সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটিকে সরকার বিরোধী চক্রান্তের অংশ হিসেবে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বিএনপিপন্থী বিজ্ঞানী ড.এস এম মনিরুজ্জামানের দৃশ্যমান তৎপরতা প্রতিষ্ঠানটির সবাইকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। তার বিরুদ্ধে একাদিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে গত বৃহস্পতিবার ফরিদপুরে বদলি করা হয়েছে।
কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) দেশের একটি প্রাচীনতম সমৃদ্ধ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি রাজধানী ঢাকার জাতীয় সংসদ ভবনের পাশে দেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর জায়গায় অবস্থিত। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানটিকে কেন্দ্র করে একটি চক্র বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র এবং অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এসব অপতৎপরতার নেতৃত্ব দিচ্ছেন কৃষিবিদ ড. এস এম মনিরুজ্জামান।
গত বুধবার (১৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের একাধিক কৃষি বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও এই কর্মকতার বিরুদ্ধে করা একাধিক অভিযোগের কপি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মতে, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট এর পিটিসি বিভাগে কর্মরত প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. এস এম মনিরুজ্জামান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পদধারী নেতা ছিলেন। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে তিনি বিএনপিপন্থী একজন কর্মকর্তা হিসেবে সুপরিচিত। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে একটি নিয়োগ সিন্ডিকেট কার্যকর আছে। সম্প্রতি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বাণিজ্যের তার একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়, যা মিডিয়ায় প্রচারিত হয়। ওই রেকর্ডে পাট গবেষণার ড. এস এম মনিরুজ্জামানের নিয়োগ বাণিজ্য ও আর্থিক কেলেঙ্কারীর কথা উল্লেখ রয়েছে।
এছাড়াও তার একই বিভাগের অফিস সহায়ক রত্না বেগমের সাথে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা গেছে। পিটিসি বিভাগে অফিস চলাকালীন সময়ে রত্না বেগমকে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. এস এম মনিরুজ্জামানের অফিস কক্ষে প্রাইভেট চেম্বার বানিয়ে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করতে দেখা গেছে। পরবর্তী সময়ে রত্না বেগম তাড়াহুড়া করে বের হলে তার শরীরের কাপড় বেশিরভাগ সময়ে অসংলগ্ন থাকে। বেশ কয়েকদিন আগে মনিরুজ্জামানের স্ত্রী মারা গেলে অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি বেশি বেশি ধরা পড়ছে।
উল্লেখ্য ,রত্না বেগম পলাশ ভবন ১২৯/৪ নং বাসাটিতে বসবাস করছেন। বিগত কয়েক বছরে একাধিক বার দেখা গেছে, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. এস এম মনিরুজ্জামান রত্না বেগমের পলাশ ভবন ১২৯/৪ নং বাসায় প্রবেশ করেছেন এবং দীর্ঘ সময় পর বাসা থেকে বের হয়েছেন। এমনকি বেশিরভাগ সময় এ ঘটনা রাতেই ঘটেছে।
এরকম কর্মকাণ্ড কারো চোখে ধরা পড়লে উনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে এবং নিজে উপস্থিত হয়ে অস্ত্র দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি এবং বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়েছেন।
প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. এস এম মনিরুজ্জামান এক সময়ে বিএনপির অস্ত্রধারী ছাত্র রাজনীতি করতেন। এমনকি বর্তমান সময়ে সুযোগ পেলে বিএনপির মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেন, যা সরকারি চাকরির আইন পরিপন্থী। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য বিএনপির রাজনীতি সক্রিয় করে তুলছেন।
অফিসের কেউ প্রতিবাদ করলে উনি বিভিন্ন সময়ে অস্ত্রের হুমকি দেখান। এমনকি মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে। পুলিশের মাধ্যমে বিভিন্ন নেশা সামগ্রী দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার হুমকিও দিয়ে থাকেন। এরকম ভয় ভীতির কারণে বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী অসহায় হয়ে পড়েছেন।
এছাড়াও, সম্প্রতি বিএনপির একটি কেন্দ্রীয় প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে আসা ১২/১৫ জন সন্ত্রাসীকে বিএনপির ব্যানার প্ল্যাকার্ডসহ বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের গেস্ট হাউজের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা মনিরুজ্জামান নিজস্ব ক্ষমতাবলে আশ্রয় দেন। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হলে তাকে দায়িত্ব থেকে তৎক্ষণাৎ সরিয়ে দেয় পাট গবেষণার প্রশাসন। এসব বিষয়ে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।