প্রহসনের নির্বাচন বর্জন, ভোটদান থেকে বিরত থাকা এবং ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে একটি প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে। প্রায় সব রাজনৈতিক দল এ নির্বাচন বয়কট করেছে। প্রহসনের নির্বাচনের প্রতি জনগণের কোনো আগ্রহ নেই। জনগণ এ নির্বাচন বর্জনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, এবারের প্রহসনের নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের হলফনামায় দেখা যায়, বিগত ১৫ বছরে তাদের সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে দুইশ/তিনশ গুণ।
জামায়াতের আমির বলেন, পত্রিকার সংবাদ অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের ৯৩ শতাংশ প্রার্থী হচ্ছেন কোটিপতি। ২৬৫ প্রার্থীর গড় আয় দুই কোটি ১৪ লাখ টাকা। গড় সম্পদ মূল্য সাড়ে ২৮ কোটি টাকা। ক্ষমতায় থেকে জনগণের যে সম্পদ তারা লুণ্ঠন করেছে, তার সম্পদ মূল্য হচ্ছে ১৩ হাজার ৬২০ কোটি টাকা।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। বস্তুত নির্বাচনের প্রহসনের নামে তফসিল ঘোষণা করে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা পুনর্দখলের আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। এ নির্বাচনের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
জামায়াত আমির বলেন, গত দুই মাসে জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের ৩৫ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অর্ধ শতাধিক মামলায় দেড় সহস্রাধিক রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। সরকার ডামি প্রার্থী দাঁড় করালেও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের কারণে প্রহসনের সাজানো নির্বাচনের পূর্বে ঘোষণা দিয়ে ডামি প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। গুপ্ত হত্যা, গুম-খুন ও অপহরণ করে দেশে এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, যে নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ নেই, সেটা কোনো নির্বাচন নয়। এ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারের প্রতি জনগণের কোনো সমর্থন নেই। জনসমর্থনহীন সরকার চলমান বিশ্ব রাজনীতিতে কোনো অবস্থান তৈরি করতে পারবে না। ফলে বাংলাদেশ বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন একটি দেশে পরিণত হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি। দেশকে অনিবার্য সংকট ও বিপর্যয়ের হাত থেকে উদ্ধারের জন্য সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান হচ্ছে, প্রহসনের এ নির্বাচন বন্ধ করুন। জনগণের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করুন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।
দেশবাসীর প্রতি জামায়াতের আহ্বান–
১. সরকারের তামাশার নির্বাচন বর্জন করুন।
২. ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে ভোটদান থেকে বিরত থাকুন।
৩. জনগণের ন্যায্য ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের ঘোষিত ৬ ও ৭ জানুয়ারির সর্বাত্মক হরতাল সফল করে তুলুন।
৪. দেশ ও জাতিকে রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে গণআন্দোলন গড়ে তুলুন।