সুশাসনের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচিত হয়ে আসছে ন্যাশনাল ব্যাংক (এনবিএল)। ঋণ প্রদান, আমানত সংরক্ষণে ব্যর্থতা এবং সুশাসনের ঘাটতির অভিযোগে আজ ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি গঠন করা হয়েছে নতুন পরিচালনা পর্ষদ।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
নতুন করে যে পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়েছে সেখানে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন ড. সৈয়দ ফরহাত আনোয়ার। যিনি এখন বর্তমানে মেঘনা ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া পরিচালক হিসেবে থাকছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম, সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল হোসেন, পারভিন হক সিকদার, উদ্যোক্তা পরিচালক খলিলুর রহমান, সিকদার ইনস্যুরেন্স কোম্পানির পক্ষে প্রতিনিধি পরিচালক মো. সফিকুর রহমান ও উদ্যোক্তা শেয়ারধারী হিসেবে পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, নতুন পরিচালনা পর্ষদে স্থান পেয়েছেন আগের পরিচালনা পরিষদের তিনজন পরিচালক। বাকি পরিচালকদের অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আগের পর্ষদে মোট পরিচালক সংখ্যা ছিল আটজন। তাদের মধ্যে থেকে নতুন পর্ষদে জায়গা পেয়েছেন তিনজন।
বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্তৃত্ব নিয়ে সিকদার পরিবারের মধ্যেই বিরোধ দেখা দেয়। প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের মেয়ে পারভীন হক সিকদার আছেন একদিকে, অন্যদিকে তার দুই ভাই রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদার। ভার্চুয়াল এজিএমে পাতানো ভোটের মাধ্যমে তাকে পর্ষদ থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে– এমন শঙ্কায় পারভীন হক সিকদারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ ডিসেম্বর নির্ধারিত বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন আদালত। এর আগে একই শঙ্কা জানিয়ে এজিএম বন্ধের উদ্যোগ নিতে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি লিখেছেন তিনি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সুপারিশে বৃহস্পতিবার ব্যাংকটির বর্তমান পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠনের আদেশ জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।