ঢাকা ০৩:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম :
Logo অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo ফরিদপুর জেলার মধুখালিতে “শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে দুলাভাইকে হত্যা” শীর্ষক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক আসামি শরিফুল শেখ ও তথি বেগম’কে ফরিদপুরের কোতোয়ালি এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী এলাকা হতে ২৩.৫ কেজি গাঁজাসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ Logo গ্রাম পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা Logo আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস রিপোর্টার্স ফোরামের শ্রদ্ধা

রামেক হাসপাতালে করোনামুক্ত হয়েও স্বাস্থ্য জটিলতায় মৃত্যু ১৫%

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো

 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীরা করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও হাসপাতাল ছাড়তে পারছেন না। আর ছাড়লেও আবার ফিরে আসতে হচ্ছে।

গত তিন দিনের (১০ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত) হিসেবে দেখা গেছে, এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর ১৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ রোগী করোনামুক্ত হওয়ার পরও শারীরিক নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন। আর করোনা ইউনিটে নেগেটিভ হওয়ার পর মৃত্যু হার ১৫ শতাংশ। এছাড়াও আইসিইউতে যাওয়া রোগীদের মধ্যে করোনামুক্ত রোগী ১৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
চিকিৎসকেরা বলছেন, ডেল্টা ভেরিয়েন্টে (ভারতীয় ধরণ) ‘পোস্ট কোভিড’ জটিলতা যেমন বাড়ছে, তেমন বাড়ছে হাসপাতালে এ ধরণের রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা। যারা পোস্ট কোভিড জটিলতায় ভুগছেন তাদের বেশীর ভাগই করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা শুরু করতে দেরি করার কারণে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউর ইনচার্জ আবু হেনা মেস্তফা কামাল বলেন, করোনা নেগেটিভ হওয়ার পর শারীরিক নানা জটিলতা নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আইসিইউতেও আগের চেয়ে এই রোগী বেশি হচ্ছে।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়িতে গিয়েও অনেক রোগী ফিরে আসছেন। তাদের অনেকেরই হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ ছাড়াও পাকস্থলী ও কিডনি অকার্যকরসহ বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দিচ্ছে। এটা নতুন ধরণের রোগ। করোনা যা করার, প্রথম সাত দিনের মধ্যেই করে ফেলছে। করোনা দেহের অনেক কিছুই অচল করে দিয়ে চলে যাচ্ছে। তারপর যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে।

হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য মতে, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সকাল ৬টা পর্যন্ত গেল ২৪ ঘন্টায় এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি আছেন ৩৪২ জন। এর মধ্যে করোনা নেগেটিভ হয়ে পরবর্তি স্বাস্থ্য জটিলতায় চিকিৎসাধীন ৬৫ জন।

এ দিন আইসিইউতে ভর্তি ২০ জনের মধ্যে তিনজন করোনামুক্ত হওয়া রোগি। আর করোনা ইউনিটে মারা যাওয়া নয়জনের মধ্যে একজন করোনা নেগেটিভ হয়েও পরবর্তি স্বাস্থ্য জটিলতায় চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এর আগের দিন গত বুধবার (১১ আগস্ট) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ৩৬৩ জন। করোনামুক্ত হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলাতায় চিকিৎসাধীন ৬৬ জন। এছাড়াও আইসিইউতে ২০ জনের মধ্যে চারজন করোনা নেগেটিভ রোগি। আর এ দিন মারা যাওয়া ১০ জনের মধ্যে তিনজন করোনামুক্ত হওয়ার পর মৃতু্যূ হয়।
এছাড়াও গত মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ৩৮০ জন। এর মধ্যে করোনামুক্ত হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলাতায় চিকিৎসাধীন ৬৮ জন। এছাড়াও আইসিইউতে ২০ জনের মধ্যে চারজন করোনামুক্ত হওয়া রোগি। আর এ দিন মারা যাওয়া ২১ জনের মধ্যে দুইজন করোনামুক্ত হওয়ার পর মৃত্যু হয়।
এদিকে, চলতে মাসের ১২ দিনে (১ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত) করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১৭৯ জন। যাদের মধ্যে করোনামুক্ত হয়ে পরবর্তি শারীরিক স্বাস্থ্য জটিলতায় মারা যান ২৪ জন। এ ধারণের মৃত্যুর হার ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ।

এর আগে গত জুলাই মাসে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা যান ৫৩১ জন। যাদের মধ্যে ৩১ জন মারা যান করোনামুক্ত হয়ে পরবর্তি স্বাস্থ্য জটিলতায়। মৃত্যু হার ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। আর জুন মাসে করোনা ইউনিটে মারা যাওয়া ৩৬৯ জনের মধ্যে করোনা নেগেটিভ হওয়া সাতজন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৯০ শতাংশ।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

রামেক হাসপাতালে করোনামুক্ত হয়েও স্বাস্থ্য জটিলতায় মৃত্যু ১৫%

আপডেট টাইম : ০৪:০৭:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অগাস্ট ২০২১

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো

 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীরা করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও হাসপাতাল ছাড়তে পারছেন না। আর ছাড়লেও আবার ফিরে আসতে হচ্ছে।

গত তিন দিনের (১০ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত) হিসেবে দেখা গেছে, এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর ১৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ রোগী করোনামুক্ত হওয়ার পরও শারীরিক নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন। আর করোনা ইউনিটে নেগেটিভ হওয়ার পর মৃত্যু হার ১৫ শতাংশ। এছাড়াও আইসিইউতে যাওয়া রোগীদের মধ্যে করোনামুক্ত রোগী ১৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
চিকিৎসকেরা বলছেন, ডেল্টা ভেরিয়েন্টে (ভারতীয় ধরণ) ‘পোস্ট কোভিড’ জটিলতা যেমন বাড়ছে, তেমন বাড়ছে হাসপাতালে এ ধরণের রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা। যারা পোস্ট কোভিড জটিলতায় ভুগছেন তাদের বেশীর ভাগই করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা শুরু করতে দেরি করার কারণে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউর ইনচার্জ আবু হেনা মেস্তফা কামাল বলেন, করোনা নেগেটিভ হওয়ার পর শারীরিক নানা জটিলতা নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আইসিইউতেও আগের চেয়ে এই রোগী বেশি হচ্ছে।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়িতে গিয়েও অনেক রোগী ফিরে আসছেন। তাদের অনেকেরই হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ ছাড়াও পাকস্থলী ও কিডনি অকার্যকরসহ বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দিচ্ছে। এটা নতুন ধরণের রোগ। করোনা যা করার, প্রথম সাত দিনের মধ্যেই করে ফেলছে। করোনা দেহের অনেক কিছুই অচল করে দিয়ে চলে যাচ্ছে। তারপর যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে।

হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য মতে, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সকাল ৬টা পর্যন্ত গেল ২৪ ঘন্টায় এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি আছেন ৩৪২ জন। এর মধ্যে করোনা নেগেটিভ হয়ে পরবর্তি স্বাস্থ্য জটিলতায় চিকিৎসাধীন ৬৫ জন।

এ দিন আইসিইউতে ভর্তি ২০ জনের মধ্যে তিনজন করোনামুক্ত হওয়া রোগি। আর করোনা ইউনিটে মারা যাওয়া নয়জনের মধ্যে একজন করোনা নেগেটিভ হয়েও পরবর্তি স্বাস্থ্য জটিলতায় চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এর আগের দিন গত বুধবার (১১ আগস্ট) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ৩৬৩ জন। করোনামুক্ত হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলাতায় চিকিৎসাধীন ৬৬ জন। এছাড়াও আইসিইউতে ২০ জনের মধ্যে চারজন করোনা নেগেটিভ রোগি। আর এ দিন মারা যাওয়া ১০ জনের মধ্যে তিনজন করোনামুক্ত হওয়ার পর মৃতু্যূ হয়।
এছাড়াও গত মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ৩৮০ জন। এর মধ্যে করোনামুক্ত হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলাতায় চিকিৎসাধীন ৬৮ জন। এছাড়াও আইসিইউতে ২০ জনের মধ্যে চারজন করোনামুক্ত হওয়া রোগি। আর এ দিন মারা যাওয়া ২১ জনের মধ্যে দুইজন করোনামুক্ত হওয়ার পর মৃত্যু হয়।
এদিকে, চলতে মাসের ১২ দিনে (১ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত) করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১৭৯ জন। যাদের মধ্যে করোনামুক্ত হয়ে পরবর্তি শারীরিক স্বাস্থ্য জটিলতায় মারা যান ২৪ জন। এ ধারণের মৃত্যুর হার ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ।

এর আগে গত জুলাই মাসে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা যান ৫৩১ জন। যাদের মধ্যে ৩১ জন মারা যান করোনামুক্ত হয়ে পরবর্তি স্বাস্থ্য জটিলতায়। মৃত্যু হার ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। আর জুন মাসে করোনা ইউনিটে মারা যাওয়া ৩৬৯ জনের মধ্যে করোনা নেগেটিভ হওয়া সাতজন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৯০ শতাংশ।