ঢাকা ০৮:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম :
Logo অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo ফরিদপুর জেলার মধুখালিতে “শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে দুলাভাইকে হত্যা” শীর্ষক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক আসামি শরিফুল শেখ ও তথি বেগম’কে ফরিদপুরের কোতোয়ালি এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী এলাকা হতে ২৩.৫ কেজি গাঁজাসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ Logo গ্রাম পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা Logo আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস রিপোর্টার্স ফোরামের শ্রদ্ধা

দেশের সবচেয়ে বড় আবাসন প্রকল্প দিনাজপুরে ‘শেখ হাসিনা ভিলেজ’-এ ২৫২ গৃহহীন পরিবারের ঠাঁই মিলেছে

মোঃ আব্দুল আজিম, দিনাজপুর প্রতিনিধি

০৬-০৬-২০২১  দিনাজপুর ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের বালুপাড়ায় “শেখ হাসিনা ভিলেজ” আশ্রয়ণ প্রকল্পের রঙিন ঘরগুলোতে ২৫২টি গৃহহীন পরিবার উঠেছে। কদিন আগেও যারা ছিলেন ভূমিহীন, গৃহহীন, পারিবারিক বিচ্ছেদের শিকার নারী, অতিশয় বৃদ্ধ, বিধবা, ভিক্ষুক, দুস্থ পরিবারের সদস্যদের চোখে এখন নতুনভাবে বাঁচার রঙিন স্বপ্ন মিলেছে।
দিনাজপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী এ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি জানান, তার নির্বাচিত এলাকায় জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর সু-যোগ্য কন্যা সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নামে দেশের সব চেয়ে বড় আশ্রয়ন প্রকল্প “শেখ হাসিনা ভিলেজ” নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পে প্রকৃত গৃহহীন, ভূমিহীন, পারিবারিক বিচ্ছেদের শিকার নারী, অতিসয় বৃদ্ধ, বিধবা, ভিক্ষুক ও দুস্থ্য পরিবারের সদস্যদের চিহ্নিত করে এখানে বসবাসের ব্যবস্থা করে দিতে পারায় তিনি মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন দরদী ও মততাময়ী মা। তিনি দেশের তৃণ্যমূল পর্যায় পর্যন্ত অভাবি ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির আশ্রয়স্থল করার জন্য প্রত্যেক সংসদ সদস্যকে নিজ এলাকায় খাস জমি খুজে বের করে ওই জমিগুলোতেই সরকারী অর্থায়নে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বসবাসের জন্য আশ্রয়স্থল নির্মানের তাগিদ দিয়েছেন। তার সেই নির্দেশ অনুযায়ী দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলার ১০৩টি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বাড়ী নির্মানের প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। নির্মিত বাড়ীগুলোতে প্রকৃত হকদার ও দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন সফল করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এখানে শেষ নয় সারাদেশের ন্যায় এই জেলাতেও যাদের জমি আছে বাড়ী নাই বা জমি নাই বাড়ী নাই এধরনের পরিবারদের খুজে বের করে তাদের আশ্রয় স্থল নির্মানের কাজ চলমান থাকবে। দেশের মানুষ আশ্রয়ের অভাবে দুর্ভোগ পোহাবে এবিষয়টি তিনি নির্মুল করতেই তার নির্দেশেই তৃণ্যমূল পর্যায়ে আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে।
ফুলবাড়ী উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন জানান, ফুলবাড়ী উপজেলায় খয়েরবাড়ী ইউনিয়নে নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্প শেখ হাসিনা ভিলেজটি দেশের সবচেয়ে বড় আশ্রয়ণ প্রকল্প। ‘প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্প-২’-এর আওতায় নান্দনিকভাবে নির্মিত প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয় ‘শেখ হাসিনা ভিলেজ’। পরে এখানকার বাসিন্দারা ভালোবেসে বাংলায় এর নামকরণ করেন ‘শেখ হাসিনা গ্রাম’।
শেখ হাসিনা ভিলেজ হয়ে উঠেছে একটি আদর্শ গ্রাম। প্রতিটি ঘরে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎসংযোগ, পানির ব্যবস্থার জন্য বসানো হয়েছে নলকূপ। আছে উন্মুক্ত খেলার মাঠ, প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধর্ম অনুযায়ী প্রার্থনালয় ও কাঁচাবাজার। রয়েছে কবরস্থান ও শ্মশান ঘাট। পুরো শেখ হাসিনা ভিলেজ ঘিরে থাকবে সৌরবিদ্যুৎ প্যানেলের আওতায়। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য দেওয়া হবে গ্রাম পুলিশের স্থায়ী ঘরের ব্যবস্থা।
প্রধানমন্ত্রীর অভিনব ও চমকপ্রদ এ কর্মসূচিতে প্রতি পরিবারের জন্য রয়েছে ২ শতক জমি। এর ওপর করা হয়েছে রঙিন টিনের দুটি পাকা ঘর, পাকা মেঝের ঘরগুলোতে লাগানো হয়েছে উন্নতমানের জানালা ও দরজা। আছে লাগোয়া বারান্দা ও রান্নাঘর। তবে শৌচাগারের ব্যবস্থা আলাদা। এসব প্রতি বাসগৃহের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীনদের মধ্যে ঘরের চাবি, কবুলীয় দলিল, নামজারি খতিয়ান ও ডিসিআর প্রদান করা হয়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দীনের তত্ত্বাবধানে এসব ঘরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে কথা হয় শেখ হাসিনা ভিলেজের সুবিধাভোগী শারীরিক প্রতিবন্ধী জোবেদা বেওয়া (৯০) ও তার ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী অহিদুল ইসলামের (৫৬) সঙ্গে। জোবেদা বলেন, ‘মুই অচল, চলিবার পারো না বাহ, মোর ঘর তৈরি করার মুরদ আছিল না। ঘর পায়া মুই খুব খুশি। জীবনেও মুই পাকা ঘরোত থাকিবার পারিম কখনো ভাবো নাই।’ স্বামী পরিত্যাক্তা সেলিনা বেগম (৫৫) বলেন, ‘অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতাম, থাকতাম ঘর ভাড়া। খুব কষ্টে দিন কাটত। এখন আমার নিজের বাড়ি হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দীন বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় আশ্রয়ণ প্রকল্প এটি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। একসঙ্গে এত পরিবারের বসবাস দেশের আর কোনো প্রকল্পে নেই।
ফুলবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, স্থানীয় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমানের একান্ত প্রচেষ্টায় এ উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য সবচেয়ে বেশি বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে।

দিনাজপুরে পঞ্চম থেকে সপ্তম শতাব্দীর বৌদ্ধ বিহারের সন্ধান
মোঃ আব্দুল আজিম, দিনাজপুর প্রতিনিধি  ০৬-০৬-২০২১ দিনাজপুর পাবর্তীপুর উপজেলায় হামিদপুর ইউনিয়নের ইসবপুর গ্রামে বৌদ্ধ বিহারটির নির্মাণকাল পঞ্চম থেকে সপ্তম শতাব্দীতে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুরো খননকাজ হলে রেডিও র্কাবন ডেটিংয়ের মাধ্যমে প্রকৃত নির্মাণকাল নিশ্চিত হওয়া যাবে।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক সোহাগ আলী জানান, দিনাজপুর পার্বতীপুরের হামিদপুর ইউনিয়নের ইসবপুর গ্রামের ধাপেরবাজারে প্রায় দেড় একর এলাকাজুড়ে থাকা ঢিবি খনন করে প্রাচীন বৌদ্ধ বিহারটির সন্ধান পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত খননে বর্গাকার এই বৌদ্ধ বিহারে ৯টি বৌদ্ধ ভিক্ষু কক্ষ, কেন্দ্রীয় মন্দির ও বিহারাঙ্গনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এছাড়া মৃৎপাত্র, বিভিন্ন ধরনের মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ, পাথরের টুকরো, টিসি বল ও প্রাণীর হাড়ের মত প্রতœবস্তু পাওয়া গেছে।
গবেষক দলের নেতৃত্বে থাকা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক সোহাগ আলী জানান, বৌদ্ধ বিহারের নিদর্শনগুলো এখানে পাওয়া গেছে। খনন প্রক্রিয়া পুরোপুরি সম্পন্ন হলে এর নির্মান সময়কাল নিশ্চিত করা সম্ভব।
প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জয়নাল আবেদীন জানান, নিদর্শনটিকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। স্থানটি সংরক্ষনের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। খনন স্থানে খনন কাজ সম্পন্ন হলে কি ধরনের উপকরণ পাওয়া যায় তা সংরক্ষন করা হবে। এই স্থানে কবে এবং কত বছর পূর্বে বৌদ্ধ বিহারটি অবস্থিত ছিল ও পরবর্তীতে কালের পরিক্রমায় বিলীন হয়ে গেছে। সে বিষয়টি নিয়ে গবেষনা চলছে। সব মিলিয়ে বৌদ্ধ বিহারের একটি সার সংক্ষেপ প্রস্তুতির জন্য রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই টিম কাজ করে যাচ্ছে।
এই খনন প্রক্রিয়ায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রতœতত্ত বিভাগের ১০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের অর্থায়নে প্রভাষক সোহাগ আলীর নেতৃত্বে গত ফেব্রæয়ারী মাস থেকে মহাস্থান গড়ের ৮ জনসহ ২০ জন শ্রমিক ঢিবির খনন কাজ করছে। এর পাশাপাশি স্থানীয় শ্রমিকদের নিয়োজিত করে ভারি কাজগুলো করার কাজ চলছে। কবে নাগাদ এই কাজ সম্পন্ন হবে তা নিশ্চিক করে বলতে না পারলে তারা বলছে আরো ৪ থেকে ৬ মাস সময় লাগতে পারে।
বৌদ্ধ বিহার স্থানটি আবিস্কার হওয়ার পর ঘটনাস্থলে প্রতিদিন শত শত মানুষ ও উৎসক জনতা দেখার জন্য ঘটনাস্থলে ভীর করছেন। বিষয়টি ওই এলাকারসহ জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্যসৃষ্টি করেছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

দেশের সবচেয়ে বড় আবাসন প্রকল্প দিনাজপুরে ‘শেখ হাসিনা ভিলেজ’-এ ২৫২ গৃহহীন পরিবারের ঠাঁই মিলেছে

আপডেট টাইম : ১২:২২:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ জুন ২০২১

মোঃ আব্দুল আজিম, দিনাজপুর প্রতিনিধি

০৬-০৬-২০২১  দিনাজপুর ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের বালুপাড়ায় “শেখ হাসিনা ভিলেজ” আশ্রয়ণ প্রকল্পের রঙিন ঘরগুলোতে ২৫২টি গৃহহীন পরিবার উঠেছে। কদিন আগেও যারা ছিলেন ভূমিহীন, গৃহহীন, পারিবারিক বিচ্ছেদের শিকার নারী, অতিশয় বৃদ্ধ, বিধবা, ভিক্ষুক, দুস্থ পরিবারের সদস্যদের চোখে এখন নতুনভাবে বাঁচার রঙিন স্বপ্ন মিলেছে।
দিনাজপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী এ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি জানান, তার নির্বাচিত এলাকায় জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর সু-যোগ্য কন্যা সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নামে দেশের সব চেয়ে বড় আশ্রয়ন প্রকল্প “শেখ হাসিনা ভিলেজ” নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পে প্রকৃত গৃহহীন, ভূমিহীন, পারিবারিক বিচ্ছেদের শিকার নারী, অতিসয় বৃদ্ধ, বিধবা, ভিক্ষুক ও দুস্থ্য পরিবারের সদস্যদের চিহ্নিত করে এখানে বসবাসের ব্যবস্থা করে দিতে পারায় তিনি মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন দরদী ও মততাময়ী মা। তিনি দেশের তৃণ্যমূল পর্যায় পর্যন্ত অভাবি ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির আশ্রয়স্থল করার জন্য প্রত্যেক সংসদ সদস্যকে নিজ এলাকায় খাস জমি খুজে বের করে ওই জমিগুলোতেই সরকারী অর্থায়নে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বসবাসের জন্য আশ্রয়স্থল নির্মানের তাগিদ দিয়েছেন। তার সেই নির্দেশ অনুযায়ী দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলার ১০৩টি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বাড়ী নির্মানের প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। নির্মিত বাড়ীগুলোতে প্রকৃত হকদার ও দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন সফল করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এখানে শেষ নয় সারাদেশের ন্যায় এই জেলাতেও যাদের জমি আছে বাড়ী নাই বা জমি নাই বাড়ী নাই এধরনের পরিবারদের খুজে বের করে তাদের আশ্রয় স্থল নির্মানের কাজ চলমান থাকবে। দেশের মানুষ আশ্রয়ের অভাবে দুর্ভোগ পোহাবে এবিষয়টি তিনি নির্মুল করতেই তার নির্দেশেই তৃণ্যমূল পর্যায়ে আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে।
ফুলবাড়ী উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন জানান, ফুলবাড়ী উপজেলায় খয়েরবাড়ী ইউনিয়নে নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্প শেখ হাসিনা ভিলেজটি দেশের সবচেয়ে বড় আশ্রয়ণ প্রকল্প। ‘প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্প-২’-এর আওতায় নান্দনিকভাবে নির্মিত প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয় ‘শেখ হাসিনা ভিলেজ’। পরে এখানকার বাসিন্দারা ভালোবেসে বাংলায় এর নামকরণ করেন ‘শেখ হাসিনা গ্রাম’।
শেখ হাসিনা ভিলেজ হয়ে উঠেছে একটি আদর্শ গ্রাম। প্রতিটি ঘরে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎসংযোগ, পানির ব্যবস্থার জন্য বসানো হয়েছে নলকূপ। আছে উন্মুক্ত খেলার মাঠ, প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধর্ম অনুযায়ী প্রার্থনালয় ও কাঁচাবাজার। রয়েছে কবরস্থান ও শ্মশান ঘাট। পুরো শেখ হাসিনা ভিলেজ ঘিরে থাকবে সৌরবিদ্যুৎ প্যানেলের আওতায়। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য দেওয়া হবে গ্রাম পুলিশের স্থায়ী ঘরের ব্যবস্থা।
প্রধানমন্ত্রীর অভিনব ও চমকপ্রদ এ কর্মসূচিতে প্রতি পরিবারের জন্য রয়েছে ২ শতক জমি। এর ওপর করা হয়েছে রঙিন টিনের দুটি পাকা ঘর, পাকা মেঝের ঘরগুলোতে লাগানো হয়েছে উন্নতমানের জানালা ও দরজা। আছে লাগোয়া বারান্দা ও রান্নাঘর। তবে শৌচাগারের ব্যবস্থা আলাদা। এসব প্রতি বাসগৃহের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীনদের মধ্যে ঘরের চাবি, কবুলীয় দলিল, নামজারি খতিয়ান ও ডিসিআর প্রদান করা হয়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দীনের তত্ত্বাবধানে এসব ঘরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে কথা হয় শেখ হাসিনা ভিলেজের সুবিধাভোগী শারীরিক প্রতিবন্ধী জোবেদা বেওয়া (৯০) ও তার ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী অহিদুল ইসলামের (৫৬) সঙ্গে। জোবেদা বলেন, ‘মুই অচল, চলিবার পারো না বাহ, মোর ঘর তৈরি করার মুরদ আছিল না। ঘর পায়া মুই খুব খুশি। জীবনেও মুই পাকা ঘরোত থাকিবার পারিম কখনো ভাবো নাই।’ স্বামী পরিত্যাক্তা সেলিনা বেগম (৫৫) বলেন, ‘অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতাম, থাকতাম ঘর ভাড়া। খুব কষ্টে দিন কাটত। এখন আমার নিজের বাড়ি হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দীন বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় আশ্রয়ণ প্রকল্প এটি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। একসঙ্গে এত পরিবারের বসবাস দেশের আর কোনো প্রকল্পে নেই।
ফুলবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, স্থানীয় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমানের একান্ত প্রচেষ্টায় এ উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য সবচেয়ে বেশি বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে।

দিনাজপুরে পঞ্চম থেকে সপ্তম শতাব্দীর বৌদ্ধ বিহারের সন্ধান
মোঃ আব্দুল আজিম, দিনাজপুর প্রতিনিধি  ০৬-০৬-২০২১ দিনাজপুর পাবর্তীপুর উপজেলায় হামিদপুর ইউনিয়নের ইসবপুর গ্রামে বৌদ্ধ বিহারটির নির্মাণকাল পঞ্চম থেকে সপ্তম শতাব্দীতে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুরো খননকাজ হলে রেডিও র্কাবন ডেটিংয়ের মাধ্যমে প্রকৃত নির্মাণকাল নিশ্চিত হওয়া যাবে।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক সোহাগ আলী জানান, দিনাজপুর পার্বতীপুরের হামিদপুর ইউনিয়নের ইসবপুর গ্রামের ধাপেরবাজারে প্রায় দেড় একর এলাকাজুড়ে থাকা ঢিবি খনন করে প্রাচীন বৌদ্ধ বিহারটির সন্ধান পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত খননে বর্গাকার এই বৌদ্ধ বিহারে ৯টি বৌদ্ধ ভিক্ষু কক্ষ, কেন্দ্রীয় মন্দির ও বিহারাঙ্গনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এছাড়া মৃৎপাত্র, বিভিন্ন ধরনের মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ, পাথরের টুকরো, টিসি বল ও প্রাণীর হাড়ের মত প্রতœবস্তু পাওয়া গেছে।
গবেষক দলের নেতৃত্বে থাকা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক সোহাগ আলী জানান, বৌদ্ধ বিহারের নিদর্শনগুলো এখানে পাওয়া গেছে। খনন প্রক্রিয়া পুরোপুরি সম্পন্ন হলে এর নির্মান সময়কাল নিশ্চিত করা সম্ভব।
প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জয়নাল আবেদীন জানান, নিদর্শনটিকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। স্থানটি সংরক্ষনের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। খনন স্থানে খনন কাজ সম্পন্ন হলে কি ধরনের উপকরণ পাওয়া যায় তা সংরক্ষন করা হবে। এই স্থানে কবে এবং কত বছর পূর্বে বৌদ্ধ বিহারটি অবস্থিত ছিল ও পরবর্তীতে কালের পরিক্রমায় বিলীন হয়ে গেছে। সে বিষয়টি নিয়ে গবেষনা চলছে। সব মিলিয়ে বৌদ্ধ বিহারের একটি সার সংক্ষেপ প্রস্তুতির জন্য রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই টিম কাজ করে যাচ্ছে।
এই খনন প্রক্রিয়ায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রতœতত্ত বিভাগের ১০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের অর্থায়নে প্রভাষক সোহাগ আলীর নেতৃত্বে গত ফেব্রæয়ারী মাস থেকে মহাস্থান গড়ের ৮ জনসহ ২০ জন শ্রমিক ঢিবির খনন কাজ করছে। এর পাশাপাশি স্থানীয় শ্রমিকদের নিয়োজিত করে ভারি কাজগুলো করার কাজ চলছে। কবে নাগাদ এই কাজ সম্পন্ন হবে তা নিশ্চিক করে বলতে না পারলে তারা বলছে আরো ৪ থেকে ৬ মাস সময় লাগতে পারে।
বৌদ্ধ বিহার স্থানটি আবিস্কার হওয়ার পর ঘটনাস্থলে প্রতিদিন শত শত মানুষ ও উৎসক জনতা দেখার জন্য ঘটনাস্থলে ভীর করছেন। বিষয়টি ওই এলাকারসহ জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্যসৃষ্টি করেছে।