ঢাকা ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪

আগুন ঝরানো ফাগুন

আলোর জগত ডেস্ক :  ফাগুনের উদাস হাওয়ায় বাঁধন ছিঁড়েছে প্রাণ। বাঁধন ছেঁড়া প্রাণ আজ বুঝি উড়ু উড়ু। ফাগুনের অগ্নি ধারায় আপনকেও হারালো মন। হারানো মন ঘুরছে ফাগুন রাঙা বনে বনে।বছর ঘুরে আবারও এসেছে ফাগুন। ষড়ঋতুর বাংলায় বসন্তের রাজত্ব একেবারে প্রকৃত সিদ্ধ। ঋতুরাজ বসন্তের বর্ণনা কোনো রঙতুলির আঁচড়ে শেষ হয় না। কোনো কবি-সাহিত্যিক বসন্তের রূপের বর্ণনায় নিজেকে তৃপ্ত করতে পারেন না। তবুও বসন্ত বন্দনায় প্রকৃতিপ্রেমীদের চেষ্টার যেন অন্ত থাকে না।

আজ ১ ফাল্গুন, প্রকৃতি সাজবে নবরূপে। শিমুল-পলাশে মিতালী করে, বসন্ত তার নিজ রূপ মেলে ধরবেই। ফাগুনের আগুনে মন রাঙিয়ে বাঙালি তার দীপ্ত চেতনায় উজ্জীবিত হবে।বাঙলির ইতিহাস আবেগের। এ আবেগ যেমন মানুষে মানুষে ভালোবাসার, তেমনি মানুষের সঙ্গে প্রকৃতিরও। দিন-ক্ষণ গুণে গুণে বসন্ত বরণের অপেক্ষায় থাকে বাঙালি।

ঋতুচক্র এখন যেন আর পঞ্জিকার অনুশাসন মানছে না। শীতকাল কবে আসবে?-এই খেদ মিটলো না। ঠাণ্ডা শীতের রাতে লেপের আদর পায়নি নাগরিকরা। কুয়াশার চাদরমোড়া অকাল শীত তার তীব্রতা ছড়াতে না ছড়াতেই বিদায় নিল। প্রকৃতির দিকে তাকালে শীত বরষার মত বসন্তকেও সহজে চেনা যায়। বাঙালির জীবনে বসন্তের উপস্থিতি সেই অনাদিকাল থেকেই। সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শনেও বসন্ত ঠাঁই পেয়েছে নানা অনুপ্রাস, উপমা, উৎপ্রেক্ষা নানাভাবে। আমাদের ঋতুরাজ বসন্তের আবাহন আর পশ্চিমের ভ্যালেন্টাইন-ডে যেন এক বৃন্তের দুটি কুসুম। এ যেন এক সুতোয় গাঁথা দুই সংস্কৃতির এক দ্যোতনা। মানুষের মতই এ সময় পাখিরাও প্রণয়ী খোঁজে। বাসা বাঁধে। রচনা করে নতুন পৃথিবী।

বসন্ত মানেই পূর্ণতা। বসন্ত মানেই নতুন প্রাণের কলরব। কচিপাতায় আলোর নাচনের মতোই বাঙালির মনেও লাগবে দোলা। বিপুল তরঙ্গ প্রাণে আন্দোলিত হবে বাঙালি মন। বাঙালি জীবনে বসন্তের আগমন বার্তা নিয়ে আসে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র। এ বসন্তেই ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল। বসন্তেই বাঙালি মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিল। তাই কেবল প্রকৃতি আর মনে নয়, বাঙালির জাতীয় ইতিহাসেও বসন্ত আসে এক বিশেষ মাহাত্ম্য নিয়ে। বসন্ত হয়ে উঠে এক অনন্য উৎসব।

তবে এখন শহরের যান্ত্রিক আবেগহীন সময়ে বসন্ত যেন কেবল বৃক্ষেরই, মানুষের আবেগে নাড়া দেয় কমই। তারপরও আজ বসন্তের পয়লা দিনে নানা আয়োজনে আলোড়িত হবে রাজধানী। বিশেষত বাসন্তী শাড়ি আর সফেদ-শুভ্র পাঞ্জাবিতে তরুণ-তরুণীগণ বইমেলা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, উদ্যানমালা, ক্যাফেতে বসন্ত আবাহন করবে নানা নৈবদ্যে, নানা অনুষঙ্গে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ মির্জাগঞ্জের আরিফুল স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান

আগুন ঝরানো ফাগুন

আপডেট টাইম : ০৩:১৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

আলোর জগত ডেস্ক :  ফাগুনের উদাস হাওয়ায় বাঁধন ছিঁড়েছে প্রাণ। বাঁধন ছেঁড়া প্রাণ আজ বুঝি উড়ু উড়ু। ফাগুনের অগ্নি ধারায় আপনকেও হারালো মন। হারানো মন ঘুরছে ফাগুন রাঙা বনে বনে।বছর ঘুরে আবারও এসেছে ফাগুন। ষড়ঋতুর বাংলায় বসন্তের রাজত্ব একেবারে প্রকৃত সিদ্ধ। ঋতুরাজ বসন্তের বর্ণনা কোনো রঙতুলির আঁচড়ে শেষ হয় না। কোনো কবি-সাহিত্যিক বসন্তের রূপের বর্ণনায় নিজেকে তৃপ্ত করতে পারেন না। তবুও বসন্ত বন্দনায় প্রকৃতিপ্রেমীদের চেষ্টার যেন অন্ত থাকে না।

আজ ১ ফাল্গুন, প্রকৃতি সাজবে নবরূপে। শিমুল-পলাশে মিতালী করে, বসন্ত তার নিজ রূপ মেলে ধরবেই। ফাগুনের আগুনে মন রাঙিয়ে বাঙালি তার দীপ্ত চেতনায় উজ্জীবিত হবে।বাঙলির ইতিহাস আবেগের। এ আবেগ যেমন মানুষে মানুষে ভালোবাসার, তেমনি মানুষের সঙ্গে প্রকৃতিরও। দিন-ক্ষণ গুণে গুণে বসন্ত বরণের অপেক্ষায় থাকে বাঙালি।

ঋতুচক্র এখন যেন আর পঞ্জিকার অনুশাসন মানছে না। শীতকাল কবে আসবে?-এই খেদ মিটলো না। ঠাণ্ডা শীতের রাতে লেপের আদর পায়নি নাগরিকরা। কুয়াশার চাদরমোড়া অকাল শীত তার তীব্রতা ছড়াতে না ছড়াতেই বিদায় নিল। প্রকৃতির দিকে তাকালে শীত বরষার মত বসন্তকেও সহজে চেনা যায়। বাঙালির জীবনে বসন্তের উপস্থিতি সেই অনাদিকাল থেকেই। সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শনেও বসন্ত ঠাঁই পেয়েছে নানা অনুপ্রাস, উপমা, উৎপ্রেক্ষা নানাভাবে। আমাদের ঋতুরাজ বসন্তের আবাহন আর পশ্চিমের ভ্যালেন্টাইন-ডে যেন এক বৃন্তের দুটি কুসুম। এ যেন এক সুতোয় গাঁথা দুই সংস্কৃতির এক দ্যোতনা। মানুষের মতই এ সময় পাখিরাও প্রণয়ী খোঁজে। বাসা বাঁধে। রচনা করে নতুন পৃথিবী।

বসন্ত মানেই পূর্ণতা। বসন্ত মানেই নতুন প্রাণের কলরব। কচিপাতায় আলোর নাচনের মতোই বাঙালির মনেও লাগবে দোলা। বিপুল তরঙ্গ প্রাণে আন্দোলিত হবে বাঙালি মন। বাঙালি জীবনে বসন্তের আগমন বার্তা নিয়ে আসে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র। এ বসন্তেই ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল। বসন্তেই বাঙালি মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিল। তাই কেবল প্রকৃতি আর মনে নয়, বাঙালির জাতীয় ইতিহাসেও বসন্ত আসে এক বিশেষ মাহাত্ম্য নিয়ে। বসন্ত হয়ে উঠে এক অনন্য উৎসব।

তবে এখন শহরের যান্ত্রিক আবেগহীন সময়ে বসন্ত যেন কেবল বৃক্ষেরই, মানুষের আবেগে নাড়া দেয় কমই। তারপরও আজ বসন্তের পয়লা দিনে নানা আয়োজনে আলোড়িত হবে রাজধানী। বিশেষত বাসন্তী শাড়ি আর সফেদ-শুভ্র পাঞ্জাবিতে তরুণ-তরুণীগণ বইমেলা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, উদ্যানমালা, ক্যাফেতে বসন্ত আবাহন করবে নানা নৈবদ্যে, নানা অনুষঙ্গে।