জুলকার নাইন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে বিজিবি কর্তৃক আটককৃত ১৭টি গরু নিলামে সিন্ডিকেটের কারনে সরকার প্রায় ৪ লক্ষ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত রহনপুর শুল্ক গুদাম কতৃপক্ষের প্রকাশ্য নিলামে অংশ নিয়ে সর্বচ্চো দরদাতা স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও চাল ব্যবসায়ী গোলাম মোর্তূজা গরু গুলো কিনে নেন। কিন্তু একটি সিন্ডিকেট পুনঃনিলামের মাধ্যমে ওই গরু গুলো প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বাইরে বিক্রি করে দেয়। এতে সরকার প্রায় ৪ লক্ষ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হয়। এদিকে, গত মঙ্গলবার ভারতীয় গরু সন্দেহে ৫৯বিজিবির একটি ভ্রাম্যমান টিম গরুগুলো আটক করে রহনপুর কাস্টমসে জমা দেয়।
তবে আটককৃত গরুর মালিক বাশিরের দাবি, আটককৃত ১৭টি গরু তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ও তক্তিপুর হাট থেকে কিনেছিলেন। এ গরুগুলোর স্বপক্ষে তার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে। তবে তিনি এই গরুগুলো ভারত থেকে আনা বলে স্বীকার করেন। প্রায় ১ বছর পূর্বে সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে বৈধ পথে গরুগুলো নিয়ে আসা হয়। গরু গুলো নিজ বাড়িতে রক্ষণাবেক্ষণ করে বিক্রয় উপযোগী করা হয়। আসন্ন কোরবানির ঈদে গরুগুলো বিক্রয়ের জন্য নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গত মঙ্গলবার হাট থেকে ট্রাকযোগে নিয়ে ওই গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার পথে উপজেলার গোমস্তাপুর কলেজ মোড়ে ট্রাক বোঝাই গরুগুলোকে আটক করে বিজিবি।
পরে আটককৃত গরুগুলো ৫৯বিজিবির ব্যাটালিয়ন সদর গোবরাতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গরু ব্যবসায়ীরা অনেক চেষ্টা করেও গরুগুলোকে ছাড়িয়ে নিতে ব্যর্থ হয়। অবশেষে গরুগুলোকে রহনপুর শুল্ক গুদামে জমা দেয়া হয়। গত ১৩ জুলাই ১ম দফা নিলামের ব্যবস্থা নেয়া হলেও নিলামে গরুগুলির সর্বোচ্চ দর ২২ লক্ষ টাকা উঠে। কিন্তু ভূ’ক্তভোগী গরু ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টার ফলে সে নিলাম স্থগিত হয়ে যায়।
পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার আবারো গরুগুলো নিলামের ব্যবস্থা করা হয়। এতে এক আওয়ামীলীগ নেতা ও চাল ব্যবসায়ী ২০ লক্ষ ৯২ হাজার ৫০০ টাকার বিনিময়ে গরুগুলো নিলামে কিনে নেন। এখানেই শেষ নয়, অতঃপর অনুষ্ঠিত হয় সমঝোতার নিলাম। সেখানে গরুগুলোর দাম ওঠে ২৫ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী যৌথভাবে এ গরুগুলো কিনে নেন। উদ্বৃত্ত টাকাগুলো যুবলীগ নেতা মোমিন বিশ্বাস ও সিরাজুল ইসলাম টাইগারের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীদের মাঝে এবং নিলামে অংশ নেয়া ৯০ জন প্রত্যেককে ২ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়। এদিকে, ওই সিন্ডিকেট হতভাগ্য গরু ব্যবসায়ীদের কাউকেও ২ টি নিলামেই অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে রহনপুর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মোখতার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিজিবি কর্তৃক আটককৃত ১৭ টি গরু প্রকাশ্য নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতাকে দেয়া হয়েছে। পরে আর কোথায় পুনঃনিলাম হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।