ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো
গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে পাঁচজন মারা গেছেন। এর মধ্যে করোনায় দুজন, করোনার উপসর্গ নিয়ে দুজন এবং করোনা নেগেটিভ হয়েও একজন মারা গেছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (৩০ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকাল ৯টার মধ্যে তারা মারা যান।
এদিকে রোগী কমে আসায় আরেক দফা শয্যা কমানো হয়েছে রামেকের করোনা ইউনিটে। ৪১৮ থেকে নামিয়ে এই ইউনিটের শয্যা এখন ২৮। ১২টি ওয়ার্ডের পরিবর্তে এখন থেকে আটটি ওয়ার্ডে চলবে করোনার চিকিৎসা।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে হাসপাতালে নাটোর ও পাবনার একজন করে মারা গেছেন।
আর করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোরের একজন করে মারা গেছেন। এ ছাড়া করোনা নেগেটিভ হয়েও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় মারা গেছেন রাজশাহীর একজন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তিনজন মারা গেছেন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ)। ১৪ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন।
পরিচালক আরও জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৮৬ শয্যার রামেক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ১৫৩ জন। একদিন আগেও এই সংখ্যা ছিল ১৬১।
বর্তমানে রাজশাহীর ৭২ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২৬ জন, নাটোরের ৯ জন, নওগাঁর ২০ জন, পাবনার ১৬ জন, কুষ্টিয়ার পাঁচজন, চুয়াডাঙ্গার একজন, জয়পুরহাটের একজন, মেহেরপুরের একজন এবং সিরাজগঞ্জের দুজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
হাসপাতালে করোনা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৭৪ জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৫৫ জন। করোনা ধরা পড়েনি ভর্তি ২৪ জনের। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১৪ জন। এই এক দিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১৯ জন।
এর আগে সোমবার (৩০ আগস্ট) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ১৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে ২২ জনের নমুনায়।
একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আরও ১২১ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮ জনের। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ নমুনায় করোনা ধরা পড়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ৩৭৪ জন। এর মধ্যে করোনায় ১৫৪ জন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ১৮৬ জন এবং করোনা নেগেটিভ সত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ৩৪ জনের মৃত্যু হয়।
এর আগে গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বছরের জুলাই পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ২ হাজার ৫১১ জন।
এই ১৫ মাসে মারা গেছেন ১ হাজার ৬০৯ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫২৬ জনের। অন্যদের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গ নয়তো অন্যান্য শারীরিক জটিলতায়।