ভোরবেলা ঘাসের ওপর জমে থাকা শিশির জানান দিচ্ছে শীত এসে গেছে। ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এই তিন মাসকে মূলত শীতকাল ধরা হয়। তবে শহুরে পরিবেশে দেরিতে হলেও গ্রাম-গঞ্জে এবার নভেম্বরের মাঝামাঝি পাওয়া যাচ্ছে শীতের আমেজ। দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা পঞ্চগড়ে তাপমাত্রার পারদ ওঠানামা করছে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে।
গ্রামাঞ্চলে কাঠ-খড় পুড়িয়ে শীত নিবারণের দৃশ্য এখনো চোখে পড়ে। তবে জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবে এখন আবহাওয়া আর ঋতু বদলের বিচিত্রতা বোঝা ভার। এবার শীতের তীব্রতা বেশি হতে পারে, কমও হতে পারে নাতিশীতোষ্ণ এই অঞ্চলে।
গ্রাম-কিংবা শহর শীত এলেই পোশাক কেনার ধুম পড়ে যায়। লেপ-কাঁথা কিংবা সোয়েটার, চাদর জড়িয়ে যে যেভাবে পারে শীত নিবারণ করে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাই শীত নিবারণে ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আগেভাগেই দৌড়ঝাঁপ শুরু হয় পোশাক ব্যবসায়ীদের।
রাজধানী ঢাকায় বুড়ীগঙ্গা নদীর ওপারে দেশের অন্যতম বৃহৎ তৈরি পোশাক পল্লি। কেরানীগঞ্জের এ পোশাক পল্লি থেকে সারাদেশে ৭০ শতাংশ পোশাক সরবরাহ হয়। শীতের মৌসুম শুরু হতে না হতেই প্রতি বছর কেরানীগঞ্জের পোশাক পল্লিতে শুরু হয় ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক। জমে ওঠে বিকিকিনি।
কেরানীগঞ্জের পোশাক পল্লি ঘুরে দেখা গেছে, দিনভর কাজে ব্যস্ত শ্রমিক-মালিকরা। নানান ধরন আর রঙের শীতের বাহারি পোশাক তৈরি করছেন তারা। এখানকার তৈরি পোশাক চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
কেরানীগঞ্জের পোশাক পল্লিতে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় পোশাক কারখানা রয়েছে। পাইকারি পোশাক কেনাকাটার জন্য বিখ্যাত এ পল্লিতে সারাবছরই লেগে থাকে খুচরা ব্যবসায়ীদের ভিড়। তবে বছরের উৎসব ও শীত কেন্দ্র করে এ এলাকার কারখানা ও দোকানগুলোতে বেচাকেনা দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে এখন রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত। গত ২৯ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের পর থেকে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। এতে শীত মৌসুমের ব্যবসা-বাণিজ্যে লোকসানের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে নাস্তানাবুদ অবস্থা সাধারণ মানুষের। সেটিরও প্রভাব পড়বে পোশাকের ব্যবসায় সেই শঙ্কাও রয়েছে তাদের।