১২:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আস্থা ভোটে টিকে গেলেন থেরেসা মে

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৫৭:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জানুয়ারী ২০১৯
  • ২৭০ Time View

ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :   ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে ব্রেক্সিট চুক্তিতে মঙ্গলবার পরাজয়ের পর গতকাল বুধবার আস্থা ভোটে টিকে গেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। গতকালের ভোটের পরই লেবার পার্টির নেতা জেরমি করবিন সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন। গতকাল বুধবার দেখা যায়, থেরেসা মের সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ৩২৫ জন পার্লামেন্ট সদস্য আর সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন ৩০৬ জন। ১৯ ভোটে জয় নিয়ে টিকে থাকলেন থেরেসা মে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদের যে পরিকল্পনা থেরেসা মে পার্লামেন্টে উপস্থাপন করেছিলেন, ৬৫০ সদস্যের পার্লামেন্টে তা ৪৩২-২০২ ভোটে নাকচ হয়ে গেছে। পাঁচ দিন আলোচনার পর মঙ্গলবার রাতে যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ হাউস অব কমন্সে ২৩০ ভোটের ব্যবধানে প্রস্তবনা বাতিল হয়ে যায়। টেরেসার রক্ষণশীল দলের অনেক এমপি, লেবার পার্টি, ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের অনেক এমপি চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেন। আগামী ২৯ মার্চের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার কথা। অর্থাৎ ব্রিটেনের হাতে আছে আর মাত্র ৭৩ দিন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের অপসারণ, যা সংক্ষেপে ব্রেক্সিট নামে পরিচিত। ব্রিটেন ১৯৭৩ সালে ইউরোপিয়ান ইকোনমিক কমিউনিটির সঙ্গে সংযুক্ত হয়। এর লক্ষ্য ছিল সুলভমূল্যে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য ও অভিন্ন বাজারসুবিধা। ১৯৯৩ সালে ইইউ নিজস্ব মুদ্রা, নীতিমালা, নাগরিকদের জন্য সীমানামুক্ত বিচরণসহ যুক্ত করাসহ অনেকগুলো পরিবর্তন আনে। কিন্তু অনেক ব্রিটিশ নাগরিক ব্রিটেনের ইইউর বিধি-নিষেধ মেনে চলা নিয়ে বেশ নাখোশ।

এর আগে ২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির চার দশকের সম্পর্কোচ্ছেদের রায় হয়। পৌনে দুই কোটি ভোটারের ৫২ শতাংশ ভোট ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে, অন্যদিকে ৪৮ শতাংশের ভোট দেয় ইউরোপের আরও ২৭টি দেশের জোটে থেকে যাওয়ার। ভোটে হারের পর তৎকালীন রক্ষণশীল দলের প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করলে থেরেসা মে সেই দায়িত্ব নিয়ে ইউ থেকে বের হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। বিশেষ করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক এই জোট থেকে কোন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য আলাদা হবে এবং এরপর ইইউভুক্ত বাকি ২৭টি রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই পথ বের করার জন্য সময় নেওয়া হয় আড়াই বছর।

আগামী ২৯ মার্চ সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে যুক্তরাজ্যকে তার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে হচ্ছে। মূলত ইইউর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে চুক্তি নিয়ে মঙ্গলবার পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষে ভোটাভুটিতে প্রস্তাবটি নাকচ হয়ে যায়। ব্রেক্সিট চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল জোট থেকে বেরিয়ে গেলে যুক্তরাজ্য ৩৯ বিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ কীভাবে দেবে। সর্ম্পক ছিন্ন হওয়ার পর যুক্তরাজ্যে বসবাসরত জোটের অন্য দেশগুলোর ৩২ লাখ নাগরিকের ভবিষ্যৎ কী হবে কিংবা ইউরোপের অন্য দেশগুলোতে বসবাসরত যুক্তরাজ্যের ১৩ লাখ নাগরিকের সুযোগ-সুবিধার কী পরিবর্তন ঘটবে। এছাড়াও যুক্তরাজ্যভুক্ত নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড এবং ইইউতে থেকে যাওয়া আয়ারল্যান্ডকে আলাদা করতে আবার কীভাবে সীমান্ত তুলতে হবে, তার মীমাংসা করা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আস্থা ভোটে টিকে গেলেন থেরেসা মে

Update Time : ০৩:৫৭:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জানুয়ারী ২০১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :   ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে ব্রেক্সিট চুক্তিতে মঙ্গলবার পরাজয়ের পর গতকাল বুধবার আস্থা ভোটে টিকে গেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। গতকালের ভোটের পরই লেবার পার্টির নেতা জেরমি করবিন সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন। গতকাল বুধবার দেখা যায়, থেরেসা মের সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ৩২৫ জন পার্লামেন্ট সদস্য আর সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন ৩০৬ জন। ১৯ ভোটে জয় নিয়ে টিকে থাকলেন থেরেসা মে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদের যে পরিকল্পনা থেরেসা মে পার্লামেন্টে উপস্থাপন করেছিলেন, ৬৫০ সদস্যের পার্লামেন্টে তা ৪৩২-২০২ ভোটে নাকচ হয়ে গেছে। পাঁচ দিন আলোচনার পর মঙ্গলবার রাতে যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ হাউস অব কমন্সে ২৩০ ভোটের ব্যবধানে প্রস্তবনা বাতিল হয়ে যায়। টেরেসার রক্ষণশীল দলের অনেক এমপি, লেবার পার্টি, ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের অনেক এমপি চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেন। আগামী ২৯ মার্চের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার কথা। অর্থাৎ ব্রিটেনের হাতে আছে আর মাত্র ৭৩ দিন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের অপসারণ, যা সংক্ষেপে ব্রেক্সিট নামে পরিচিত। ব্রিটেন ১৯৭৩ সালে ইউরোপিয়ান ইকোনমিক কমিউনিটির সঙ্গে সংযুক্ত হয়। এর লক্ষ্য ছিল সুলভমূল্যে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য ও অভিন্ন বাজারসুবিধা। ১৯৯৩ সালে ইইউ নিজস্ব মুদ্রা, নীতিমালা, নাগরিকদের জন্য সীমানামুক্ত বিচরণসহ যুক্ত করাসহ অনেকগুলো পরিবর্তন আনে। কিন্তু অনেক ব্রিটিশ নাগরিক ব্রিটেনের ইইউর বিধি-নিষেধ মেনে চলা নিয়ে বেশ নাখোশ।

এর আগে ২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির চার দশকের সম্পর্কোচ্ছেদের রায় হয়। পৌনে দুই কোটি ভোটারের ৫২ শতাংশ ভোট ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে, অন্যদিকে ৪৮ শতাংশের ভোট দেয় ইউরোপের আরও ২৭টি দেশের জোটে থেকে যাওয়ার। ভোটে হারের পর তৎকালীন রক্ষণশীল দলের প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করলে থেরেসা মে সেই দায়িত্ব নিয়ে ইউ থেকে বের হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। বিশেষ করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক এই জোট থেকে কোন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য আলাদা হবে এবং এরপর ইইউভুক্ত বাকি ২৭টি রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই পথ বের করার জন্য সময় নেওয়া হয় আড়াই বছর।

আগামী ২৯ মার্চ সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে যুক্তরাজ্যকে তার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে হচ্ছে। মূলত ইইউর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে চুক্তি নিয়ে মঙ্গলবার পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষে ভোটাভুটিতে প্রস্তাবটি নাকচ হয়ে যায়। ব্রেক্সিট চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল জোট থেকে বেরিয়ে গেলে যুক্তরাজ্য ৩৯ বিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ কীভাবে দেবে। সর্ম্পক ছিন্ন হওয়ার পর যুক্তরাজ্যে বসবাসরত জোটের অন্য দেশগুলোর ৩২ লাখ নাগরিকের ভবিষ্যৎ কী হবে কিংবা ইউরোপের অন্য দেশগুলোতে বসবাসরত যুক্তরাজ্যের ১৩ লাখ নাগরিকের সুযোগ-সুবিধার কী পরিবর্তন ঘটবে। এছাড়াও যুক্তরাজ্যভুক্ত নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড এবং ইইউতে থেকে যাওয়া আয়ারল্যান্ডকে আলাদা করতে আবার কীভাবে সীমান্ত তুলতে হবে, তার মীমাংসা করা।