ঢাকা ০৭:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম :
Logo অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo ফরিদপুর জেলার মধুখালিতে “শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে দুলাভাইকে হত্যা” শীর্ষক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক আসামি শরিফুল শেখ ও তথি বেগম’কে ফরিদপুরের কোতোয়ালি এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী এলাকা হতে ২৩.৫ কেজি গাঁজাসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ Logo গ্রাম পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা Logo আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস রিপোর্টার্স ফোরামের শ্রদ্ধা

তানোরে করোনায় দরিদ্রদের ভরসা কর্মসৃজন কর্মসূচি

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো :

দেশজুড়ে চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। কাজ হারিয়ে বেকার নিম্ন আয়ের মানুষজন। এই সংকটকালে রাজশাহীর তানোর উপজেলার নিম্ন আয়ের হাজারখানেক মানুষের কাছে ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে কর্মসৃজন কর্মসূচি।
সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনীর আওতায় কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন এরা। সচল রয়েছে গ্রামীণ জনপদের রাস্তঘাট রক্ষণাবেক্ষণসহ ছোটোখাটো উন্নয়ন কর্মকান্ড।
জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের তানোরে ইজিপিপি ২য় পর্যায়ের প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ রাস্তঘাট রক্ষণাবেক্ষণ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, কবরস্থান ও মসজিদ মাদ্রাসার আঙ্গিনা ভরাটকাজ হচ্ছে।
জলাবদ্ধতা দূরীকরণে চলছে নালা-নর্দমা সংস্কার। উপজেলার সাত ইউনিয়নে নেয়া ৩২টি প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৮৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। এসব প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ১০৮জন শ্রমিক দৈনিক ২০০ টাকা করে মজুরি পাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রতিটি প্রকল্পে সরেজমিন গিয়ে শতভাগ কাজ আদায় করছেন। ফলে এর সুফল পাচ্ছে গ্রামীণ লোকজন। আর দুর্যোগকালীন কাজ পেয়ে সংসারের চাকা সচল রেখেছেন নিম্ন আয়ের লোকজন।
উপজেলার সাত ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি প্রকল্প সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে কর্মযজ্ঞ। প্রত্যেকটি প্রকল্পে শ্রমিকরা কাজ করছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কাজের তদারকি করছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দফতর জানাচ্ছে, প্রত্যেকটি প্রকল্পে একজন করে ট্যাগ অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সার্বক্ষনিকভাবে এসব কাজের তদারকি করছেন। প্রকল্প এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পংকজ চন্দ্র দেবনাথ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের সমন্বয়কারী সোহেল রানা দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার হিসেবে। এছাড়া সরনজাই ইউনিয়নে উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার সাদিকুজ্জামান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম হোসেন কাঁমারগা ইউনিয়নে, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম পাঁচন্দর ইউনিয়নে, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আখতার হোসেন বাঁধাইড় ইউনিয়নে, বরেন্দ্র উন্নয়ন কতৃপক্ষ তানোর জোনের প্রকৌশলী মাহাফুজ কলমা ইউনিয়নে, এবং উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার জাকারিয়া হোসেন তালন্দ ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রতিটি প্রকল্পে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সরেজমিনে গিয়ে কাজের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। প্রকল্পের সভাপতি-সম্পাদকদের সাথে কথা বলছেন। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ তদারকি করছেন ইউএনও। এছাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার তারিকুল ইসলাম সবার সাথে সমন্বয় করে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন শতভাগ কাজ আদায়ে।
উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের একটি প্রকল্পের সভাপতি ফেরদৌসি বেগম। তিনি জানিয়েছেন, অতি-দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় এলাকায় কিছু মানুষের কাজের সুযোগ হয়েছে। করোনার এই সংকট কালে এই কাজ লোকজনের বিশেষ কাজে দিয়েছে।
ইজিপিপি ২য় পর্যায়ের প্রকল্পের শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন তহমিনা বেগম, নুরজাহান বেওয়া, আখলিমা বেগম, রিনা বিবি। করোনা মহামারির ভেতরে কাজ পেয়ে তারাও খুশি। তারা জানিয়েছেন, করোনার কারণে তেমন কাজকাম নেই এলাকায়। অনেকেই কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করলেও এখন বেকার।
কিন্তু তারা ঠিকই কাজ করছেন। কাজ শেষে নায্য মজুরি পাচ্ছেন। কঠিন সময়ে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে টিকে রয়েছেন।
কাজের গুনগত মানে সন্তুষ্ট উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মজিবর রহমান ও কলমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাইনুল ইসলাম স্বপন।
তারা জানিয়েছেন, কাজ ভালো হচ্ছে। তারা শতভাগ কাজ আদায় করে নিচ্ছেন। এই প্রকল্পে এলাকার উন্নয়নকাজ গতিশীল রয়েছে। তাছাড়া অতিদরিদ্র ও বেকারদের কাজের সুযোগ হওয়ায় দারিদ্র কমাতেও ভূমিকা রেখেছে এসব প্রকল্প।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, গ্রাম-বাংলার দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করতে পারলে আমাদের ধনী দরিদ্রের ব্যবধান কমে আসবে।

তাই দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তানোরের দারিদ্র্য বিমোচনের সরকারের প্রতিটি কর্মসূচীগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। যা আগামীতে অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ইউএনও।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

তানোরে করোনায় দরিদ্রদের ভরসা কর্মসৃজন কর্মসূচি

আপডেট টাইম : ১১:৫৪:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুন ২০২১

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো :

দেশজুড়ে চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। কাজ হারিয়ে বেকার নিম্ন আয়ের মানুষজন। এই সংকটকালে রাজশাহীর তানোর উপজেলার নিম্ন আয়ের হাজারখানেক মানুষের কাছে ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে কর্মসৃজন কর্মসূচি।
সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনীর আওতায় কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন এরা। সচল রয়েছে গ্রামীণ জনপদের রাস্তঘাট রক্ষণাবেক্ষণসহ ছোটোখাটো উন্নয়ন কর্মকান্ড।
জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের তানোরে ইজিপিপি ২য় পর্যায়ের প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ রাস্তঘাট রক্ষণাবেক্ষণ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, কবরস্থান ও মসজিদ মাদ্রাসার আঙ্গিনা ভরাটকাজ হচ্ছে।
জলাবদ্ধতা দূরীকরণে চলছে নালা-নর্দমা সংস্কার। উপজেলার সাত ইউনিয়নে নেয়া ৩২টি প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৮৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। এসব প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ১০৮জন শ্রমিক দৈনিক ২০০ টাকা করে মজুরি পাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রতিটি প্রকল্পে সরেজমিন গিয়ে শতভাগ কাজ আদায় করছেন। ফলে এর সুফল পাচ্ছে গ্রামীণ লোকজন। আর দুর্যোগকালীন কাজ পেয়ে সংসারের চাকা সচল রেখেছেন নিম্ন আয়ের লোকজন।
উপজেলার সাত ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি প্রকল্প সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে কর্মযজ্ঞ। প্রত্যেকটি প্রকল্পে শ্রমিকরা কাজ করছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কাজের তদারকি করছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দফতর জানাচ্ছে, প্রত্যেকটি প্রকল্পে একজন করে ট্যাগ অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সার্বক্ষনিকভাবে এসব কাজের তদারকি করছেন। প্রকল্প এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পংকজ চন্দ্র দেবনাথ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের সমন্বয়কারী সোহেল রানা দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার হিসেবে। এছাড়া সরনজাই ইউনিয়নে উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার সাদিকুজ্জামান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম হোসেন কাঁমারগা ইউনিয়নে, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম পাঁচন্দর ইউনিয়নে, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আখতার হোসেন বাঁধাইড় ইউনিয়নে, বরেন্দ্র উন্নয়ন কতৃপক্ষ তানোর জোনের প্রকৌশলী মাহাফুজ কলমা ইউনিয়নে, এবং উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার জাকারিয়া হোসেন তালন্দ ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রতিটি প্রকল্পে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সরেজমিনে গিয়ে কাজের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। প্রকল্পের সভাপতি-সম্পাদকদের সাথে কথা বলছেন। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ তদারকি করছেন ইউএনও। এছাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার তারিকুল ইসলাম সবার সাথে সমন্বয় করে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন শতভাগ কাজ আদায়ে।
উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের একটি প্রকল্পের সভাপতি ফেরদৌসি বেগম। তিনি জানিয়েছেন, অতি-দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় এলাকায় কিছু মানুষের কাজের সুযোগ হয়েছে। করোনার এই সংকট কালে এই কাজ লোকজনের বিশেষ কাজে দিয়েছে।
ইজিপিপি ২য় পর্যায়ের প্রকল্পের শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন তহমিনা বেগম, নুরজাহান বেওয়া, আখলিমা বেগম, রিনা বিবি। করোনা মহামারির ভেতরে কাজ পেয়ে তারাও খুশি। তারা জানিয়েছেন, করোনার কারণে তেমন কাজকাম নেই এলাকায়। অনেকেই কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করলেও এখন বেকার।
কিন্তু তারা ঠিকই কাজ করছেন। কাজ শেষে নায্য মজুরি পাচ্ছেন। কঠিন সময়ে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে টিকে রয়েছেন।
কাজের গুনগত মানে সন্তুষ্ট উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মজিবর রহমান ও কলমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাইনুল ইসলাম স্বপন।
তারা জানিয়েছেন, কাজ ভালো হচ্ছে। তারা শতভাগ কাজ আদায় করে নিচ্ছেন। এই প্রকল্পে এলাকার উন্নয়নকাজ গতিশীল রয়েছে। তাছাড়া অতিদরিদ্র ও বেকারদের কাজের সুযোগ হওয়ায় দারিদ্র কমাতেও ভূমিকা রেখেছে এসব প্রকল্প।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, গ্রাম-বাংলার দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করতে পারলে আমাদের ধনী দরিদ্রের ব্যবধান কমে আসবে।

তাই দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তানোরের দারিদ্র্য বিমোচনের সরকারের প্রতিটি কর্মসূচীগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। যা আগামীতে অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ইউএনও।