দলের ও নেতাদের ‘অবমূল্যান করায়’ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, ‘এমন অবস্থায় নির্বাচনে আমার অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়।’ বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাতে গুলশানের বাসভবনে জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
ব্রিফিংয়ে রওশন এরশাদ বলেন, ‘আমি দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। এবারও তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছি। নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব সহযোগিতা না করায় দলের পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের মনোনয়ন প্রদান করা হয়নি। এমতাবস্থায় দলের ও নেতাদের অবমূল্যায়নের কারণে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়।’
এর আগে, জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের জন্য ফাঁকা রাখা ময়মনসিংহ- ৪ আসনে প্রার্থী দেয় দলটি। আসনটিতে মনোনয়ন দেওয়া হয় ময়মনসিংহ জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা সরকারকে।
এ প্রসঙ্গে জাপার যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ম্যাডামের (রওশন এরশাদ) জন্য রাত ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়েছে। কেউ তার মনোনয়ন নিতে আসেননি। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) যেহেতু মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন, এ কারণে যেন আসন খালি না থাকে সেজন্য ময়মনসিংহ জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা সরকারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ম্যাডাম মনোনয়ন নিলে ওনাকে প্রত্যাহার করতে বলব।’
গত সোমবার জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৭টিতে প্রার্থী ঘোষণা করে। ফাঁকা রাখা আসনের একটি ছিল ময়মনসিংহ- ৪। এ আসন থেকে গত তিন টার্ম ভোট করে আসছেন রওশন এরশাদ।
এর আগে, রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ অভিযোগ করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেব? আমাদের তো তারা (জি এম কাদের) মনোনয়ন ফরম দিচ্ছে না। তাদের বাধার কারণে ম্যাডাম ও তার ছেলে এবং আমরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছি না।
রওশন এরশাদপন্থি ও জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি পাওয়া দলটির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙা বলেন, রওশন এরশাদের পক্ষ থেকে রংপুর- ১ আমার জন্য এবং রংপুর- ৩ থেকে সাদ এরশাদের জন্য মনোনয়ন চাওয়া হয়। একইসঙ্গে রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ, দলের ময়মনসিংহ জেলার সাবেক সভাপতি কে আর ইসলাম, সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুনুর রশিদ ও হাবিবুল্লাহ বেলালী এবং যুগ্ম মহাসচিব ইকবাল হোসেনের জন্য আসন চাওয়া হয়। কিন্তু তারা তিনজনকে আসন দিতে রাজি হয়। সেখানে আবার রংপুর- ৩ আসনে সাদ এরশাদকে দিতে রাজি হয়নি। তাহলে আমরা কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেব?