ঢাকা ০৪:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

সাতক্ষীরার ঝাউডাঙ্গায় মাদক সেবনে নিষেধ করায় এক রাতে দুই বসত বাড়িতে আগুন

মিহিরুজ্জামান, জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা

 

সাতক্ষীরার ঝাউডাঙ্গায় মাদক সেবন করতে নিষেধ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর রাগ-আক্রোশে এক রাতে দুই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদকাসক্ত আজমল হোসেনের বিরুদ্ধে।গত ভোর রাতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের বসতঘরে ও পার্শ্ববর্তী আনিস উদ্দিনের বাড়িতে বিচালি গাদায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত দুই পরিবারেই ধারণা একই এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মাদকাসক্ত আজমল হোসেন (৩০)সহ তার সহযোগীরা মিলে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ।অগ্নিকান্ডে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসহায় মনিরুলের পরিবার। চাচের বেড়ার তৈরী একটি বসতঘর, ঘরে থাকা খাট, আলমারি, ইলেকট্রিক ফ্যান, পোশাকসহ কয়েকটি আসবাপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। রাতে ছেলে ঘুমায় চাচের ঘরে আর মা-বাবা ঘুমায় গোয়ালঘরে।প্রতিবেশী হামিদ, শরিফুল সহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোরের দিকে হঠাৎ মনিরুলের বাড়িতে চিৎকারের শব্দ শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি আগুন জ্বলছে। আগুন মুহূর্তের মধ্যে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। তার পরক্ষণে পার্শ্ববর্তী আনিসের বাড়ি থেকে চিৎকারের আওয়াজ শুনে সেখানে গিয়ে দেখে তার বসতবাড়ির গায়ে বিচুলি গাদায় আগুন জ্বলছে। তখন দেখি আজমল রাস্তায় হাটাহাটি করছে। মাদক সেবন করতে নিষেধ করায় কয়েকদিন আগে রাতে স্থানীয় জাহাঙ্গীর কবিরাজের বাড়ির রান্নাঘরে আগুন লাগিয়ে দুই-তিনদিন নিখোঁজ ছিল, সে ফিরে আবার একরাতে দুই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে আবারও সকাল থেকে নিখোঁজ আজমল। এলাকায় একের পর এক এসব ঘটনায় ক্ষুদ্ধ ও দুশ্চিন্তায় এলাকাবাসী।অগ্নিকান্ডের ক্ষতিগ্রস্ত মনিরুল জানান, আজমল পেশায় ইজিবাইক চালক। নেশা করার জন্য সে তার ইজিবাইকটি বিক্রি করে দেওয়ার সময় বিক্রি করতে নিষেধ করায় আমার উপর চড়াও হয়ে ওঠে। আর সেই রাগ থেকে আমার আজ এতবড় ক্ষতি করলো। আনিস উদ্দিন বলেন, কয়েকদিন আগে আজমল নেশা করে এসে তার বাবাকে খুব মারধর করছিল তাই দেখে আমি সহ্য না করতে পেরে আজমলকে একটা চড়মারি। সেই রাগ থেকে আজ রাতে আমাদের বিচুলি গাদায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তার অত্যাচার সইতে না পেরে মা, বউ, সন্তান বাড়ি ছাড়া। আর বাবা সিরাজুল মাদকাসক্ত ছেলের এসব কর্মকান্ডে পাগল প্রায়। তাই মাদক কারবারি ও মাদক সেবনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসী।সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হুসেন জানান, ঘটনাটি ইউপি সদস্যর মাধ্যমে জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে তদন্তের জন্য এসআই সঞ্জিব সমাদ্দারকে পাঠানো হয়। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আজমলের নাম উলে­খ করে একটি এজাহার দায়ের করেছে। বসত বাড়িতে আগুন দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

সাতক্ষীরার ঝাউডাঙ্গায় মাদক সেবনে নিষেধ করায় এক রাতে দুই বসত বাড়িতে আগুন

আপডেট টাইম : ০৩:৪২:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অগাস্ট ২০২১

মিহিরুজ্জামান, জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা

 

সাতক্ষীরার ঝাউডাঙ্গায় মাদক সেবন করতে নিষেধ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর রাগ-আক্রোশে এক রাতে দুই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদকাসক্ত আজমল হোসেনের বিরুদ্ধে।গত ভোর রাতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের বসতঘরে ও পার্শ্ববর্তী আনিস উদ্দিনের বাড়িতে বিচালি গাদায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত দুই পরিবারেই ধারণা একই এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মাদকাসক্ত আজমল হোসেন (৩০)সহ তার সহযোগীরা মিলে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ।অগ্নিকান্ডে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসহায় মনিরুলের পরিবার। চাচের বেড়ার তৈরী একটি বসতঘর, ঘরে থাকা খাট, আলমারি, ইলেকট্রিক ফ্যান, পোশাকসহ কয়েকটি আসবাপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। রাতে ছেলে ঘুমায় চাচের ঘরে আর মা-বাবা ঘুমায় গোয়ালঘরে।প্রতিবেশী হামিদ, শরিফুল সহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোরের দিকে হঠাৎ মনিরুলের বাড়িতে চিৎকারের শব্দ শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি আগুন জ্বলছে। আগুন মুহূর্তের মধ্যে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। তার পরক্ষণে পার্শ্ববর্তী আনিসের বাড়ি থেকে চিৎকারের আওয়াজ শুনে সেখানে গিয়ে দেখে তার বসতবাড়ির গায়ে বিচুলি গাদায় আগুন জ্বলছে। তখন দেখি আজমল রাস্তায় হাটাহাটি করছে। মাদক সেবন করতে নিষেধ করায় কয়েকদিন আগে রাতে স্থানীয় জাহাঙ্গীর কবিরাজের বাড়ির রান্নাঘরে আগুন লাগিয়ে দুই-তিনদিন নিখোঁজ ছিল, সে ফিরে আবার একরাতে দুই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে আবারও সকাল থেকে নিখোঁজ আজমল। এলাকায় একের পর এক এসব ঘটনায় ক্ষুদ্ধ ও দুশ্চিন্তায় এলাকাবাসী।অগ্নিকান্ডের ক্ষতিগ্রস্ত মনিরুল জানান, আজমল পেশায় ইজিবাইক চালক। নেশা করার জন্য সে তার ইজিবাইকটি বিক্রি করে দেওয়ার সময় বিক্রি করতে নিষেধ করায় আমার উপর চড়াও হয়ে ওঠে। আর সেই রাগ থেকে আমার আজ এতবড় ক্ষতি করলো। আনিস উদ্দিন বলেন, কয়েকদিন আগে আজমল নেশা করে এসে তার বাবাকে খুব মারধর করছিল তাই দেখে আমি সহ্য না করতে পেরে আজমলকে একটা চড়মারি। সেই রাগ থেকে আজ রাতে আমাদের বিচুলি গাদায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তার অত্যাচার সইতে না পেরে মা, বউ, সন্তান বাড়ি ছাড়া। আর বাবা সিরাজুল মাদকাসক্ত ছেলের এসব কর্মকান্ডে পাগল প্রায়। তাই মাদক কারবারি ও মাদক সেবনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসী।সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হুসেন জানান, ঘটনাটি ইউপি সদস্যর মাধ্যমে জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে তদন্তের জন্য এসআই সঞ্জিব সমাদ্দারকে পাঠানো হয়। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আজমলের নাম উলে­খ করে একটি এজাহার দায়ের করেছে। বসত বাড়িতে আগুন দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।