অনলাইন ডেস্ক:
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, আগামী ২৮ অক্টোবর টানেল উদ্বোধন উপলক্ষ্যে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ জনসভার আয়োজন করেছে। যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে, মঞ্চ ও সাজসজ্জার কাজও শেষ পর্যায়ে। আমরা আশা করছি এটি স্মরণকালের ঐতিহাসিক জনসভা হবে। যেহেতু টানেলটি একটি ঐতিহাসিক প্রজেক্ট। সুতরাং এটিকে কেন্দ্র করে জনসভাও হবে ঐতিহাসিক। আর এটি হবে স্মার্ট জনসভা হবে।
তিনি বলেন, জনসভায় যারা উপস্থিত হবে তাদের জন্য পানি, বিদ্যুৎ, চিকিৎসাসহ যাবতীয় ব্যবস্থা রয়েছে। যারা দূরে থাকবে তাদের দেখার জন্য এলইডি স্ক্রিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আধুনিকভাবে জনসভাটির আয়োজন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল চট্টগ্রামের কর্ণফুলী কোরিয়ান ইপিজেড মাঠ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল একসময় আমরা উন্নত দেশগুলোতে দেখতাম। অবাক করার বিষয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই প্রকল্প বাংলাদেশে তৈরি করেছেন। এর ফলে কক্সবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ হবে। যারা ঢাকা ও উত্তরবঙ্গ থেকে কক্সবাজার যাবে তারা টানেল তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও বলেন, সামনে নির্বাচন। সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সারা দেশের মানুষ এখন নির্বাচনমুখী। আমাদের প্রত্যেকটা কর্মসূচিও নির্বাচনমুখী। এ হিসেবে চট্টগ্রামের জনসভায় দলীয় সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের জন্য তিনি দিকনির্দেশনা দেবেন। এছাড়া উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনা সরকার বারবার দরকার এটা জনগণকে বলা হবে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় ১০ লাখ লোক সমাগম হবে। আমাদের আয়োজন সম্পন্ন। ইতোমধ্যে স্থানীয় নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন তিনি টানেল ও চট্টগ্রামের কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। এরপর তিনি কর্ণফুলী উপজেলায় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেবেন।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং টানেল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কর্ণফুলী নদীর দুই তির সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেলটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। টানেল চালু হলে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারের যোগাযোগ সহজ হবে। দক্ষিণ চট্টগ্রামে গড়ে উঠবে নতুন শিল্পকারখানা।
নির্মাণের আগে করা সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, টানেল চালুর পর এর ভেতর দিয়ে বছরে ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করতে পারবে। সে হিসেবে দিনে চলতে পারবে ১৭ হাজার ২৬০টি গাড়ি। ২০২৫ সাল নাগাদ টানেল দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার ৩০৫টি যানবাহন চলাচল করবে। যার মধ্যে অর্ধেক থাকবে পণ্যবাহী পরিবহন। ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার ৯৪৬টি এবং ২০৬৭ সাল নাগাদ এক লাখ ৬২ হাজার যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে।
টানেল নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে চার হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ হারে ২০ বছর মেয়াদি এ ঋণ দিয়েছে। চীনের কমিউনিকেশন ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) টানেল নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।