ঢাকা ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শুধু কৃষি নয়, শিল্পায়নের দিকেও জোর দিয়েছি

ফাইল ছবি

আলোর জগত ডেস্ক :   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু কৃষি নয় শিল্পায়নের দিকেও আমরা জোর দিয়েছি। কারণ, খাদ্যের জোগানের জন্য কৃষি যেমন জরুরি, তেমনি দেশের উন্নয়নে শিল্পায়নের সম্প্রসারণও জরুরি। রবিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ‘ডেসটিনেশন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিসিসিআই।

বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু কৃষির ওপর নির্ভর না করে দেশে শিল্পায়ন যাতে হয়, সেদিকে আমরা দৃষ্টি দিয়েছি। খাদ্যের যোগানে কৃষির প্রয়োজন রয়েছে। ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ারও কাজ করতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দিয়েছি। কারণ বেসরকারি খাতই পারে বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে, উন্নত করতে।

শিল্পকে বহুমুখী করার প্রত্যাশা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ইতোমধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করার নির্দেশ দিয়েছি। তবে দেখতে হবে কোন অঞ্চলে কোন জিনিসের উৎপাদন বেশি হয় এবং দেশে বিদেশে তার কেমন চাহিদা রয়েছে। সেটাকে বিবেচনায় নিয়েই আমাদের শিল্পায়ন করতে হবে, উৎপাদন করতে হবে এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে হবে। তাহলেই আমাদের শিল্পের বিকাশ হবে।

রপ্তানিকে বহুমুখীকরণের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাঙালিদের অভ্যাস খারাপ আছে, কেউ কোনা একটা জায়গায় সফলতা পেলেই, সবাই তাকে অনুসরণ করে সেই কাজে নেমে পড়ে। একটা সময় দেখা যায়, ওই কাজের আর মূল্য থাকছে না। সেটা না করে বহুমুখীকরণে মনোযোগ দিতে হবে। আমাদের রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণ করতে হবে। বিশ্ব চাহিদার চিন্তা মাথায় রেখে নতুনভাবে পরিকল্পনা করে উৎপাদন করতে হবে।

অর্থনৈতিকভাবে দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য যা যা করার দরকার আমরা তা করে যাচ্ছি। বিনিয়োগেরজন্য বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছি। কেউ চাইলে বিনিয়োগ করার সুযোগ পাবে। ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়ন করার চেষ্টা চলছে। ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের সুযোগ করে দিয়েছি। আমাদের রপ্তানি আয় বেড়েছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। আগামী অর্থবছরে ৮.৫ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বাড়ছে।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদেরকেও এগিয়ে যেতে হবে। সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা বাণিজ্যকে সম্প্রসারিত হবে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সহযোগিতা দরকার। আমি ব্যবসা বুঝি না। আমার কাজ ব্যবসার সুযোগ করে দেয়া, সম্ভাবনাগুলোকে জাগিয়ে দেয়া।

দেশের চলমান অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসা কুড়াচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মতে বাংলাদেশের অর্থনীতি উদীয়মান ও শক্তিশালী। ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ার মতো দেশকে অতিক্রম করে বিশ্বের ২৩তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হবে।

চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সবদিক থেকে দেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়েছিল দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও হাওয়া ভবনকে খুশি না করলে তখন ব্যবসা পাওয়া যেত না। আট বছর পরে সরকার গঠন করে দেখলাম সবদিক থেকে দেশ পিছিয়ে পড়েছে। বিদুৎ উৎপাদন কমে গেছে, সাক্ষরতার হার কমে গেছে, কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ, ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বোমাবাজি, গ্রেনেড হামলা, চাঁদাবাজিতে দেশ ভরে গেছে। সেই অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে পরিকল্পিতভাবে দেশটা যাতে এগোতে পারে, সেই ব্যবস্থা করেছি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ মির্জাগঞ্জের আরিফুল স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান

শুধু কৃষি নয়, শিল্পায়নের দিকেও জোর দিয়েছি

আপডেট টাইম : ০৯:০৬:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৮

আলোর জগত ডেস্ক :   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু কৃষি নয় শিল্পায়নের দিকেও আমরা জোর দিয়েছি। কারণ, খাদ্যের জোগানের জন্য কৃষি যেমন জরুরি, তেমনি দেশের উন্নয়নে শিল্পায়নের সম্প্রসারণও জরুরি। রবিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ‘ডেসটিনেশন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিসিসিআই।

বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু কৃষির ওপর নির্ভর না করে দেশে শিল্পায়ন যাতে হয়, সেদিকে আমরা দৃষ্টি দিয়েছি। খাদ্যের যোগানে কৃষির প্রয়োজন রয়েছে। ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ারও কাজ করতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দিয়েছি। কারণ বেসরকারি খাতই পারে বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে, উন্নত করতে।

শিল্পকে বহুমুখী করার প্রত্যাশা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ইতোমধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করার নির্দেশ দিয়েছি। তবে দেখতে হবে কোন অঞ্চলে কোন জিনিসের উৎপাদন বেশি হয় এবং দেশে বিদেশে তার কেমন চাহিদা রয়েছে। সেটাকে বিবেচনায় নিয়েই আমাদের শিল্পায়ন করতে হবে, উৎপাদন করতে হবে এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে হবে। তাহলেই আমাদের শিল্পের বিকাশ হবে।

রপ্তানিকে বহুমুখীকরণের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাঙালিদের অভ্যাস খারাপ আছে, কেউ কোনা একটা জায়গায় সফলতা পেলেই, সবাই তাকে অনুসরণ করে সেই কাজে নেমে পড়ে। একটা সময় দেখা যায়, ওই কাজের আর মূল্য থাকছে না। সেটা না করে বহুমুখীকরণে মনোযোগ দিতে হবে। আমাদের রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণ করতে হবে। বিশ্ব চাহিদার চিন্তা মাথায় রেখে নতুনভাবে পরিকল্পনা করে উৎপাদন করতে হবে।

অর্থনৈতিকভাবে দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য যা যা করার দরকার আমরা তা করে যাচ্ছি। বিনিয়োগেরজন্য বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছি। কেউ চাইলে বিনিয়োগ করার সুযোগ পাবে। ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়ন করার চেষ্টা চলছে। ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের সুযোগ করে দিয়েছি। আমাদের রপ্তানি আয় বেড়েছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। আগামী অর্থবছরে ৮.৫ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বাড়ছে।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদেরকেও এগিয়ে যেতে হবে। সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা বাণিজ্যকে সম্প্রসারিত হবে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সহযোগিতা দরকার। আমি ব্যবসা বুঝি না। আমার কাজ ব্যবসার সুযোগ করে দেয়া, সম্ভাবনাগুলোকে জাগিয়ে দেয়া।

দেশের চলমান অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসা কুড়াচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মতে বাংলাদেশের অর্থনীতি উদীয়মান ও শক্তিশালী। ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ার মতো দেশকে অতিক্রম করে বিশ্বের ২৩তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হবে।

চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সবদিক থেকে দেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়েছিল দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও হাওয়া ভবনকে খুশি না করলে তখন ব্যবসা পাওয়া যেত না। আট বছর পরে সরকার গঠন করে দেখলাম সবদিক থেকে দেশ পিছিয়ে পড়েছে। বিদুৎ উৎপাদন কমে গেছে, সাক্ষরতার হার কমে গেছে, কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ, ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বোমাবাজি, গ্রেনেড হামলা, চাঁদাবাজিতে দেশ ভরে গেছে। সেই অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে পরিকল্পিতভাবে দেশটা যাতে এগোতে পারে, সেই ব্যবস্থা করেছি।