অনলাইন ডেস্ক: কয়েক ধাপে দালালদের ৩১ লাখ টাকা দেওয়া হলেও গত এক মাস ধরে কোনো খোঁজ নেই মাদারীপুরের শাওন হাওলাদারের। অবৈধ পথে ইউরোপ যাত্রা করতে গিয়ে গত দেড় বছর ধরে লিবিয়ায় একটি চক্রের হাতে বন্দী আছেন তিনি।
ভুক্তভোগী শাওন হাওলাদার মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের হাজির হাওলা গ্রামের মো. মোস্তফা হাওলাদারের ছেলে। জানা গেছে, ২০২২ সালের মার্চে ইতালি যাওয়ার জন্য একই উপজেলার ছয়না গ্রামের দালাল শাহ আলম মৃধার সঙ্গে ১২ লাখ ৭০ হাজার টাকায় চুক্তি করে শাওনের পরিবার। পরে শাওন লিবিয়ায় পৌঁছালে সেখানকার একটি চক্র তাকে বন্দী করে। তারা শাওনের পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে বলেন, শাওনকে গেইম ঘরে রাখা হয়েছে। তাই গেইমে উঠানোর জন্য ৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে। তাদের কথামতো ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয়। এরপর শাওনকে কয়েকবার লিবিয়ার মাফিয়াদের হাতে কেনা-বেচা হয়। একাধিকবার পুলিশের হাতে বন্দীও হতে হয়েছে তাকে। এরপর আবারও শাওনের পরিবারের কাছে ১১ লাখ টাকা চান চক্রের সদস্যরা।
এরপর ফোন দিয়ে শাওন তার পরিবারকে জানান, যেভাবেই হোক ১১ লাখ টাকা জোগাড় করে দিতে হবে। তা না হলে চক্রের সদস্যরা তাকে মেরে ফেলবে।
এরপর শাওনের মা জমি বিক্রি করে ১১ লাখ টাকা দেন। এভাবেই কয়েক দফায় তারা ৩১ লাখ টাকা দিয়েছেন। সর্বশেষ গত এক মাস আগে শাওনের সঙ্গে তার পরিবারের যোগাযোগ হয়েছে। এরপর আর কোন যোগাযোগ করেননি শাওন।
এ ঘটনায় গত ১৬ অক্টোবর শাওনের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে শাহ আলম মৃধাসহ পাঁচজনের নামে আদালতে মামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন শাহ আলম মৃধার স্ত্রী মাকসুদা বেগম (৪৫), ছেলে তুহিন মৃধা (২৮), আরেক ছেলে তুষার মৃধা (২৫) ও হাজীর হাওলা গ্রামের আবু কালাম তালুকদার (৪৫)। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন আছে।
নিখোঁজ শাওনের স্ত্রী ইতি আক্তার বলেন, লিবিয়ায় মাফিয়ারা আমার স্বামীকে শুধু কেনা-বেচা করেছে। নির্মমভাবে মারধরও করেছে। তাকে বাঁচাতে আমরা সবকিছু বিক্রি করে এ পর্যন্ত ৩১ লাখ টাকা দিয়েছি। গত এক মাস ধরে তার কোনো সন্ধান নেই।
মাদারীপুর সদর থানার ওসি এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, আমি থানায় নতুন যোগ দিয়েছি। তাই এ ব্যাপারটা আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে পরে জানাতে পারবো।