ঢাকা ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম :
Logo অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo ফরিদপুর জেলার মধুখালিতে “শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে দুলাভাইকে হত্যা” শীর্ষক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক আসামি শরিফুল শেখ ও তথি বেগম’কে ফরিদপুরের কোতোয়ালি এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী এলাকা হতে ২৩.৫ কেজি গাঁজাসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ Logo গ্রাম পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা Logo আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস রিপোর্টার্স ফোরামের শ্রদ্ধা

রাজশাহীর মার্কেটেগুলোতে মানছেনা স্বাস্থ্যবিধি

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো

 

রাজশাহী নগরীতে টানা এক মাস চার দিনের লকডাউন শেষে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে লকডাউন বিরতি। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ইদুল আজহাকে সামনে রেখে লকডাউন বিরতি দেয়া হয়েছে। এতে বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই নগরীতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। ইদকে সামনে রেখে মার্কেটগুলোতে বেচাকেনা জমে উঠতে শুরু করেছে।

তবে যানবাহন কিংবা মার্কেট কোন জায়গাতেই স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে তেমন গুরুত্ব নেই। অধিকাংশ মানুষের কাছে মাস্ক থাকলেও তা সঠিক নিয়মে পরছেন না। অনেকের মুখ থেকে নাকে উঠছে না মাস্ক। আবার কারো থুতনির নিচেই থাকছে। অনেকে হাতে নিয়েই ঘুরছেন। আর এক্ষেত্রে প্রশাসনের কোন তৎপরতা কিংবা সচেতনতামূলক কার্যক্রম এদিন লক্ষ্য করা যায় নি।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা যায়, নগরীজুড়ে আবারও কর্মচঞ্চলতা শুরু হয়েছে। স্বাভাবিক হয়েছে গণপরিবহণ চলাচল। নগরীর জিরো পয়েন্ট এলাকায় ক্ষুদ্র যানজটও দেখা গেছে। খুলেছে শপিংমল ও দোকানপাট। এতে স্বস্থি প্রকাশ করছে যাত্রী, চালকসহ ক্রেতা-বিক্রেতারাও।

তবে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে জানতে চাইলেই বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছেন তারা। নগরীর কোর্ট বাইপাস এলাকায় পাঁচ জনের সিটে ছয়জন যাত্রী নিয়ে অরেকজন যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন এক অটো রিকশা চালক। তার গাড়িতে দুইজন যাত্রী মাস্ক পরে ছিলেন। চালকসহ অন্যাদের মাস্ক নাকের নিচে ছিলো। নাম জানতে চাইলে তিনি বলতে চাননি।
স্বাস্থ্যবিধি সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি জানান, দীর্ঘ সময় ধরে অটো চালান নি তিনি। সামনে আর কয় দিনপর ইদ। বউ, সন্তানদের জন্য বাজার করতে হবে। আর তাছাড়া গাড়িতে তো জায়গায় আছে। একটা বেশি যাত্রী তুললে সমস্যা কি। আর তাদের কাছে মাস্ক আছে। নগরীতে খুলেছে মার্কেট। ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা।

তবে এর ভিন্ন চিত্র আছে। শপিংমল ও আরডিএ মার্কেটের ভিতরের দোকানগুলোতে অনেকে অলস সময় পার করতেও দেখা যায়। এদিন নগরীর সাহেব বাজার, আরডিএ মার্কেট, কাপড়পট্টি, গণকপাড়া, নিউ মার্কেট, কোর্ট বাজার এলাকায় বেশি মানুষের সমাগম দেখা গেছে। শপিংমালের চেয়ে বাইরের ফুটপাতের দোকানগুলোতেই ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে লকডাউন খুলেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তারা দোকান খুলেছেন। শুক্রবার বলে বাজাওে একটু ভির দেখা গেছে। তাবে এখনো সেইভাবে মার্কেট জমে উঠেনি। এরমধ্যে অনেকে শুধু দেখছেন। অনেকে কেনা দামও বলছেন। তবে ক্রেতাদের প্রতিক্রিয়া ঠিক ভিন্ন। তারা বলছেন-করোনায় এমনিতেই মানুষের আয় করেছে। এরমধ্যে সন্তানদের বায়না মেটাতে বা দীর্ঘ দিন পোশাক কেনেনি একারণে বাজারে এসেছেন। কিন্তু বিক্রেতারা বেশি দাম চাচ্ছেন।
নগরীর বিলসিমলা এলাকা থেকে সাহেব বাজার এলাকায় বাজার করতে এসেছিলেন পারভীন খাতুন। তিনি জানান, লকডাউনের কারণে অনেক দিন বাজারে আসেন নি তিনি। সামনে ইদ। ছোট একটা ছেলে ও একটা মেয়ে আছে।

তাদের জন্যই মূলত বাজারে আসা। সন্তানদের জন্যই কিছু কিনবেন। এবারের ইদে তিনি কিছু নেবেন না। কারণ তার বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না। আর ব্যবসায়ীরা একটু বেশি দাম চাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্যবিধি বলতে তিনি মাস্ক এনেছেন। তার সন্তানদের কাছেও মাস্ক আছে। ছোট্ট বাচ্চা তো তাই বোঝে না। মাস্ক খুলে রেখেছে। তিনি বাজারে আসলে মাস্ক ব্যবহার করেন।
আরডিএ মার্কেটের ফ্যাশান বাজার গার্মেন্টস দোকানের মালিক আব্দুর মতিন জানান, এখনো বেচাকেনা তেমন জমে উঠেনি। ক্রেতা আসছে, দেখছে। অনেকে দাম না বলেই চলে যাচ্ছে। অনেকে কেনা দামও বলছে না। তবে তিনি আশাবাদী সামনের দিনগুলোতে বেচাকেনা জমে উঠবে। আর স্বাস্থ্যবিধি বলতে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা আছে।
এ বিষয়ে আরডিএ মার্কেট ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী জানান, আজকে প্রথম দিন থেকে মার্কেটে কেনাবেচা ভালোই হচ্ছে। তবে এটা আরো বাড়বে। তবে স্বাস্থ্যবিধি সেভাবে নিশ্চিত হচ্ছে না এটা ঠিক। এটা শুধু মার্কেটে না পুরো নগরীর চিত্রও এমন।
তিনি আরো জানান, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে তারা স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে ব্যবসায়ীক নেতা ও প্রশাসনের সমন্বয়ে কমিটি করে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের পরামর্শ দেয়া হয়েছিলো। যেটির তেমন কোন প্রতিফলন দেখেন নি। মার্কেটগুলোতে মাঝে মাঝে হঠাৎ করে প্রশাসনিক তৎপরতার চেয়ে সকলের সহযোগিতায় সমন্বিত সচেতনতামূলক কর্মসূচির জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

রাজশাহীর মার্কেটেগুলোতে মানছেনা স্বাস্থ্যবিধি

আপডেট টাইম : ০১:১৮:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুলাই ২০২১

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো

 

রাজশাহী নগরীতে টানা এক মাস চার দিনের লকডাউন শেষে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে লকডাউন বিরতি। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ইদুল আজহাকে সামনে রেখে লকডাউন বিরতি দেয়া হয়েছে। এতে বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই নগরীতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। ইদকে সামনে রেখে মার্কেটগুলোতে বেচাকেনা জমে উঠতে শুরু করেছে।

তবে যানবাহন কিংবা মার্কেট কোন জায়গাতেই স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে তেমন গুরুত্ব নেই। অধিকাংশ মানুষের কাছে মাস্ক থাকলেও তা সঠিক নিয়মে পরছেন না। অনেকের মুখ থেকে নাকে উঠছে না মাস্ক। আবার কারো থুতনির নিচেই থাকছে। অনেকে হাতে নিয়েই ঘুরছেন। আর এক্ষেত্রে প্রশাসনের কোন তৎপরতা কিংবা সচেতনতামূলক কার্যক্রম এদিন লক্ষ্য করা যায় নি।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা যায়, নগরীজুড়ে আবারও কর্মচঞ্চলতা শুরু হয়েছে। স্বাভাবিক হয়েছে গণপরিবহণ চলাচল। নগরীর জিরো পয়েন্ট এলাকায় ক্ষুদ্র যানজটও দেখা গেছে। খুলেছে শপিংমল ও দোকানপাট। এতে স্বস্থি প্রকাশ করছে যাত্রী, চালকসহ ক্রেতা-বিক্রেতারাও।

তবে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে জানতে চাইলেই বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছেন তারা। নগরীর কোর্ট বাইপাস এলাকায় পাঁচ জনের সিটে ছয়জন যাত্রী নিয়ে অরেকজন যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন এক অটো রিকশা চালক। তার গাড়িতে দুইজন যাত্রী মাস্ক পরে ছিলেন। চালকসহ অন্যাদের মাস্ক নাকের নিচে ছিলো। নাম জানতে চাইলে তিনি বলতে চাননি।
স্বাস্থ্যবিধি সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি জানান, দীর্ঘ সময় ধরে অটো চালান নি তিনি। সামনে আর কয় দিনপর ইদ। বউ, সন্তানদের জন্য বাজার করতে হবে। আর তাছাড়া গাড়িতে তো জায়গায় আছে। একটা বেশি যাত্রী তুললে সমস্যা কি। আর তাদের কাছে মাস্ক আছে। নগরীতে খুলেছে মার্কেট। ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা।

তবে এর ভিন্ন চিত্র আছে। শপিংমল ও আরডিএ মার্কেটের ভিতরের দোকানগুলোতে অনেকে অলস সময় পার করতেও দেখা যায়। এদিন নগরীর সাহেব বাজার, আরডিএ মার্কেট, কাপড়পট্টি, গণকপাড়া, নিউ মার্কেট, কোর্ট বাজার এলাকায় বেশি মানুষের সমাগম দেখা গেছে। শপিংমালের চেয়ে বাইরের ফুটপাতের দোকানগুলোতেই ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে লকডাউন খুলেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তারা দোকান খুলেছেন। শুক্রবার বলে বাজাওে একটু ভির দেখা গেছে। তাবে এখনো সেইভাবে মার্কেট জমে উঠেনি। এরমধ্যে অনেকে শুধু দেখছেন। অনেকে কেনা দামও বলছেন। তবে ক্রেতাদের প্রতিক্রিয়া ঠিক ভিন্ন। তারা বলছেন-করোনায় এমনিতেই মানুষের আয় করেছে। এরমধ্যে সন্তানদের বায়না মেটাতে বা দীর্ঘ দিন পোশাক কেনেনি একারণে বাজারে এসেছেন। কিন্তু বিক্রেতারা বেশি দাম চাচ্ছেন।
নগরীর বিলসিমলা এলাকা থেকে সাহেব বাজার এলাকায় বাজার করতে এসেছিলেন পারভীন খাতুন। তিনি জানান, লকডাউনের কারণে অনেক দিন বাজারে আসেন নি তিনি। সামনে ইদ। ছোট একটা ছেলে ও একটা মেয়ে আছে।

তাদের জন্যই মূলত বাজারে আসা। সন্তানদের জন্যই কিছু কিনবেন। এবারের ইদে তিনি কিছু নেবেন না। কারণ তার বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না। আর ব্যবসায়ীরা একটু বেশি দাম চাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্যবিধি বলতে তিনি মাস্ক এনেছেন। তার সন্তানদের কাছেও মাস্ক আছে। ছোট্ট বাচ্চা তো তাই বোঝে না। মাস্ক খুলে রেখেছে। তিনি বাজারে আসলে মাস্ক ব্যবহার করেন।
আরডিএ মার্কেটের ফ্যাশান বাজার গার্মেন্টস দোকানের মালিক আব্দুর মতিন জানান, এখনো বেচাকেনা তেমন জমে উঠেনি। ক্রেতা আসছে, দেখছে। অনেকে দাম না বলেই চলে যাচ্ছে। অনেকে কেনা দামও বলছে না। তবে তিনি আশাবাদী সামনের দিনগুলোতে বেচাকেনা জমে উঠবে। আর স্বাস্থ্যবিধি বলতে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা আছে।
এ বিষয়ে আরডিএ মার্কেট ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী জানান, আজকে প্রথম দিন থেকে মার্কেটে কেনাবেচা ভালোই হচ্ছে। তবে এটা আরো বাড়বে। তবে স্বাস্থ্যবিধি সেভাবে নিশ্চিত হচ্ছে না এটা ঠিক। এটা শুধু মার্কেটে না পুরো নগরীর চিত্রও এমন।
তিনি আরো জানান, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে তারা স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে ব্যবসায়ীক নেতা ও প্রশাসনের সমন্বয়ে কমিটি করে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের পরামর্শ দেয়া হয়েছিলো। যেটির তেমন কোন প্রতিফলন দেখেন নি। মার্কেটগুলোতে মাঝে মাঝে হঠাৎ করে প্রশাসনিক তৎপরতার চেয়ে সকলের সহযোগিতায় সমন্বিত সচেতনতামূলক কর্মসূচির জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।