ঢাকা ০৭:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০১ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম :
Logo অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo ফরিদপুর জেলার মধুখালিতে “শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে দুলাভাইকে হত্যা” শীর্ষক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক আসামি শরিফুল শেখ ও তথি বেগম’কে ফরিদপুরের কোতোয়ালি এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী এলাকা হতে ২৩.৫ কেজি গাঁজাসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ Logo গ্রাম পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা Logo আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস রিপোর্টার্স ফোরামের শ্রদ্ধা

নগরকান্দায় যৌতুক ও নারী লোভী স্বামীর তান্ডবে বাড়ি ছাড়া তিন সন্তানসহ স্ত্রী সন্তানদের ভোরণ-পোষণ দিতে নারাজ স্বামী

মোঃরিফাত ইসলাম ফরিদপুর:

বিবাহ বন্ধনের দীর্ঘ ২২ বছর পর ফরিদপুরের নগরকান্দায় যৌতুক ও নারী লোভী স্বামীর তান্ডবে বাড়ি ছাড়া হয়েছেন তিন সন্তানসহ স্ত্রী। এমনকি ঐ তিন সন্তানের ভোরনপোষণ দিবেন না বলে প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছেন তার স্বামী। অভিযুক্ত ব্যক্তি নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের কল্যানপুটি গ্রামের রুস্তুম খা’র পুত্র ফিরোজ খাঁ (৪০)। ভুক্তভোগী ফিরোজ খা’র প্রথম স্ত্রী পাশ্ববর্তী সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মুরুাটিয়া গ্রামের মৃত ছাড়াজানের কণ্যা ইসমোত আরা।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৯৯ইং সালে পারিবারিকভাবে শরিয়ত মোতাবেক আমাদের বিয়ে হয়। পরে আমাদের তিনটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। অর্থনৈতিক অভাব অনটন ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আমি জর্ডান প্রবাসে চলে যাই। সেখানে পাঁচ বছর থাকার পর আবার সৌদিআরব গিয়ে ৩ বছর থাকি। বিদেশ থাকাকালীন আমার রোজগারের টাকা ও বাবার বাড়ি থেকে আড়াই লক্ষ টাকা এনে স্বামীকেও ওমান পাঠিয়ে দেই। বিদেশ যাওয়ার বছর খানেক পর থেকেই আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। সন্তানদেরও খোঁজ খবর নেন না। পরে আমার অক্লান্ত চেষ্টায় বড় ছেলে রুমান (১৮) নগরকান্দা সরকারী কলেজে অধ্যায়নরত এবং মেজো ছেলে সুমন (১৫) ও ছোট ছেলে সুয়াইফ (১১) মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতেছে।
তিনি বলেন, বিদেশে থাকাকালীন স্বামীকে ফোন করলে এক নারী ফোন ধরে বলে আমার স্বামীকে আপনি বার বার কেন ফোন দেন, আর ফোন দিবেন না ও যোগাযোগ করার চেষ্টাও করবেন না। আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি। আমি দিশেহারা হয়ে দেশে ফিরে আসি। এবং গত জানুয়ারীতে আমার স্বামীর দেশে আসার কথা শুনে বড় ছেলে ফরিদপুরে আনতে গেলে ঐ নারীকে সাথে দেখতে পান। ক্ষোভে আমার ছেলে বাবার সাথে কথা না বলে বাড়িতে এসে আমাকে জানান। এরপরও দেশে এসে ৫ই ফেব্রুয়ারীতে আরো আড়াই লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। টাকা না দেয়ায় এক শালিসে প্রকাশ্যে আমার সন্তানদের ভোরন-পোষণ দেবেন না বলে জানিয়ে দেন এবং বাড়িতে যেতে দিবেন না বলে জানিয়ে দেন। পরে আমি দিশেহারা হয়ে সন্তানদের ভোরণ-পোষণের জন্য ১৭ লক্ষ ২৮ হাজার টাকাসহ দেনমোহরের ১,২৫,০০০/= (একলক্ষ পঁচিশ হাজার) টাকার দাবিতে ফরিদপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৬নং আমলী আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে একটি মামলা করেছি। আমি এর সঠিক বিচার দাবি করছি।
ভুক্তভোগী আরো বলেন, কোর্টে মামলায় আমার বড় ছেলে স্বাক্ষী দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ফিরোজের ভাই ও ভাতিজারা। এরপর গত ৮ই মার্চ কল্যাণপুর গ্রামে আমার ক্রয় করা জমির ফসল দেখতে গেলে ছুরাপ খান, ইকরাম শেখ ও টিটুল শেখ মিলে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এ ব্যাপারে নগরকান্দা থানায় একটি অভিযোগও দিয়েছি।
১০ই এপ্রিল শনিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ফিরোজ খাঁ একজন নারী লোভী ব্যক্তি। দীর্ঘ ৫/৭ বছর ওমান প্রবাস থেকে গত ৭ই জানুয়ারী দেশে এসেছেন। তিনি প্রথম স্ত্রীর সম্মতি ছাড়াই আরো তিনটি বিয়ে করেছেন। প্রবাসে থাকা অবস্থায় ২টি বিয়ে করেন এবং দেশে অবস্থানকালে উপজেলার বড়লক্ষণদিয়া গ্রামে লাবনী বেগম নামে আরো এক নারীকে বিয়ে করেন। নারী লোভী ও যৌতুকের কারনে বনিবনা না হওয়ায় লাবনী বেগম তার স্বামীকে গত ২৭/৫/১২ইং তারিখে তালাক দিয়ে দেন। লাবনী বেগমের  একটি পুত্র সন্তান আছে বলে জানা যায়। এদিকে ওমান থাকা অবস্থায় ঢাকার বাসিন্দা এক নারীকে প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করেন, কিছু দিনপর ঐ নারী তার স্ত্রী ছেলে সন্তান আছে জেনে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এরপর ওমান থাকাকালীনই বরিশালের এক নারীর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে একসাথে বসবাস করতে থাকেন। ঐ নারীকে নিয়ে গত ৭ই জানুয়ারী তিনি দেশে আসেন এবং প্রথম স্ত্রীকে জানিয়ে দেন এই নারী তার বিবাহিত স্ত্রী। তবে প্রথম স্ত্রীর দাবি কাবিন ছাড়াই দীর্ঘদিন ঐ নারীর সাথে প্রবাসে সংসার করেছেন এবং বর্তমানেও কাবিন নেই বলে তিনি জানান।
প্রথম স্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বরিশালের নারীর সাথে বিবাহের কাবিন নামা আছে কি-না জানতে অভিযুক্ত ফিরোজ খাঁ’র বাড়িতে গেলে তিনি নগরকান্দা আছেন বলে মুঠোফোনে জানান এবং তার বাড়িতে থাকা বরিশালের ঐ নারী পালিয়ে অন্যত্র চলে যান। তবে মুঠোফোনে ফিরোজ খাঁ বলেন, কাগজপত্রের বিষয়ে আমাকে ২ দিন সময় দেন, এই মুহুর্তে আমি দেখাতে পারবো না।
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

নগরকান্দায় যৌতুক ও নারী লোভী স্বামীর তান্ডবে বাড়ি ছাড়া তিন সন্তানসহ স্ত্রী সন্তানদের ভোরণ-পোষণ দিতে নারাজ স্বামী

আপডেট টাইম : ০৭:৩৫:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১
মোঃরিফাত ইসলাম ফরিদপুর:

বিবাহ বন্ধনের দীর্ঘ ২২ বছর পর ফরিদপুরের নগরকান্দায় যৌতুক ও নারী লোভী স্বামীর তান্ডবে বাড়ি ছাড়া হয়েছেন তিন সন্তানসহ স্ত্রী। এমনকি ঐ তিন সন্তানের ভোরনপোষণ দিবেন না বলে প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছেন তার স্বামী। অভিযুক্ত ব্যক্তি নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের কল্যানপুটি গ্রামের রুস্তুম খা’র পুত্র ফিরোজ খাঁ (৪০)। ভুক্তভোগী ফিরোজ খা’র প্রথম স্ত্রী পাশ্ববর্তী সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মুরুাটিয়া গ্রামের মৃত ছাড়াজানের কণ্যা ইসমোত আরা।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৯৯ইং সালে পারিবারিকভাবে শরিয়ত মোতাবেক আমাদের বিয়ে হয়। পরে আমাদের তিনটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। অর্থনৈতিক অভাব অনটন ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আমি জর্ডান প্রবাসে চলে যাই। সেখানে পাঁচ বছর থাকার পর আবার সৌদিআরব গিয়ে ৩ বছর থাকি। বিদেশ থাকাকালীন আমার রোজগারের টাকা ও বাবার বাড়ি থেকে আড়াই লক্ষ টাকা এনে স্বামীকেও ওমান পাঠিয়ে দেই। বিদেশ যাওয়ার বছর খানেক পর থেকেই আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। সন্তানদেরও খোঁজ খবর নেন না। পরে আমার অক্লান্ত চেষ্টায় বড় ছেলে রুমান (১৮) নগরকান্দা সরকারী কলেজে অধ্যায়নরত এবং মেজো ছেলে সুমন (১৫) ও ছোট ছেলে সুয়াইফ (১১) মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতেছে।
তিনি বলেন, বিদেশে থাকাকালীন স্বামীকে ফোন করলে এক নারী ফোন ধরে বলে আমার স্বামীকে আপনি বার বার কেন ফোন দেন, আর ফোন দিবেন না ও যোগাযোগ করার চেষ্টাও করবেন না। আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি। আমি দিশেহারা হয়ে দেশে ফিরে আসি। এবং গত জানুয়ারীতে আমার স্বামীর দেশে আসার কথা শুনে বড় ছেলে ফরিদপুরে আনতে গেলে ঐ নারীকে সাথে দেখতে পান। ক্ষোভে আমার ছেলে বাবার সাথে কথা না বলে বাড়িতে এসে আমাকে জানান। এরপরও দেশে এসে ৫ই ফেব্রুয়ারীতে আরো আড়াই লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। টাকা না দেয়ায় এক শালিসে প্রকাশ্যে আমার সন্তানদের ভোরন-পোষণ দেবেন না বলে জানিয়ে দেন এবং বাড়িতে যেতে দিবেন না বলে জানিয়ে দেন। পরে আমি দিশেহারা হয়ে সন্তানদের ভোরণ-পোষণের জন্য ১৭ লক্ষ ২৮ হাজার টাকাসহ দেনমোহরের ১,২৫,০০০/= (একলক্ষ পঁচিশ হাজার) টাকার দাবিতে ফরিদপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৬নং আমলী আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে একটি মামলা করেছি। আমি এর সঠিক বিচার দাবি করছি।
ভুক্তভোগী আরো বলেন, কোর্টে মামলায় আমার বড় ছেলে স্বাক্ষী দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ফিরোজের ভাই ও ভাতিজারা। এরপর গত ৮ই মার্চ কল্যাণপুর গ্রামে আমার ক্রয় করা জমির ফসল দেখতে গেলে ছুরাপ খান, ইকরাম শেখ ও টিটুল শেখ মিলে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এ ব্যাপারে নগরকান্দা থানায় একটি অভিযোগও দিয়েছি।
১০ই এপ্রিল শনিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ফিরোজ খাঁ একজন নারী লোভী ব্যক্তি। দীর্ঘ ৫/৭ বছর ওমান প্রবাস থেকে গত ৭ই জানুয়ারী দেশে এসেছেন। তিনি প্রথম স্ত্রীর সম্মতি ছাড়াই আরো তিনটি বিয়ে করেছেন। প্রবাসে থাকা অবস্থায় ২টি বিয়ে করেন এবং দেশে অবস্থানকালে উপজেলার বড়লক্ষণদিয়া গ্রামে লাবনী বেগম নামে আরো এক নারীকে বিয়ে করেন। নারী লোভী ও যৌতুকের কারনে বনিবনা না হওয়ায় লাবনী বেগম তার স্বামীকে গত ২৭/৫/১২ইং তারিখে তালাক দিয়ে দেন। লাবনী বেগমের  একটি পুত্র সন্তান আছে বলে জানা যায়। এদিকে ওমান থাকা অবস্থায় ঢাকার বাসিন্দা এক নারীকে প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করেন, কিছু দিনপর ঐ নারী তার স্ত্রী ছেলে সন্তান আছে জেনে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এরপর ওমান থাকাকালীনই বরিশালের এক নারীর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে একসাথে বসবাস করতে থাকেন। ঐ নারীকে নিয়ে গত ৭ই জানুয়ারী তিনি দেশে আসেন এবং প্রথম স্ত্রীকে জানিয়ে দেন এই নারী তার বিবাহিত স্ত্রী। তবে প্রথম স্ত্রীর দাবি কাবিন ছাড়াই দীর্ঘদিন ঐ নারীর সাথে প্রবাসে সংসার করেছেন এবং বর্তমানেও কাবিন নেই বলে তিনি জানান।
প্রথম স্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বরিশালের নারীর সাথে বিবাহের কাবিন নামা আছে কি-না জানতে অভিযুক্ত ফিরোজ খাঁ’র বাড়িতে গেলে তিনি নগরকান্দা আছেন বলে মুঠোফোনে জানান এবং তার বাড়িতে থাকা বরিশালের ঐ নারী পালিয়ে অন্যত্র চলে যান। তবে মুঠোফোনে ফিরোজ খাঁ বলেন, কাগজপত্রের বিষয়ে আমাকে ২ দিন সময় দেন, এই মুহুর্তে আমি দেখাতে পারবো না।