ঢাকা ০৪:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

জীবনের ২৬ টি বছর কারাভোগের পর মঠবাড়িয়ার সেই পিয়ারা পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর ঘর

মো. সাইদুর রহমান,মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর)

 

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় চাচাতো বোনকে হত্যার দায়ে জীবনের ২৬ টি বছর যাবজ্জীবন সাজা ভোগকারী সেই পিয়ারা আক্তার (৩৮) পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী উপহার ঘর ও তার বৃদ্ধা মা পাবেন বয়স্কভাতা। এ উদ্যোগ নিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসন। বরিশাল জেলা প্রশাসনের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পিয়ারা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ছোট হারজি গ্রামের মৃত আনিস মৃধার মেয়ে।
জানাগেছে, চাচাতো বোন শিশু মেহজাবীনকে হত্যার অভিযোগে ১৯৯৫ সালে গ্রেফতার করা হয় সেই সময়ে ১২ বছরের পিয়ারা আক্তারকে। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ এপ্রিল হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন করাদন্ড দেয় আদালত। এরপর বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। পিয়ারা দীর্ঘ ২৬ বছর কারাভোগের পর চলতি বছরের ১০ জুন বরিশালের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জসীম উদ্দিন হায়দারের বিশেষ বিবেচনায় চার বছর আগে মুক্তি পান। এরপরই পিয়ারা আক্তার মঠবাড়িয়ার ছোট হারজি গ্রামের ৮০ বছরের বৃদ্ধা মা ছফুরা বেগমের সাথে দেখা করার জন্য বাড়িতে আসেন।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ জানান, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সর্বাত্মক লকডাউন শেষ হলে ঘর ও বয়স্ক ভাতার কার্ড পিয়ারার কাছে হস্তান্তর করা হবে। তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে জেলা প্রশাসন থেকে সার্বিক সহায়তা করা হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, পিয়ারা তার মঠবাড়িয়ার বাড়িতে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। এসময় জেলা প্রশাসক যাতায়াতের খরচ দিয়ে দিয়েছেন। পিয়ারা যেন আয় করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন সেজন্য ইতোমধ্যে সেলাই প্রশিক্ষণ ও মেশিন দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কারামুক্তি লাভের পর পরই জেলা প্রশাসন থেকে পিয়ারা আক্তারকে চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সে অনুসারে একটি উৎপাদন কারখানায় থাকা, খাওয়াসহ মাসিক ৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পিয়ারা আক্তার আগ্রহ প্রকাশ করেননি।
পিয়ারা আক্তার জানান, জেল থেকে বের হওয়ার পর তার মানসিক অবস্থা ভালো নেই। দীর্ঘ ২৬ বছর কারাভোগে শারীরিক অবস্থাও ভালো না। একটু সুস্থ হলে তবেই চাকরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে। পিয়ারা আপতত তার মায়ের সাথে থাকতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর ও মায়ের বয়স্ক ভাতা পেলে বৃদ্ধ মাকে নিয়ে বাকী জীবন স্বাভাবিকভাবে কাটাতে পারব বলে জানন।

 

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

জীবনের ২৬ টি বছর কারাভোগের পর মঠবাড়িয়ার সেই পিয়ারা পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর ঘর

আপডেট টাইম : ০৯:৫৯:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুলাই ২০২১

মো. সাইদুর রহমান,মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর)

 

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় চাচাতো বোনকে হত্যার দায়ে জীবনের ২৬ টি বছর যাবজ্জীবন সাজা ভোগকারী সেই পিয়ারা আক্তার (৩৮) পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী উপহার ঘর ও তার বৃদ্ধা মা পাবেন বয়স্কভাতা। এ উদ্যোগ নিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসন। বরিশাল জেলা প্রশাসনের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পিয়ারা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ছোট হারজি গ্রামের মৃত আনিস মৃধার মেয়ে।
জানাগেছে, চাচাতো বোন শিশু মেহজাবীনকে হত্যার অভিযোগে ১৯৯৫ সালে গ্রেফতার করা হয় সেই সময়ে ১২ বছরের পিয়ারা আক্তারকে। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ এপ্রিল হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন করাদন্ড দেয় আদালত। এরপর বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। পিয়ারা দীর্ঘ ২৬ বছর কারাভোগের পর চলতি বছরের ১০ জুন বরিশালের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জসীম উদ্দিন হায়দারের বিশেষ বিবেচনায় চার বছর আগে মুক্তি পান। এরপরই পিয়ারা আক্তার মঠবাড়িয়ার ছোট হারজি গ্রামের ৮০ বছরের বৃদ্ধা মা ছফুরা বেগমের সাথে দেখা করার জন্য বাড়িতে আসেন।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ জানান, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সর্বাত্মক লকডাউন শেষ হলে ঘর ও বয়স্ক ভাতার কার্ড পিয়ারার কাছে হস্তান্তর করা হবে। তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে জেলা প্রশাসন থেকে সার্বিক সহায়তা করা হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, পিয়ারা তার মঠবাড়িয়ার বাড়িতে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। এসময় জেলা প্রশাসক যাতায়াতের খরচ দিয়ে দিয়েছেন। পিয়ারা যেন আয় করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন সেজন্য ইতোমধ্যে সেলাই প্রশিক্ষণ ও মেশিন দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কারামুক্তি লাভের পর পরই জেলা প্রশাসন থেকে পিয়ারা আক্তারকে চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সে অনুসারে একটি উৎপাদন কারখানায় থাকা, খাওয়াসহ মাসিক ৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পিয়ারা আক্তার আগ্রহ প্রকাশ করেননি।
পিয়ারা আক্তার জানান, জেল থেকে বের হওয়ার পর তার মানসিক অবস্থা ভালো নেই। দীর্ঘ ২৬ বছর কারাভোগে শারীরিক অবস্থাও ভালো না। একটু সুস্থ হলে তবেই চাকরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে। পিয়ারা আপতত তার মায়ের সাথে থাকতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর ও মায়ের বয়স্ক ভাতা পেলে বৃদ্ধ মাকে নিয়ে বাকী জীবন স্বাভাবিকভাবে কাটাতে পারব বলে জানন।