ঢাকা ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সুন্দরগঞ্জে ভুয়া জমিতে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান জাতীয় করণ, দুই-চালা টিন শেট ঘর বিদ্যালয়টি শিক্ষকের বাড়িতে নির্মাণ।

শেখ মোঃ সাইফুল ইসলাম গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১০ নং শান্তিরাম ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁচগাছি শান্তিরাম নামে ভুয়া গ্রাম ব্যবহার করে, কৌশলে ভাড়া জমিতে বিদ্যালয় চলমান রেখে, মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণের আওতায় আনার অভিযোগ মিলেছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শান্তিরাম ইউনিয়নের ঐ ভুয়া গ্রামে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০১ সালে দক্ষিণ পাঁচগাছি শান্তিরাম নব-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পাঁচগাছি শান্তিরাম গ্রামের আব্দুর সাত্তার মিয়ার জমির উপর নির্মাণ করা হয়।বিদ্যালয়টি নির্মাণের সময় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা জাহেদুল ইসলাম ও জমির মালিক আব্দর সাত্তারের মধ্যে একটি চুক্তিপত্র হয়।চুক্তিতে বলা হয়, বিদ্যালয়টি জাতীয় করণ হলে, জাহেদুল ও তাঁর নিজ স্ত্রী দুজনে শিক্ষক হিসেবে চাকুরী করবেন, অবশিষ্ট দুই শিক্ষক নিয়োগ দিবেন জমির মালিক আব্দুর সাত্তার মিয়া।২০০১ সাল হতে ২০১৩ সাল পর্যন্ত আব্দুর সাত্তার মিয়ার জমির উপর বিদ্যালয়টি নির্মাণ রেখে, বিদ্যালয়টি জাতীয় করণের আওতায় এনে, দুই শিক্ষক নিয়োগে ১৫ লক্ষ টাকা বানিজ্য করে, বিদ্যালয়টি জাহেদুল ইসলাম তাঁর নিজ বাড়িতে ৫ শতাংশ জমির উপর নির্মাণ করেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মানাস নদীর মাঝে জাহেদুল ইসলাম ভুয়া ৩৩ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে দেখিয়ে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণের আওতায় আনেন।ভাড়া জমিতে বিদ্যালয় ও ভুয়া জমির দলিল দেখিয়ে, সরেজমিন তদন্ত ছাড়ায় অর্থের বিনিময়ে বিদ্যালয়টিকে জাতীয় করণ করা হয়েছে বলে তাদের দাবি।

কৌশলে বিদ্যালয়ের বিল পার করে, ভাড়া জমি থেকে বিদ্যালয়টি সরিয়ে ন্যায় জাহেদুল ইসলাম।বর্তমান দক্ষিণ পাঁচগাছি শান্তিরাম নব-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জাতীয় করণের আওতায় এনে, ২০১৩ সাল থেকে চার শিক্ষকের বিল ছাড় দিয়েছেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন-উর রশিদ।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন-উর রশিদের সঙ্গে কথা হলে, তিনি সাংবাদিকদের জানান, ২০১৩ সালে দক্ষিণ পাঁচগাছি শান্তিরাম নব-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিল ছাড় দেয়া হলো, আপনারা কোথায় ছিলেন।

এখন আপনারা কেনো ঝামেলা করছেন, এক পর্যায়ে কথা কাটাকাটি হলে, শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন-উর রশিদ সাংবাদিক-কে বলেন কে-রে আপনি আপনার চেহারা দেখা দরকার।পরবর্তীতে অফিস চলাকালে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন-উর রশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হলে, তিনি ভুল স্বীকার করে বলেন, আমরা দক্ষিণ পাঁচগাছি শান্তিরাম নব-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিষয়ে নতুন করে তদন্ত পাঠাব।

দীর্ঘ ২ মাস পেড়িয়ে গেলেও মেলেনি সেই তদন্ত, হারুন-উর রশিদ ও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক জাহেদুল ইসলামের সাক্ষাৎকার নিয়ে কয়েকটি পত্র-পত্রিকায় নিউজ প্রকাশ করা হলে, জাহেদুলের পরিবার থেকে সাংবাদিক সাইফুল ইসলামের নিকট হুমকি আসতে থাকে।

হুমকির বিষয়টি পরবর্তী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন-উর রশিদ-কে জানানো হলে, তিনি আবারও বলেন, দ্রুত তদন্ত পাঠাচ্ছি।

ভুয়া জমি, ভুয়া গ্রাম ও বিদ্যালয় জাতীয় করণের পর বিদ্যালয়টি শিক্ষক জাহেদুল ইসলাম নিজ বাড়িতে নির্মাণ করে কার্যক্রম চালানোর বিষয়টি এখন পর্যন্ত তদন্ত হয়নি।একপর্যায়ে রংপুর বিভাগীয় কর্মকর্তাকে কয়েক বার এ বিষয়ে অবগত করা হলে, তিনি বলেন আমার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাঁড় করেন।

এ দিকে স্থানীয় এলাকাবাসী, শিক্ষা কর্মকর্তাদের উপর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছেন, এ এলাকায় কোনো প্রকার তদন্ত আসেনি, ১০০% সত্য বিদ্যালয়টির নামে যে সকল জমি দলিল করে দিয়েছেন, তা সব ভিত্তিহীন জমি বলে জোরালো দাবি তাদের।

তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সু-দৃষ্টি আকর্ষণ, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ পাঁচগাছি শান্তিরাম নামে যে বিদ্যালয়টি-কে জাতীয় করণের আওতায় আনা হয়েছে, তা নতুন করে আবারও তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হোক বলে, জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

সুন্দরগঞ্জে ভুয়া জমিতে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান জাতীয় করণ, দুই-চালা টিন শেট ঘর বিদ্যালয়টি শিক্ষকের বাড়িতে নির্মাণ।

আপডেট টাইম : ১১:১৩:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ ২০২১

শেখ মোঃ সাইফুল ইসলাম গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১০ নং শান্তিরাম ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁচগাছি শান্তিরাম নামে ভুয়া গ্রাম ব্যবহার করে, কৌশলে ভাড়া জমিতে বিদ্যালয় চলমান রেখে, মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণের আওতায় আনার অভিযোগ মিলেছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শান্তিরাম ইউনিয়নের ঐ ভুয়া গ্রামে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০১ সালে দক্ষিণ পাঁচগাছি শান্তিরাম নব-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পাঁচগাছি শান্তিরাম গ্রামের আব্দুর সাত্তার মিয়ার জমির উপর নির্মাণ করা হয়।বিদ্যালয়টি নির্মাণের সময় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা জাহেদুল ইসলাম ও জমির মালিক আব্দর সাত্তারের মধ্যে একটি চুক্তিপত্র হয়।চুক্তিতে বলা হয়, বিদ্যালয়টি জাতীয় করণ হলে, জাহেদুল ও তাঁর নিজ স্ত্রী দুজনে শিক্ষক হিসেবে চাকুরী করবেন, অবশিষ্ট দুই শিক্ষক নিয়োগ দিবেন জমির মালিক আব্দুর সাত্তার মিয়া।২০০১ সাল হতে ২০১৩ সাল পর্যন্ত আব্দুর সাত্তার মিয়ার জমির উপর বিদ্যালয়টি নির্মাণ রেখে, বিদ্যালয়টি জাতীয় করণের আওতায় এনে, দুই শিক্ষক নিয়োগে ১৫ লক্ষ টাকা বানিজ্য করে, বিদ্যালয়টি জাহেদুল ইসলাম তাঁর নিজ বাড়িতে ৫ শতাংশ জমির উপর নির্মাণ করেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মানাস নদীর মাঝে জাহেদুল ইসলাম ভুয়া ৩৩ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে দেখিয়ে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণের আওতায় আনেন।ভাড়া জমিতে বিদ্যালয় ও ভুয়া জমির দলিল দেখিয়ে, সরেজমিন তদন্ত ছাড়ায় অর্থের বিনিময়ে বিদ্যালয়টিকে জাতীয় করণ করা হয়েছে বলে তাদের দাবি।

কৌশলে বিদ্যালয়ের বিল পার করে, ভাড়া জমি থেকে বিদ্যালয়টি সরিয়ে ন্যায় জাহেদুল ইসলাম।বর্তমান দক্ষিণ পাঁচগাছি শান্তিরাম নব-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জাতীয় করণের আওতায় এনে, ২০১৩ সাল থেকে চার শিক্ষকের বিল ছাড় দিয়েছেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন-উর রশিদ।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন-উর রশিদের সঙ্গে কথা হলে, তিনি সাংবাদিকদের জানান, ২০১৩ সালে দক্ষিণ পাঁচগাছি শান্তিরাম নব-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিল ছাড় দেয়া হলো, আপনারা কোথায় ছিলেন।

এখন আপনারা কেনো ঝামেলা করছেন, এক পর্যায়ে কথা কাটাকাটি হলে, শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন-উর রশিদ সাংবাদিক-কে বলেন কে-রে আপনি আপনার চেহারা দেখা দরকার।পরবর্তীতে অফিস চলাকালে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন-উর রশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হলে, তিনি ভুল স্বীকার করে বলেন, আমরা দক্ষিণ পাঁচগাছি শান্তিরাম নব-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিষয়ে নতুন করে তদন্ত পাঠাব।

দীর্ঘ ২ মাস পেড়িয়ে গেলেও মেলেনি সেই তদন্ত, হারুন-উর রশিদ ও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক জাহেদুল ইসলামের সাক্ষাৎকার নিয়ে কয়েকটি পত্র-পত্রিকায় নিউজ প্রকাশ করা হলে, জাহেদুলের পরিবার থেকে সাংবাদিক সাইফুল ইসলামের নিকট হুমকি আসতে থাকে।

হুমকির বিষয়টি পরবর্তী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন-উর রশিদ-কে জানানো হলে, তিনি আবারও বলেন, দ্রুত তদন্ত পাঠাচ্ছি।

ভুয়া জমি, ভুয়া গ্রাম ও বিদ্যালয় জাতীয় করণের পর বিদ্যালয়টি শিক্ষক জাহেদুল ইসলাম নিজ বাড়িতে নির্মাণ করে কার্যক্রম চালানোর বিষয়টি এখন পর্যন্ত তদন্ত হয়নি।একপর্যায়ে রংপুর বিভাগীয় কর্মকর্তাকে কয়েক বার এ বিষয়ে অবগত করা হলে, তিনি বলেন আমার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাঁড় করেন।

এ দিকে স্থানীয় এলাকাবাসী, শিক্ষা কর্মকর্তাদের উপর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছেন, এ এলাকায় কোনো প্রকার তদন্ত আসেনি, ১০০% সত্য বিদ্যালয়টির নামে যে সকল জমি দলিল করে দিয়েছেন, তা সব ভিত্তিহীন জমি বলে জোরালো দাবি তাদের।

তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সু-দৃষ্টি আকর্ষণ, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ পাঁচগাছি শান্তিরাম নামে যে বিদ্যালয়টি-কে জাতীয় করণের আওতায় আনা হয়েছে, তা নতুন করে আবারও তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হোক বলে, জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।