ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো
রাজশাহীর বাগমারা থেকে ১৪ বছর বয়সী ৮ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে জোর পূর্বক সিএনজিতে তুলে নিয়ে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। তিন দিন আকটে রেখে ওই ছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলে তদন্তে নামে পুলিশ। ঘটনার তিনদিন পর রাস্তায় রেখে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা। জানতে পেরে মেয়েটির পরিবারের লোকজন তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে।
অপহরণের পর ধর্ষণের ঘটনায় মেয়েটির বাবা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় থানায় গিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত মাসুদ রানা (২০) এবং ফরিদ হোসেন (২১) এর নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত কয়েক জনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে।
মামলার পর থেকে আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ধর্ষণের শিকার ওই স্কুল ছাত্রীকে বুধবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের দধির খয়রা গ্রামের জনৈক এক কৃষকের মেয়ে গত ৭ আগস্ট নানীর বাড়িতে যাচ্ছিলেন। ওই সময় স্কুলছাত্রীটি মচমইল বেলতলা মোড়ে পৌঁছালে সেখানে পূর্বে থেকে ওৎ পেতে থাকা মাসুদ রানা এবং ফরিদ হোসেন জোর পূর্বক সিএনজিতে তুলে নেয়।
পরে দ্রæত সেখান থেকে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে আটকিয়ে রাখে। সেখানেই তার উপরে চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন।
এদিকে স্কুলছাত্রীর পরিবারের লোকজন তার নানীর বাড়িতে খোঁজ নিলে সেখানে যায়নি বলে জানতে পারে। এক সময় ওই স্কুলছাত্রীর মোবাইল ফোন থেকে একটি কল আসার পরে জানতে পারে সে অপহরণের শিকার হয়েছেন।
পরে সেই সূত্র ধরে পরিবারের লোকজন ছুটতে থাকে। সন্দেহ করে রওনা দেয় মাসুদ রানার বাড়িতে। সেখানে গেলেও পাওয়া যায় না অপহরণের শিকার স্কুলছাত্রীকে। সে সময় মেয়েটির পরিবারের লোকজন মাসুদ রানার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে যে তাদের ছেলে ওই মেয়েকে তুলে এনেছেন। বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
অবশেষে মেয়েটির পরিবারের লোকজন থানা পুলিশের আশ্রয় নেয়। থানায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্তদের বাড়িতে যায় এবং অপহরণের শিকার স্কুল ছাত্রীকে বাহির করে দেয়ার চাপ দেয়। তাতেও কোন লাভ হয়নি।
অবশেষে তিনদিন পর অভিযুক্তরাই ওই স্কুলছাত্রীকে রাস্তায় রেখে পালিয়ে যায়। মেয়েটি উদ্ধার হওয়ার পর তার পরিবারের লোকজন জানাতে পারে মাসুদ তাকে তার খালুর বাড়ি উপজেলার দ্বীপপুরে নিয়ে যায় এবং সেখানেই তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে।
স্কুলছাত্রীর পিতা জানান, মাসুদ রানা দীর্ঘদিন থেকে তার মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছিল। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এমনটি ঘটাতে পারে। নাবালিকা মেয়ের সাথে জোর পূর্বক ধর্ষণের বিচার চাই। সেই সাথে আসামীদের দ্রত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার সহ আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তিদাবী করছি।
এ ব্যাপারে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ জানান, স্কুলছাত্রীকে জোরপূর্বক অপহরণ করে ধর্ষণের ঘটনায় মেয়ের বাবা একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলার পর থেকে আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়াও ধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়েছে।