ঢাকা ০১:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম :
Logo অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo ফরিদপুর জেলার মধুখালিতে “শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে দুলাভাইকে হত্যা” শীর্ষক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক আসামি শরিফুল শেখ ও তথি বেগম’কে ফরিদপুরের কোতোয়ালি এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী এলাকা হতে ২৩.৫ কেজি গাঁজাসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ Logo গ্রাম পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা Logo আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস রিপোর্টার্স ফোরামের শ্রদ্ধা

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় স্বামীকে ফিরে পেতে সন্তান নিয়ে অনশনে স্ত্রী

নুরে আলম জিকু  শরীয়তপুর

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে অনশন করছেন তাসলিমা আক্তার মনি (২২) নামে এক নারী। মঙ্গলবার (১ জুন) সকাল ৯টা থেকে মেয়েকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে কাটাচ্ছেন তিনি।

স্বামীর বাড়িতে অনশনে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে কয়েকবার বেদম মারধর করেছেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় মনির বাবা রাজ্জাক শেখ ও স্থানীয় লোকজন তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের জালিয়াহাটি গ্রামের রাজ্জাক ছৈয়ালের ছেলে ইতালি প্রবাসী শাহ আলম ছৈয়ালের (২৮) সঙ্গে একই গ্রামের রাজ্জাক শেখের মেয়ে তাসলিমা আক্তার মনির ২০১৪ সালের ২ জানুয়ারি পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বেশ কয়েকদিন ভালোই চলছিল তাদের সংসার। চার মাস পর ইতালিতে কাগজপত্র ঠিক করতে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন শাহ আলম। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে পাঁচ লাখ টাকা দেয় মনির বাবা। আবারও দুই লাখ টাকা দাবি করে। দিতে অস্বীকার করলে নেমে আসে অমানসিক অত্যাচার। অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান মনি।

শুধু তাই নয় তাসলিমা আক্তার মনি কালো বলে বর্তমানে স্বামী শাহ আলম ডিভোর্স দেবে বলে হুমকিও দিয়ে আসছে। তাই কি করবে চোখে মুখে অন্ধকার দেখে আজ মঙ্গলবার পাঁচ বছরের মেয়ে ইকরাকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে বারান্দায় ও একটি রুমে অনশন শুরু করেন।

অনশনে থাকলে শাশুড়ি বিমলা বেগম (৬০), দেবর রাকিব ছৈয়াল (১৯), ননাস নাজমা বেগম (৩৫) ও বেগম আক্তার (২৮) তাকে কয়েকবার বেদম মারধর করেন। অজ্ঞান হয়ে পড়লে সন্ধ্যায় অসুস্থ অবস্থায় মনির বাবা রাজ্জাক শেখ ও স্থানীয় লোকজন তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তিনি হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন।

তাসলিমা আক্তার মনি বলেন, স্বামীর বাড়িতে আসলে আমার শ্বাশুড়ি বিমলা বেগম, দেবর রাকিব ছৈয়াল, ননাস নাজমা বেগম ও বেগম আক্তারসহ বাড়ির লোকজন মারধর করে। আমি আমার স্বামীর অধিকার নিয়ে এসেছি।

আমাকে স্বামী ডিভোর্সের ভয় দেখায়, আমারতো স্বামীর বাড়িতে থাকার অধিকার আছে। আমার স্বামীকে ফিরে পেতে চাই। স্বামী ইতালিতে থাকেন। তার পরিবার যৌতুক হিসেবে দুই লাখ টাকা চায় ও আমি কালো বলে স্বামী আমাকে ডিভোর্স দিতে চায়। তাই সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে আসছিলাম।

তাসলিমা আক্তার মনি বাবা রাজ্জাক শেখ বলেন, বিয়ের পর শাহ আলমকে মেয়ের সুখের জন্য যৌতুক হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছি। ছয় ভরি স্বর্ণালংকার ও বিভিন্ন আসবাবপত্র দিয়েছি। তাতে মন ভরেনি। এখন আবার দুই লাখ টাকা চাচ্ছে। আমি গরিব টাকা দিতে পারছি না তাই মেয়েকে মারধর করেছে। আমি এর বিচার চাই।

শাহ আলম ছৈয়ালের মা বিমলা বেগম বলেন, বউ মনি আমার মেয়েদের ও ছেলের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। আমাদের কথা শোনে না। একটি অনুষ্ঠানে যাবে আমার মেয়ে, তাই তার গয়না চেয়েছে দেয়নি। তাই আমরা তাকে বউ হিসেবে মানি না। আমার বাড়িতে তার কোনো যায়গা নেই। আমরা কেউ তাকে মারধর করিনি।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) অবনী শংকর কর বলেন, এ বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়নি। কেউ অভিযোগ নিয়েও আসেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় স্বামীকে ফিরে পেতে সন্তান নিয়ে অনশনে স্ত্রী

আপডেট টাইম : ০২:১১:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুন ২০২১
নুরে আলম জিকু  শরীয়তপুর

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে অনশন করছেন তাসলিমা আক্তার মনি (২২) নামে এক নারী। মঙ্গলবার (১ জুন) সকাল ৯টা থেকে মেয়েকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে কাটাচ্ছেন তিনি।

স্বামীর বাড়িতে অনশনে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে কয়েকবার বেদম মারধর করেছেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় মনির বাবা রাজ্জাক শেখ ও স্থানীয় লোকজন তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের জালিয়াহাটি গ্রামের রাজ্জাক ছৈয়ালের ছেলে ইতালি প্রবাসী শাহ আলম ছৈয়ালের (২৮) সঙ্গে একই গ্রামের রাজ্জাক শেখের মেয়ে তাসলিমা আক্তার মনির ২০১৪ সালের ২ জানুয়ারি পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বেশ কয়েকদিন ভালোই চলছিল তাদের সংসার। চার মাস পর ইতালিতে কাগজপত্র ঠিক করতে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন শাহ আলম। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে পাঁচ লাখ টাকা দেয় মনির বাবা। আবারও দুই লাখ টাকা দাবি করে। দিতে অস্বীকার করলে নেমে আসে অমানসিক অত্যাচার। অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান মনি।

শুধু তাই নয় তাসলিমা আক্তার মনি কালো বলে বর্তমানে স্বামী শাহ আলম ডিভোর্স দেবে বলে হুমকিও দিয়ে আসছে। তাই কি করবে চোখে মুখে অন্ধকার দেখে আজ মঙ্গলবার পাঁচ বছরের মেয়ে ইকরাকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে বারান্দায় ও একটি রুমে অনশন শুরু করেন।

অনশনে থাকলে শাশুড়ি বিমলা বেগম (৬০), দেবর রাকিব ছৈয়াল (১৯), ননাস নাজমা বেগম (৩৫) ও বেগম আক্তার (২৮) তাকে কয়েকবার বেদম মারধর করেন। অজ্ঞান হয়ে পড়লে সন্ধ্যায় অসুস্থ অবস্থায় মনির বাবা রাজ্জাক শেখ ও স্থানীয় লোকজন তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তিনি হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন।

তাসলিমা আক্তার মনি বলেন, স্বামীর বাড়িতে আসলে আমার শ্বাশুড়ি বিমলা বেগম, দেবর রাকিব ছৈয়াল, ননাস নাজমা বেগম ও বেগম আক্তারসহ বাড়ির লোকজন মারধর করে। আমি আমার স্বামীর অধিকার নিয়ে এসেছি।

আমাকে স্বামী ডিভোর্সের ভয় দেখায়, আমারতো স্বামীর বাড়িতে থাকার অধিকার আছে। আমার স্বামীকে ফিরে পেতে চাই। স্বামী ইতালিতে থাকেন। তার পরিবার যৌতুক হিসেবে দুই লাখ টাকা চায় ও আমি কালো বলে স্বামী আমাকে ডিভোর্স দিতে চায়। তাই সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে আসছিলাম।

তাসলিমা আক্তার মনি বাবা রাজ্জাক শেখ বলেন, বিয়ের পর শাহ আলমকে মেয়ের সুখের জন্য যৌতুক হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছি। ছয় ভরি স্বর্ণালংকার ও বিভিন্ন আসবাবপত্র দিয়েছি। তাতে মন ভরেনি। এখন আবার দুই লাখ টাকা চাচ্ছে। আমি গরিব টাকা দিতে পারছি না তাই মেয়েকে মারধর করেছে। আমি এর বিচার চাই।

শাহ আলম ছৈয়ালের মা বিমলা বেগম বলেন, বউ মনি আমার মেয়েদের ও ছেলের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। আমাদের কথা শোনে না। একটি অনুষ্ঠানে যাবে আমার মেয়ে, তাই তার গয়না চেয়েছে দেয়নি। তাই আমরা তাকে বউ হিসেবে মানি না। আমার বাড়িতে তার কোনো যায়গা নেই। আমরা কেউ তাকে মারধর করিনি।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) অবনী শংকর কর বলেন, এ বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়নি। কেউ অভিযোগ নিয়েও আসেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।