কক্সবাজারের রামু থানাধীন চা-বাগান থেকে দ্বিতীয় বাইপাস এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কে ইঞ্জিন/ব্যাটারি চালিত গাড়ি ডাকাতি চক্রের মূলহোতা সেলিম ও সালামতসহ চক্রের ৬ সদস্য কক্সবাজারের রামু, উখিয়া এবং কুতুপালং এলাকা থেকে র্যাব-১৫ কর্তৃক গ্রেফতার; ০৫টি থ্রি-হুইলার উদ্ধার।
র্যাব-১৫, কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় বিরাজমান নানাবিধ অপরাধ দমনে আন্তরিকতার সহিত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দায়িত্বাধীন এলাকার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের পাশে থেকে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি’সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার এবং চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিকৃত মালামাল উদ্ধারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর আভিযানিক দল জানতে পারে যে, গত ১৬ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ কক্সবাজারের রামু বাইপাস এলাকায় কিছু অস্ত্রধারী ডাকাত অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক একটি অটোরিকশা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুইজনকে শনাক্ত করা হয়। একপর্যায়ে নির্ভরযোগ্য তথ্যের প্রেক্ষিতে ২৫ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ১৯.৩০ ঘটিকার সময় র্যাব-১৫, ব্যাটালিয়ন সদরের একটি চৌকস আভিযানিক দল কক্সবাজার জেলার রামু এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে শনাক্তকৃত একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত ছিনতাইকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজারের উখিয়া ও কুতুপালং এলাকা থেকে চক্রটির মূলহোতা সেলিম ও সালামতসহ চক্রের চার সদস্য এবং যে গ্যারেজে ডাকাতিকৃত অটোগুলো বিক্রি করা হয় তার মালিক শফিককে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ০৫টি থ্রি-হুইলার।
গ্রেফতারকৃত ডাকাতি চক্রের সদস্যদের বিস্তারিত পরিচয়:
(১) মোঃ সেলিম (২৫), পিতা-মোঃ নুরুল আমিন, মাতা-মোছাঃ রেহেনা আক্তার, সাং-মধ্যম মেরুল্লা, ০২নং ওয়ার্ড, ফতেখারকুল ইউনিয়ন, থানা-রামু, জেলা-কক্সবাজার।
(২) ছালামত উল্লাহ (৪০), পিতা-মকসুদ মিয়া মিস্ত্রী, মাতা-জাহানারা বেগম, সাং-উত্তর মিঠাছড়ি, পাহাড়িয়া পাড়া, ০২নং ওয়ার্ড, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন, থানা-রামু, জেলা-কক্সবাজার।
(৩) কলিম উল্লাহ (২৫), পিতা-নুর মোহাম্মদ, মাতা-নুর জাহান, সাং-চা বাগান, পাহাড়িয়াপাড়া, ০২নং ওয়ার্ড, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন, থানা-রামু, জেলা-কক্সবাজার।
(৪) জাহিদুল ইসলাম (২৫), পিতা-মনির আহম্মদ, মাতা-সেনোয়ারা বেগম, সাং-রামু হাসপাতাল গেইট, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন, থানা-রামু, জেলা-কক্সবাজার।
(৫) রফিক উল্লাহ (২০), পিতা-নুর মোহাম্মদ, মাতা-নুর জাহান, সাং-চা বাগান, পাহাড়িয়াপাড়া, ০২নং ওয়ার্ড, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন, থানা-রামু, জেলা-কক্সবাজার।
(৬) শফিকুর রহমান (২৪), পিতা-জাকির হোসেন, মাতা-আয়েশা খাতুন, সাং-কুতুপালং পশ্চিম পাড়া, ০৯নং ওয়ার্ড, থানা- উখিয়া, জেলা-কক্সবাজার।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ইঞ্জিন/ব্যাটারি চালিত গাড়ি ডাকাতির সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র এবং দীর্ঘদিন ধরে এই কাজের সাথে জড়িত। আরও জানা যায়, গ্রেফতারকৃত চক্রটি প্রথমে একটি সিএনজি অটো/ব্যাটারি চালিত থ্রি হুইলার টার্গেট করে ২/৩ জন সদস্য যাত্রী সেজে রিজার্ভ ভাড়া করে নেয়। চক্রের বাকি ৪/৫ সদস্য তাদের পূর্ব নির্ধারিত স্থানের আশেপাশে অবস্থান করে থাকে। যাত্রী বেশে ডাকাত সদস্যরা নিয়মিত বাকি সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতে থাকে। যখনই তাদের নির্ধারিত স্থানে গাড়িটি আসে তখন যাত্রী বেশে থাকা একজন সদস্য প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার কথা বলে গাড়িটি থামায়। এ সুযোগে অন্য সদস্যরাও এগিয়ে আসে এবং সবাই মিলে গাড়ির ড্রাইভারকে অস্ত্রের মুখে মারধর/ছুরিকাঘাত করে গাড়ি ছিনিয়ে নিয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ড্রাইভাররা মারাত্মকভাবে আহত হয়, এমন কি নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে অনেক ক্ষেত্রে। গ্রেফতারকৃত অপরাধী চক্র ছিনতাইকৃত গাড়িগুলো কুতুপালং এ অবস্থিত শফিকের গ্যারেজে বিক্রি করে। গ্রেফতারকৃত শফিক সম্পর্কে মূলহোতা সালামতের শ্যালক। শফিক গাড়িগুলোর কাঠামো, রং এবং কাপড় পরিবর্তন করে বিক্রি করে দেয় বলে স্বীকার করে।
উদ্ধারকৃত ০৫টি থ্রি-হুইলারসহ গ্রেফতারকৃত ডাকাত চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে কক্সবাজার রামু থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।