জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
দেশের অগ্রযাত্রা গতিরোধে বহির্বিশ্বে অপপ্রচার চালাচ্ছে দুষ্টচক্র
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের ইতিবাচক অগ্রযাত্রা গতিরোধ করতে বহির্বিশ্বে দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে একটি দুষ্টচক্র।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর এ সংক্রান্ত প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অবস্থান করায় সংসদে তার বক্তব্য লিখিত আকারে পেশ করা হয়। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, পদ্মা রেল লিংকসহ বাস্তবায়িত ও বাস্তবায়নাধীন মেগা প্রকল্পের নাম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব অবকাঠামো বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার মুকুটে নতুন নতুন স্বর্ণ পালক যুক্ত করেছে। বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে দেশের জনগণ বহুমুখী অর্থনৈতিক সুফল পাচ্ছেন।
বর্তমান সরকার বাংলাদেশ ও দেশের জনগণের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, বাংলাদেশের ইতিবাচক অগ্রযাত্রায় গতিরোধ করতে বহির্বিশ্বে ও বাংলাদেশে অপপ্রচারকারীদের একটি দুষ্টচক্র সরকার এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এ সকল দুষ্টচক্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থা কাজ করছে।
তিনি জানান, দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার মোকাবিলাসহ বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এবং অনলাইন মিডিয়াতে নিয়মিতভাবে তথ্যবহুল ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ, প্রবন্ধ ও নিবন্ধ প্রকাশের এবং কনটেন্ট প্রচারের বিষয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিদেশের বাংলাদেশ মিশন নানারকম সভা বা আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সচেতন করছে। একইসঙ্গে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও হীন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে প্রবাসে জনমত গঠন করা হচ্ছে।
ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে চলেছে বলেও উল্লেখ করেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, যে সমস্ত অসত্য বা বিকৃত খবর ও গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়, সেগুলো চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেমন- ফেসবুক পেজ ও টুইটারের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে আসা অতিথিদের সঙ্গে আলোচনা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে মিডিয়াসহ বিশ্ববাসীকে অবহিত করছে বলেও জানান সরকার প্রধান।
প্রধানমন্ত্রী জানান, গুজব ও অপপ্রচার রোধে ১৫টি প্রতিবেদন, ৭২টি তথ্যবিবরণী এবং ১টি প্রেসনোট জারিসহ ৭টি ফিচার তথ্য অধিদফতর থেকে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ করা হয়েছে।
সরকারি দলের এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পর বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ সারাদেশের অর্থনীতির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এ টানেল যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পর আনোয়ারা প্রান্তে আবাসন ও পর্যটন শিল্পের বিকাশ, কলকাখানা স্থাপন ও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে আবর্তিত ব্লু ইকোনমির নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। চট্টগ্রামে ওয়ান সিটি টু মডেল টাউন-এ গড়ে উঠবে।
প্রসঙ্গত, ইউরোপীয় কমিশন (ইসি) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভনের আমন্ত্রণে ২৫ ও ২৬ অক্টোবর ব্রাসেলসে চলমান ‘গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে’ যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৭ অক্টোবর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।