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ভিয়েতনামে কোনো বৈঠক করবেন না।

কিমের এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, আপনাদের প্রশ্নের এটাই সবচেয়ে সেরা উত্তর।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় এক নৈশভোজের মধ্য দিয়ে কিমের সঙ্গে দু দিনের আলোচনা শুরু করেন ট্রাম্প।

এই বৈঠকে অংশ নিতে মঙ্গলবারই ভিয়েতনাম পৌঁছান ট্রাম্প ও কিম। ওইদিন সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বহনকারী মার্কিন বিমান বাহিনীর বিমানটি হ্যানয়ের নোয়ি বাই বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই দীর্ঘ ট্রেন যাত্রায় ভিয়েতনাম পৌঁছান কিম জং উন।

বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছিলেন, এই বৈঠকে ট্রাম্প কিমকে পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধের বিষয়ে সম্মত করাতে পারবেন। অন্যদিকে কিম তার দেশের ওপর থেকে জাতিসংঘের আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইবেন।

এর আগে গত জুনে সিঙ্গাপুরে ঐতিহাসিক প্রথম বৈঠকে মিলিত হন কিম ও ট্রাম্প। সেটি ছিল উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে কোনো ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম বৈঠক।

কিন্তু ওই বৈঠকের পর উত্তর কোরিয়া তার পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করেছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেননা জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেশটি তার পরমাণু কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে পিয়ংইয়ং’র ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়েও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি মার্কিন প্রশাসন।