ঢাকা ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

কারাগার থেকেই নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার নির্দেশনা দেয় অধ্যক্ষ সিরাজ

আলোর জগত ডেস্ক:   ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে থাকা অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন অধ্যক্ষ (বর্তমানে বরখাস্ত) এস এম সিরাজ উদ দৌলা। দুই অনুগত ছাত্র নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম জেলখানায় সিরাজের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি নুসরাতকে চাপ দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করাতে বলেন। এতে কাজ না হলে তাকে পুড়িয়ে হত্যার পর ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালানোর নির্দেশনাও দেন তিনি। গতকাল রবিবার ফেনীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আলোচিত এ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সিরাজ এসব জানিয়েছেন। তাঁকে নিয়ে এ পর্যন্ত মামলার ৯ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিল।

আরো পড়ুন :   শ্রীলঙ্কায় নিষিদ্ধ হলো বোরকা

আরো পড়ুন :    মুম্বাইকে হারিয়ে টিকে রইলো কলকাতা

আরো পড়ুন :    পদ হারানোর ভয়ে শপথ নিচ্ছেন না বিএনপির মহাসচিব, বললেন হানিফ

সিরাজের জবানবন্দির সঙ্গে আগের আটজনের জবানবন্দির মিল আছে। এ ছাড়া মৃত্যুর আগে নুসরাত যে জবানবন্দি দিয়ে গেছে তার সঙ্গে আসামিদের স্বীকারোক্তির মিল আছে। নুসরাতের জবানবন্দি অনুযায়ী তাকে পরীক্ষার হল থেকে কৌশলে মাদরাসার প্রশাসনিক ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে প্রথমে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এতে রাজি না হলে সিরাজের অনুগত চারজন মিলে তাঁর গায়ে আগুন দেয়। এরপর সিরাজের সহযোগী, স্থানীয় পুলিশ ও কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালায়। এ হত্যাকাণ্ডে অর্থ লেনদেনের সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেছে বলেও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছে। বিষয়টি অনুসন্ধান করছে তারা।

গতকাল বিকেল ৩টা থেকে রাত প্রায় ৯টা পর্যন্ত একটানা ছয় ঘণ্টা সিরাজের জবানবন্দি রেকর্ড করেন ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় হাকিম মো. জাকির হোসাইন। রাতে এ বিষয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের অবহিত করেন মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল।

১০ এপ্রিল বুধবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে সাতদিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সিরাজ উদ দৌলাসহ নয় জন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন।

অপরাপর জবানবন্দি দেওয়া আসামিরা হলো মধ্যে নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মণি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ।
এর আগে চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ।

পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগিরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মারা যায় নুসরাত জাহান রাফি।

এ ঘটনায় তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামালা দায়ের করে। মামলার এজহারভূক্ত আটআসামিসহ এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

কারাগার থেকেই নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার নির্দেশনা দেয় অধ্যক্ষ সিরাজ

আপডেট টাইম : ০২:১২:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৯

আলোর জগত ডেস্ক:   ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে থাকা অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন অধ্যক্ষ (বর্তমানে বরখাস্ত) এস এম সিরাজ উদ দৌলা। দুই অনুগত ছাত্র নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম জেলখানায় সিরাজের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি নুসরাতকে চাপ দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করাতে বলেন। এতে কাজ না হলে তাকে পুড়িয়ে হত্যার পর ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালানোর নির্দেশনাও দেন তিনি। গতকাল রবিবার ফেনীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আলোচিত এ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সিরাজ এসব জানিয়েছেন। তাঁকে নিয়ে এ পর্যন্ত মামলার ৯ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিল।

আরো পড়ুন :   শ্রীলঙ্কায় নিষিদ্ধ হলো বোরকা

আরো পড়ুন :    মুম্বাইকে হারিয়ে টিকে রইলো কলকাতা

আরো পড়ুন :    পদ হারানোর ভয়ে শপথ নিচ্ছেন না বিএনপির মহাসচিব, বললেন হানিফ

সিরাজের জবানবন্দির সঙ্গে আগের আটজনের জবানবন্দির মিল আছে। এ ছাড়া মৃত্যুর আগে নুসরাত যে জবানবন্দি দিয়ে গেছে তার সঙ্গে আসামিদের স্বীকারোক্তির মিল আছে। নুসরাতের জবানবন্দি অনুযায়ী তাকে পরীক্ষার হল থেকে কৌশলে মাদরাসার প্রশাসনিক ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে প্রথমে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এতে রাজি না হলে সিরাজের অনুগত চারজন মিলে তাঁর গায়ে আগুন দেয়। এরপর সিরাজের সহযোগী, স্থানীয় পুলিশ ও কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালায়। এ হত্যাকাণ্ডে অর্থ লেনদেনের সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেছে বলেও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছে। বিষয়টি অনুসন্ধান করছে তারা।

গতকাল বিকেল ৩টা থেকে রাত প্রায় ৯টা পর্যন্ত একটানা ছয় ঘণ্টা সিরাজের জবানবন্দি রেকর্ড করেন ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় হাকিম মো. জাকির হোসাইন। রাতে এ বিষয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের অবহিত করেন মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল।

১০ এপ্রিল বুধবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে সাতদিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সিরাজ উদ দৌলাসহ নয় জন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন।

অপরাপর জবানবন্দি দেওয়া আসামিরা হলো মধ্যে নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মণি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ।
এর আগে চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ।

পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগিরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মারা যায় নুসরাত জাহান রাফি।

এ ঘটনায় তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামালা দায়ের করে। মামলার এজহারভূক্ত আটআসামিসহ এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।