ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো :

রাজশাহীতে হেপাটাইটিস, ক্যান্সার ও পানি বাহিত রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর লাইফস্টাইল, হেলথ এডুকেশন এন্ড প্রমোশন এই সচেতন সভার আয়োজন করে।

কর্মশালার মূল প্রবন্ধে বলা হয়, নিরাপদ পানির অভাবে প্রতি বছর বিশ্বে পানিবাহিত রোগে ১৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয় এবং ৮ লাখ ৪২ হাজার মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করে। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশে^র প্রতি তিনজন মানুষের মধ্যে একজন হেপাটাইটিস বি কিংবা হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত এবং ২০১৫ সালে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৩ লাখ মানুষ মারা গেছে।

হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস রক্তে সংক্রমিত হলে লিভার সিরোসিস এবং শেষ পর্যন্ত লিভার ক্যান্সার হয়ে মৃত্যু হতে পারে বলে কর্মশালায় তুলে ধরা হয়। অন্যদিকে, বিশ্বে ২০০ ধরণের ক্যান্সার রয়েছে যার কারণে প্রতি বছর লাখো মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১২ সালে সারা বিশ্বে ৮০ লাখ মানুষ ক্যান্সারে মারা গেছে। বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত। প্রতি বছর প্রায় দুই লাখ মানুষ নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে।

সভায় ক্যান্সারের কয়েকটি কারণ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে বয়স, খাবার ও জীবনযাপনের ধারা, পারিবারিক ইতিহাস, পরিবেশ এবং পেশাগত কারণ অন্যতম। আর মরণ এই ব্যাধি প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞরা ধূমপান সম্পূর্ণভাবে ত্যাগ করা, সুষম খাবার গ্রহণ, আর্সেনিকমুক্ত পানি পান, নিয়মিত হাঁটাচলা এবং ব্যায়াম, ভেজাল ও নি¤œমানের কসমেটিকস পরিহার, দীর্ঘসময় সরাসরি সূর্যের নিচে না থাকা, বেশ কিছু জীবাণুর বিরুদ্ধে টিকা গ্রহণ, পরিবেশ দূষণ, বিশেষ করে বায়ু ও পানিদূষণ বন্ধ করার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে আয়োজিত এ জনসচেতনতা সভা বাস্তবায়ন করছে স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত কনসালটিং ফার্ম বর্ণমালা কমিউনিকেশন লিমিটেড।

বর্ণমালা কমিউনিকেশন লিমিটেড ম্যানেজার (প্রশাসন ও অর্থ বিভাগ) গুলশানারা রিয়ার পরিচালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য উপপরিচালক ডা. আনোয়ারুল কবীর, সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এএফএম আঞ্জুমান আরা বেগম সহ চিকিৎসক, সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, ধর্মীয় নেতা, শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।