দৈনিক আলোর জগত ডেস্ক : 
আলোর জগত ডেস্ক : শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের শিশু ও গাইনী বিভাগের লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিটে প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। হাসপাতালের আইসিইউসহ সব ওয়ার্ডের রোগীদের নিরাপদে সরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছেন স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম।
আগুন লাগার পরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মিলে রোগীদের দ্রুত সরিয়ে নেয়। অনেক রোগী ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালসহ পাশের জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে গিয়ে আশ্রয় নেয়। বেশকিছু রোগীতে তাৎক্ষণিক পাশের মাঠে রাখা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহাম্মেদ খান বলেন, ১৬টি ইউনিট আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি বলেন, ভেতরে এখনো ধোঁয়া আছে, ফায়ার সার্ভিস ও হাসপাতালের কর্মীরা মিলে রুমগুলো চেক করছে, আগুন রয়েছে কি না।
‘এ ঘটনায় ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে’।
আলী আহাম্মেদ খান বলেন, কোনো হতাহতে ঘটনা নেই। নিরাপদে সব রোগীদের নামিয়ে আনা হয়েছে। প্রথমে আইসিইউতে থাকা রোগীদের ও পর্যায়ক্রমে জরুরি রোগীদের অন্যান্য হাসপাতালে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বলেন, এক হাজারের বেশি রোগীকে ১০০ অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া, সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আইসিইউতে থাকা ১০ রোগীকেও।
ইতোমধ্যে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও ডিনসিসি মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম।
আতিকুল ইসলাম বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই ফায়ার সার্ভিস না আসতে পারলেও আশেপাশের লোকজন, হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সবাই রোগীদের প্রায়োরিটি দিয়ে বের করা শুরু করে। রানা প্লাজার মতন সবাই এগিয়ে এসেছে যে কারণে কোন হতাহতের ঘটনা নেই।
এদিকে, আগুন লাগার ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার উত্তম কুমারকে প্রধান করে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিবে।
ডাক্তার উত্তম কুমার জানান, আমরা হাসপাতালে যারা ছিলাম তারা সবাই অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি এবং রোগীদের বের করে নেই। ১১০০ থেকে ১২০০ রোগীকে আমরা বের করে আনি। কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে।
হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামরুজ্জামান বলেন, এখানে যাদের চিকিৎসা চলছিল তাদের সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে পাঠানো রোগীদের জরুরিভাবে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য অন্যান্য হাসপাতালগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ হাসপাতালের রোগীদের ঢাকা মেডিক্যাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদাসহ অন্যান্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ধোঁয়া পুরো হাসপাতালে ছড়িয়ে পড়েছে। স্টোর রুম ও ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগ আগুনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের নতুন ভবনের তৃতীয় তলার স্টোর রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ১৪টি ইউনিট।
