১২:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পোশাক কারখানার নিরাপত্তায় মাঠে বিজিবি

  • অনলাইন ডেস্ক:
  • Update Time : ১১:৫৭:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০২৩
  • ১৬০ Time View

চলমান অবরোধ কর্মসূচির তৃতীয় দিনে এবার ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশের এলাকায় পোশাক কারখানার নিরাপত্তায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকালে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের এলাকায় গার্মেন্টসের নিরাপত্তা জোরদারে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আশুলিয়া, সাভার, মিরপুর, রামপুরা, আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গি ও গাজীপুর-কোনাবাড়ী এলাকার গার্মেন্টসগুলোর নিরাপত্তা জোরদারে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিকরা গত এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করছে। রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এর মধ্যে বুধবার (১ নভেম্বর) মিরপুরে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। পরে তিনি বাধ্য হয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।

এদিকে, আন্দোলনের নামে দেশে তৈরি পোশাক খাতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে বুধবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে শিল্প মালিকদের বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবির সঙ্গে মালিকরাও একমত পোষণ করেছেন।

এ দিনই মজুরি বোর্ডের সভা শেষে জানানো হয়, শ্রমিকদের দাবি আমলে নিয়েই বাড়ানো হবে তৈরি পোশাক শিল্পের সর্বনিম্ন মজুরি।

একদিকে সর্বনিম্ন মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চলছে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, অন্যদিকে অধিকার আদায়ে আন্দোলন-সংগ্রামের নামে পোশাক কারখানায় করা হচ্ছে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর, ছড়ানো হচ্ছে সহিংসতা।

এমন পরিস্থিতিতে বুধবার দুপুরে অনুষ্ঠিত পোশাক খাতে সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণে ৫ম সভা শেষে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা জানান, তাদের দেওয়া প্রস্তাবনা- ১০ হাজার ৪০০ টাকার বেশি বেতন পাবেন শ্রমিকরা। যা কার্যকর হবে আগামী মাস থেকে।

এদিন বিকেলেই পোশাক শিল্প মালিকদের সচিবালয়ে বৈঠকে ডাকেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম, বিজিএমইএ-বিকেএমইএ প্রেসিডেন্টসহ খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

দেশের প্রধান রপ্তানিমুখী শিল্পের বর্তমান অস্থির পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েক ঘণ্টার আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নভেম্বর মাসের মধ্যে নূন্যতম মজুরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিবো। নভেম্বরের মধ্যে এটা হবে, ১ ডিসেম্বর এটা কার্যকর হবে। মালিকরাও মজুরি বৃদ্ধিতে রাজি হয়েছেন। তাদের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। নভেম্বর মাসের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। জানুয়ারিতে নতুন স্কেলে মজুরি পাবে।

সালমান এফ রহমান হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, শ্রমিকদের স্বার্থকে সামনে রেখেই বাড়ানো হবে তাদের বেতন। তবে, এ শিল্পকে যারা অস্থিতিশীল করেছে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। যারা ভাঙচুর করেছে, ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগিয়েছে তাদেরকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। শ্রমিকদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, আমি আহ্বান জানাবো আমাদের শ্রমিক ভাইবোনদেরকে তারা যেন সবাই কাজে যোগদান করেন। শ্রমিকদের স্বার্থ বিরোধী কিছু হবে না।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md. Mofajjal

পোশাক কারখানার নিরাপত্তায় মাঠে বিজিবি

Update Time : ১১:৫৭:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০২৩

চলমান অবরোধ কর্মসূচির তৃতীয় দিনে এবার ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশের এলাকায় পোশাক কারখানার নিরাপত্তায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকালে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের এলাকায় গার্মেন্টসের নিরাপত্তা জোরদারে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আশুলিয়া, সাভার, মিরপুর, রামপুরা, আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গি ও গাজীপুর-কোনাবাড়ী এলাকার গার্মেন্টসগুলোর নিরাপত্তা জোরদারে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিকরা গত এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করছে। রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এর মধ্যে বুধবার (১ নভেম্বর) মিরপুরে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। পরে তিনি বাধ্য হয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।

এদিকে, আন্দোলনের নামে দেশে তৈরি পোশাক খাতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে বুধবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে শিল্প মালিকদের বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবির সঙ্গে মালিকরাও একমত পোষণ করেছেন।

এ দিনই মজুরি বোর্ডের সভা শেষে জানানো হয়, শ্রমিকদের দাবি আমলে নিয়েই বাড়ানো হবে তৈরি পোশাক শিল্পের সর্বনিম্ন মজুরি।

একদিকে সর্বনিম্ন মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চলছে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, অন্যদিকে অধিকার আদায়ে আন্দোলন-সংগ্রামের নামে পোশাক কারখানায় করা হচ্ছে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর, ছড়ানো হচ্ছে সহিংসতা।

এমন পরিস্থিতিতে বুধবার দুপুরে অনুষ্ঠিত পোশাক খাতে সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণে ৫ম সভা শেষে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা জানান, তাদের দেওয়া প্রস্তাবনা- ১০ হাজার ৪০০ টাকার বেশি বেতন পাবেন শ্রমিকরা। যা কার্যকর হবে আগামী মাস থেকে।

এদিন বিকেলেই পোশাক শিল্প মালিকদের সচিবালয়ে বৈঠকে ডাকেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম, বিজিএমইএ-বিকেএমইএ প্রেসিডেন্টসহ খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

দেশের প্রধান রপ্তানিমুখী শিল্পের বর্তমান অস্থির পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েক ঘণ্টার আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নভেম্বর মাসের মধ্যে নূন্যতম মজুরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিবো। নভেম্বরের মধ্যে এটা হবে, ১ ডিসেম্বর এটা কার্যকর হবে। মালিকরাও মজুরি বৃদ্ধিতে রাজি হয়েছেন। তাদের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। নভেম্বর মাসের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। জানুয়ারিতে নতুন স্কেলে মজুরি পাবে।

সালমান এফ রহমান হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, শ্রমিকদের স্বার্থকে সামনে রেখেই বাড়ানো হবে তাদের বেতন। তবে, এ শিল্পকে যারা অস্থিতিশীল করেছে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। যারা ভাঙচুর করেছে, ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগিয়েছে তাদেরকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। শ্রমিকদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, আমি আহ্বান জানাবো আমাদের শ্রমিক ভাইবোনদেরকে তারা যেন সবাই কাজে যোগদান করেন। শ্রমিকদের স্বার্থ বিরোধী কিছু হবে না।