স্পোর্টস ডেস্ক : পৃথিবীর মায়া ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেট কোচিংয়ের অগ্রদূত সৈয়দ আলতাফ হোসেন (ইন্না লিল্লাহে..রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। মঙ্গলবার মধ্যরাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান কোচ আলতাফ হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে বিসিবি।
আজ বুধবার বাদ যোহর মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা হবে নাজিম উদ্দিন রোডের হোসনি দালান মসজিদে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা বিকেল সাড়ে তিনটায়।
দেশের তরুণ প্রজন্মের অনেকে হয়তো তাকে চিনবেন না। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের নেপথ্যের এক নায়ক। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের টেস্ট স্কোয়াডে ডাক পাওয়া প্রথম বাঙালি ক্রিকেটার ছিলেন এই আলতাফ হোসেন। খেলোয়াড়ি জীবন শেষে ক্রিকেট কোচ হিসেবেও ছিলেন ভীষণ সফল।
খেলোয়াড়ি জীবনে ডানহাতি মিডিয়াম ফাস্ট বোলার ছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স, পিডব্লুডি, ইস্ট পাকিস্তান জিমখানা ও শান্তিনগরের হয়ে।
১৯৭৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জাতীয় ক্রিকেট কোচ হিসেবে আলতাফ হোসেন বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন। দেশের ক্রিকেট উন্নয়নে অবদান রাখায় ১৯৯৯ সালে তিনি পান জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। জাতীয় দলে খেলা অনেক তারকা ক্রিকেটার বিভিন্ন ক্লাব পর্যায়ে কোচ হিসেবে আলতাফ হোসেনের কাছ থেকে ক্রিকেটীয় দীক্ষা নিয়েছিলেন। ১৯৮২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বেশ লম্বা সময় ধরে তিনি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের কোচের দায়িত্বে ছিলেন।
জীবনের পুরোটা সময় ক্রিকেট নিয়েই কাটিয়ে দেন আলতাফ হোসেন। স্বাধীনতার আগে ১৯৬১ এবং ১৯৬২ সালে আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দলের হয়ে খেলেন তিনি। সেই সময়ে পাকিস্তানের জাতীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপ কায়েদ-ই-আযম ট্রফিতেও পূর্ব পাকিস্তানের হয়ে খেলেছিলেন এই গুনী ক্রিকেটার।
বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান টেস্ট স্কোয়াডে ডাক পাওয়া প্রথম খেলোয়াড়টি ছিলেন তিনি। ১৯৬৫ সালে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের বিপক্ষে পাকিস্তানের ঘোষিত ১৪ জনের দলে আলতাফ হোসেন সুযোগ পেয়েছিলেন। শুধু ক্রিকেটার বা ক্রিকেট কোচই নন, আলতাফ হোসেন পাকিস্তানের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আম্পায়ারের দায়িত্বও পালন করেছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট আম্পায়ার্স অ্যান্ড স্কোরার্স এসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য ছিলেন তিনি।