অালোর জগত ডেস্ক : পুনঃতফসিলের পরও ভোটগ্রহণ তিন সপ্তাহ পেছানোর দাবি জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল বুধবার নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠকে এ দাবি জানায় জোটটি। একই দিনে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) গিয়ে ভোটের তারিখ আর না পেছানোর দাবি জানায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটি বলেছে, নির্বাচন এক ঘণ্টাও পেছানো যাবে না। উভয়পক্ষের দাবি শুনে কমিশন জানিয়েছে, জানুয়ারিতে নির্বাচন করতে হলে তা ইসির জন্য কষ্টদায়ক হয়ে যাবে।তবু ইসি বলেছে, কমিশন বসে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে এ বিষয়ে পরে জানাবে।
বৈঠকে বলা হয়, ৩০ ডিসেম্বর ভোটের সুবিধাজনক দিন নয়। কারণ এর পাঁচ দিন আগে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব বড়দিন। নির্বাচনের একদিন পরই থার্টিফাস্ট ডিসেম্বর এবং তার পরের দিনই ইংরেজি নববর্ষ। জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে নির্বাচন হলে সেটা বিদ্যমান আইন এবং সাংবিধানের সাথে কোনো রকম সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি করে না। এ ক্ষেত্রে স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে শেষ করা, ঐক্যফ্রন্টের গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীরা মুক্ত হয়ে নির্বাচনী কাজে যুক্ত হওয়া, বড় দিনের ছুটি কাটিয়ে দেশের খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের নির্বাচনী কর্মকান্ডে অংশ নেয়া এবং বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দেশে আসার ক্ষেত্রে সহজ পথ তৈরি হবে।
ইসির সঙ্গে দীর্ঘ দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সংসদ নির্বাচন পেছানো হবে কি না, বিষয়টি নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছে ঐক্যফ্রন্টকে।
ড. কামাল বলেন, আমরা সন্তুষ্ট হয়েছি যে, আমাদের প্রশ্নগুলো ওনারা (ইসি) ধৈর্য্য ধরে শুনেছেন এবং উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছেন। আমরা আশা করি যে, বাকী সময়ে নির্বাচন চলাকালীনও একই রকম সহযোগিতা আমরা পাব।
ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা কমিশনের কাছে তিন সপ্তাহ নির্বাচন পেছানোর দাবি জানিয়েছি। তারা বলেছেন, নিজেরা আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। ইসি আমাদের সব কথা শুনেছে। প্রতিবারই শোনে। তবে তারা কতটা পালন করবেন, তা জনগণ দেখবে। তিনি আরও বলেন, বিরোধী দলের নির্বাচনে টিকে থাকাটা ইসি ও সরকারের আচরণের ওপর নির্ভর করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ইভিএম ব্যবহার না করার দাবি জানিয়েছি। কমিশন বলেছে, তারা সিটি করপোরেশন এলাকাগুলোয় সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি এখনো চিন্তার মধ্যে রেখেছে। সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে ইসি বলেছে, তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। তবে প্রতি কেন্দ্রেই সেনা মোতায়েন করা যায় কিনা, তা ইসি বিবেচনা করবে।
উভয়পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, নির্বাচন কমিশন বলেছে জানুয়ারিতে অনেক বিষয় আছে, তার পরও বসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানাবে। সচিব আরও বলেন, ৩০ তারিখ নির্বাচন না হলে অনেকগুলো রি-ইলেকশন হতে পারে; গেজেটের ব্যাপার আছে, বিশ্ব ইজতেমা আছে। সব কিছু মিলিয়ে জানুয়ারিতে হলে নির্বাচনটা আমাদের জন্য অনেক কষ্টদায়ক হয়ে যাবে।