সরিষাবাড়িতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে তিন বগি পুড়ে গেছে এবং ৪জন আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টায় আন্তঃনগর যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে সরিষাবাড়ী তারাকান্দির উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। এরপর রোববার মধ্যরাতে সরিষাবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনে এসে পৌঁছে তিন মিনিট অপেক্ষা করে ছেড়ে যাওয়ার প্রাক্কালে ট্রেনের শেষাংশের প্রথম শ্রেণি ‘ক’ বগিতে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়।
পরে এ সংবাদ সরিষাবাড়ী ফায়ার সার্ভিসকে অবগত করলে, তারা তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিরাপনের চেষ্টা করে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী চেষ্টার পর আগুন সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিস ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রুহুল আমিন কালবেলা কে বলেন, ট্রেনে আগুন লেগেছে শুনে আমরা ঘটনাস্থলে ১:২০ মিনিটে পৌঁছাই এবং আগুন সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। আগুনে একটি বগীর আংশিক আর দুইটি বগীর সম্পূর্ণ পড়ে গেছে।
রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী মাস্টার আব্দুস সালাম কালবেলা কে জানান রাত ১:০৭ মিনিটের সময় ট্রেনটি সরিষাবাড়ী স্টেশনে এসে পৌঁছায়। পরে তিন মিনিট অপেক্ষা করে ১:১০ মিনিটের সময় তারাকান্দির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। স্টেশন হতে ৫’শত গজ দূরে যেতে না যেতেই ট্রেনের পিছনের বগিতে আগুন দেখা যায়। পরে ট্রেনের নিরাপত্তা কর্মীরা ট্রেনের চেইন টেনে ট্রেনটি থামায় এবং যাত্রীদের সুরক্ষা করে।
তবে ট্রেনে থাকা যাত্রীরা আতঙ্কে ট্রেনের দরজা জানালা দিয়ে লাফিয়ে নামতে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছেন বলে জানান ট্রেনের নিরাপত্তা কর্মী পুলিশ নাজির উদ্দিন।
আহতদের ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক হামিদা আক্তার তিথি কালবেলা কে বলেন, ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চারজন নারী আহত হয়ে সরিষাবাড়ী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। তন্মধ্যে দুইজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন এবং বাকি দুজন হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ট্রেনে আগুন দেওয়ার বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম বিদ্যুৎ বলেন, যারা জাতীয় সম্পদ নষ্ট করে তারা দেশদ্রোহী, তারা জনগণের শত্রু। হরতাল অবরোধের নামে বিএনপি জামাত যদি এভাবে দেশের সম্পদ বিনষ্ট করে। তাহলে তাদেরকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা সহ সুষ্ঠু তদন্তির দাবি জানাই।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মুসফিকুর রহমান কালবেলা কে বলেন, মধ্যরাতে সংবাদ পাই যমুনা ট্রেনে আগুন লেগেছে। পরে ঘটনাস্থলে এসে দেখি দুটি বগিতে আগুন জ্বলছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিকভাবে ধারণ করা হচ্ছে, বিএনপি জামায়াতের দেওয়া ৪৮ঘন্টা হরতাল বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যেই বিএনপি সমর্থকেরা সম্ভবত এ কান্ড ঘটিয়েছে। আপাতত তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।