স্টাফ রিপোর্টার
ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে বার বার নিরীহ মানুষের উপর হামলা এবং মারধরসহ নানা অভিযোগে বিঁধেছেন ফজর আলীর ছেলে জসিমউদ্দিন অরফে কালা জসিম সহ তার সঙ্গীরা।
ফতুল্লার বক্তাবলীর বার্জ ভাড়া এনে ভাড়ার টাকা দেয়ার পরিবর্তে উল্টো মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ফজর আলীর ছেলে জসিমউদ্দিন অরফে কালা জসিম সহ তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে।
এর আগেও জসিমউদ্দিন ত্তরফে কালা জসিম বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজি সহ অসংখ্য অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। এবার তার বিরুদ্ধে অন্যরকম ভাবে অভিযোগ করে ঢাকার খিলগাঁও এলাকার কাঞ্চন আলী হাওলাদারের ছেলে মো.বাদল, জসিমউদ্দিন সহ তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মো. বাদল জনৈক মোঃ আলাউদ্দিন শেখের নিকট হতে একটি বার্জ ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন ছোট ছোট প্রজেক্টে সাব ভাড়া দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। ১নং বিবাদী মো.জসিমউদ্দিন গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর মাসিক ৩ লাখ টাকা ভাড়া চুক্তিপত্র সম্পাদন পূর্বক এনআরবিসি ব্যাংক পঞ্চবটি শাখার ইস্যুকৃত ৪ টি চেক প্রদান পূর্বক ভাড়া নেয়। ভাড়া নেওয়ার সময় জসিমউদ্দিনের সাথে কথা হয়েছিল যে, প্রতি মাসে ভাড়া প্রদানের পর একটি করে চেক ফেরত নিয়ে যাবে। কিন্তু ভাড়া নেওয়ার পর থেকে জসিমউদ্দিন অদ্য পর্যন্ত কোন প্রকার ভাড়া প্রদান না করে উল্টো বিভিন্ন প্রকার টালবাহানা প্রদর্শন করে আসছে বলে অভিযোগ করেন বাদল। এরই প্রেক্ষিতে জসিমউদ্দিন কাছে ৩ মাসের ভাড়া জমে গেলে বক্তাবলী ফেরিঘাটের দক্ষিণ পাশের এলাকায় গিয়ে বিবাদীর নিকট বকেয়া ভাড়া চাইলে অভিযোগকারী বাদলকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে হুমকি দেয়। ২৪ মার্চ দুপুর ১২টায় আলাউদ্দিন শেখের কাছে গেলে জসিমউদ্দিন সহ তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র এবং মোটা কাঠের ডাসা নিয়া অতর্কিত হামলা শুরু করে, মারপিট করে নগদ আড়াই লাখ টাকা ছিনেয়ে নেয়।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান জানান, সম্প্রতি একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে, সেটি তদন্ত চলছে। তদন্ত মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে মামলায় জর্জরিত হলেও গ্রেফতারে তাড়া নেই পুলিশের বলছে অভিযোগকারীগন।
একের পর মামলা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ থাকে নীরব। এর কারণ কি তা জানতে গেলে দেখা যায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে মামলা রয়েছে জসিমউদ্দিন ওরফে ডাকাত (কালা জসিম) এর বিরুদ্ধে।
হাজারও অভিযোগ থাকার পরেও পুলিশের ধরা ছোয়ার বাহিরে থাকে ডাকাত কালা জসিম। নৌপথে লঞ্চে ডাকাতি করার একাধিক চলমান মামলাও রয়েছে ডাকাত কালা জসিম ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে। হত্যা, ডাকাতি বেপরোয়া দখলবাজি,চাঁদাবাজি সহ জসিম এর বিরুদ্ধে রয়েছে অর্ন্তহীন অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, ডাকাত কালা জসিম এক সময় নারায়ণগঞ্জ এলাকায় না খেয়ে দিন কাটতো। হটাত পালটে যায় তার জীবন। আসতে আসতে শুরু করে তার অপরাধ জগতের নতুন এক সামরাজ্য। সন্ধ্যার পর এলাকার বখাটেদের নিয়ে চুরি ছিনতাইয়ের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ছোট খাটো অপরাধ করতে করতে এক সময় যোগ দেয় স্থানীয় বখাটে গ্রুপের টিমদের সাথে। সখ্যতা তৈরি করে সেই সময়ের বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের সাথে। সেই থেকে শুরু হয় ডাকাত কালা জসিম এর সন্ত্রাসী জীবন। গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান ডাকাত কালা জসিম ধীরে ধীরে হতে থাকে অগাধ সম্পত্তির মালিক।
যখন যে জমি, বাড়ি, গাড়ি তার ভালো লাগে সেটাই তার দখলে চলে আসে ক্ষমতার প্রভাবে। দিনদিন বৃদ্ধি পেতে থাকে ডাকাত কালা জসিমের বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ড। আর এ অপরাধ কর্মকান্ড থেকে রেহায় পাইনি স্থানী সাধারণ জনতা ও ব্যবসায়ীরাও।
আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন ডাকাত কালা জসিম। এমনকি নিজের অপরাধ লুকাতে ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন মহলে রাজনৈতিকদের পরিচয়, কখনো ছাত্রলীগ কখনো আওয়ামী লীগ আবার কখনো যুবলীগ এমন কি অন্যের প্রতিষ্ঠান নিজের বলেও পরিচয় দিতে দ্বিধাবোধ করেন না তিনি।
স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন জসিম একাধিক ডাকাতি মামলার আসামি হওয়ার পরেও সে মাঝে মাঝে দলীয় ব্যানার ব্যবহার করেন। অনুসন্ধানে দেখা যায়, চাঁদপুরের বাবলু ডাকাত ও নারায়ণগঞ্জের রমজান ডাকাত আর তাদের গটফাদার এই সেই জসিম ডাকাত তার বিরুদ্ধে রয়েছে ট্রলার ডাকাতি সহ অসংখ্য অভিযোগ। তারপরও পুলিশ কেন ধরছে না। তার কারনে অনেক ব্যবসায়ীরা এলাকাও ছেড়েছেন ইতিমধ্যে তার জুলুম দিন দিন বেড়েই চলেছে।
অনুসন্ধান করতে গিয়ে উঠে আসে মো.বাদল জনৈক মোঃ আলাউদ্দিন শেখ এর ঘটনা। মো.বাদল বলেন জনৈক মোঃ আলাউদ্দিন শেখ এর নিকট হতে একটি বার্জ ভাড়া নিয়ে তা বিভিন্ন ছোট ছোট প্রজেক্টে সাব ভাড়া দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে। জসিম ওরফে ডাকাত কালা জসিম বিগত ১৯/১২/২০২১ তারিখে আমার আওতাধীন বার্জ খানা মাসিক ৩,০০,০০০/- টাকা ভাড়া চুক্তিপত্র সম্পাদন পূর্বক এন.আর.বি.সি ব্যাংক পঞ্চবটি শাখার ইস্যুকৃত ৪ টি চেক প্রদান পূর্বক ভাড়া নেয়। ভাড়া নেওয়ার সময় তার সাথে কথা ছিল যে, প্রতি মাসে ভাড়া দেওয়ার পর একটি করে চেক ফেরৎ নিয়া যাবে। কিন্তু ভাড়া নেওয়ার পর থেকে এই পর্যন্ত কোন প্রকার ভাড়া দেয় নাই, ভাড়া চাইতে গেলে উল্টো বিভিন্ন প্রকার তালবাহানা ও হুমকি দিতে থাকে। এরই প্রেক্ষিতে জসিমের কাছে ৩ মাসের ভাড়া বকেয়া হয়ে যায়। বক্তাবলী ফেরিঘাটের দক্ষিণ পার্শ্বস্থ এলাকায় তার থেকে বকেয়া ভাড়া চাইলে জসিম সহ তার সহযোগিরা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করতঃ আমার ভাড়ার টাকা পরিশোধ করবে না বরং আর তার কাছে টাকা চাইলে আমাকে এলাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেয়।
অভিযোগে বাদল আরও বলেন গত বৃহস্পতিবার ( ২৪ মার্চ ) দুপুর ১২ টার সময় আমি সহ জনৈক মোঃ আলাউদ্দিন শেখ সহ ২জন প্রতিনিধি নিয়া জসিমের কাছে পাওনা ভাড়ার টাকা চাহিতে গেলে সে কোন প্রকার উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকে, এক পর্যায়ে কোন কিছু বুঝার আগেই জসিম ও তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র এবং মোটা কাঠের ডাসা নিয়া আমাদের উপর অতর্কিত হামলা শুরু করে। এক পর্যায়ে আমার অধীনে থাকা একজন ষ্টাফ কে এলো পাথারি মারপিট করে এবং তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা জখম করে এ বিষয়ে আমি ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ।
ছিচকে চোর থেকে রাঘব বোয়াল। ফুটপাত থেকে উচ্চমানের ব্যবসায়ী, কেউই রেহাই পাচ্ছে না ডাকাত কালা জসিম এর হিংস্র থাবা থেকে। সবসময় তার স্বশস্ত্র বাহিনী কৌশলে অবস্থান করছেন তার চারপাশে।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান জানান, সম্প্রতি একটী অভিযোগ পাওয়া গেছে, সেটি তদন্ত চলছে। তদন্ত মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।