ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো
আগামী ২১ জুলাই পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে প্রতিবারই ব্যস্ত সময় পার করেন রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকার কামারপাড়ার ব্যবসায়ীরা। তবে এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে তাদের চিন্তা ও উৎকন্ঠা।
প্রতিবারের মতো আংরার চুলায় দগদগে আগুনে গরম লোহার পিটা পিটিতে টুং টাং শব্দ হচ্ছেনা কামারপাড়ায়। আগুনের শিখায় তাপ দেয়া হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে ঠিকই তৈরি হচ্ছে দা-বটি, চাপাতি ও ছুরি কিন্তু আশানুরুপ বিক্রি হচ্ছেনা তাদের। ঈদকে সামনে রেখে অনেক জিনিস তৈরী করে ষ্টক করলেও তুলনামুলক বিক্রি কম হওয়ায় অনেকগুলো অবিক্রিত থাকবে বলে আশংকা করছেন ব্যবসায়ীরা।
কামাররা কাজ করছেন। তবে তাদের মধ্যে কর্ম-ব্যস্ততা কম। বেশির ভাগ কামারকে পুরানো কাজ করতে দেখা গেছে। তারা পুরানো হাসুয়া, বটি, ছুরি ধার করচ্ছেন। এছাড়া চাপাতিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র তৈরি করছেন।
রবিবার (১৮ জুলাই) রাজশাহী নগরীর ১৬ নং ওয়ার্ডে মথুর ডাঙ্গা এলাকার পলাশ কামারকে দেখা যায় অনেকটাই অসল সময় পাড় করছে।
কামার পলাশ জানান, করোনাভাইরাসের কারণে কাজে গতি নেই ভাই। যদিও ইদের দুই দিন আছে দম ফেলার সময় থাকে না কামারদের। কিন্ত এবছর কাজ-কর্ম নেই বললে চলে। , গত বছরের চেয়ে চার ভাগের এক ভাগ কাজ নেই। সারা বছর যা কাজ হয় এই ঈদের একটি মাসে তা হয়। লোন কিস্তি আছে খুব নিন্তায় আছি।
কাটাখালী হাটের শামসুজ্জামান জানায়, একটা ছোট পশুর চামড়া কাটা ছুরি কিনেছেন ৭০ টাকা। এছাড়া হাসুয়া পুড়ানো ৫০ টাকা নিয়েছেন। কয়েকজন কামারের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্প্রিং লোহা (পাকা লোহা) ও কাঁচা লোহা, সাধারণত এ দুই ধরনের লোহা ব্যবহার করে এসব উপকরণ তৈরি করা হয়। স্প্রিং লোহা দিয়ে তৈরি উপকরণের মান ভালো, দামটা একটু বেশি।
আর কাঁচা লোহার তৈরি উপকরণগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে কম। ব্যবহার করা হয় এ্যাঙ্গেল, রড, স্টিং, রেল লাইনের লোহা, গাড়ির পাত ইত্যাদি। রবিউল কামাড় জানান, এ শিল্পের প্রধান উপকরণ লোহা, ইস্পাত ও কয়লা। তবে কয়লার দাম বেড়েছে। ঠিকঠাক পাওয়া যাচ্ছে না। তাই কাজ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। কিন্তু করোনার কারণে তেমন গ্রহক না থাকায় তেমন সমস্যা হচ্ছে না।
কামারা জানান, বছরের ১১ মাসে তাদের ব্যবসা হয় এক রকম, আর কোরবানির ইদের আগের এক মাসে ব্যবসা আরেক রকম। কিন্ত এবছর ব্যবসা ভালো না।