ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো
পদ্মার তীব্র স্রোতে বিলীনের পথে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ৭ নম্বর দেওপাড়া ইউনিয়নের নিমতলী গ্রামটি। গ্রামের ৪ কিলোমিটার এলাকায় কোনো না কোনো অংশ প্রতিদিনই গিলছে পদ্মা। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তীরবর্তী বাসিন্দারা।
(২৮ আগস্ট) শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভেঙে পড়ছে নদীপাড়ের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। পদ্মার ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) লোকজন সেখানে ফেলছেন জিও ব্যাগভর্তি বালু। তারপরও থামছে না পদ্মার খিদে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডে কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, রাজশাহী পয়েন্টে ১৬ মিটারের নিজে নেমে এসেছে পদ্মা নদীর পানি। শনিবার সকাল ৬টায় রাজশাহী পয়েন্টে পানি উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৯২ মিটার এবং সকাল ৯টায় ১৬ দশমিক ৯০ মিটার। যা বিপদসীমার ১ দশমিক ৬০ মিটার নিচে। রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মার পানির বিপদসীমা ধরা হয় ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। পানি কমতে থাকায় বেশ কিছু এলাকায় নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পাউবো সূত্র জানায়, গত ১৭ আগস্ট নিমতলী গ্রামের ভাঙনের কথা জানার পরদিনই জিও ব্যাগভর্তি বালু ফেলে সাময়িকভাবে প্রতিরোধ চেষ্টা করা হয়। ১৮ আগস্ট থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বস্তা জিও ব্যাগে বালু ফেলা হয়েছে। তবে সেখানে ১০ হাজার বস্তা জিও ব্যাগ ফেলা হবে।
নিমতলী গ্রামের বাসিন্দা ওয়াসিলুল হক বলেন, ১৯৯৮ সালের দিকে একবার গ্রামটি ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে যায়। পরে আবার পলি জমে চর জাগলে লোকজন আবার বসতি স্থাপন করে।
আদিবুল হাসান দিপু নামের এক যুবক বলেন, প্রায় ২৩ বছর ধরে এদিকে কোনো নদী ভাঙনের সৃষ্টি হয়নি। এবার বর্ষার শুরুর দিকে ভাঙন দেখা দিলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানানো হয়। কিন্তু তারা তেমন আগ্রহ দেখাননি। ফলে নিমতলী গ্রামের ৩-৪ কিলোমিটার নদী তীরবর্তী এলাকায় তীব্র ভাঙনের সৃষ্টি হয়।
দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান আক্তার বলেন, গত দীর্ঘদিন এ এলাকায় কোনো ভাঙন ছিল না। তবে এবারের ভাঙনটা আকস্মিক দেখা দিয়েছে।
পাউবোর সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার রিফাত করিম বলেন, ভাঙন প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থা আগে এখানে ছিল না। ভাঙন ঠেকাতে এলাকায় ১০ হাজার বস্তা জিও ব্যাগে বালু ফেলার কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আগামীতে মূল নদীতে ড্রেজিং, বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সিমেন্টের তৈরি বøক ফেলার মাধ্যমে ভাঙন প্রতিরোধেও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।