নিষেধাজ্ঞা দিয়ে লাভ নেই, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতির দিয়েও লাভ নেই। ৭১’র নিষেধাজ্ঞা পেয়ে ভয় করলে দেশ স্বাধীন হতো না। আজকেও নিষেধাজ্ঞাকে ভয় করলে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারবো না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই নির্বাচন হবে। কোনো ছাড় হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মজার ব্যাপার হচ্ছে— নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন, ভয় দেখায় মির্জা ফখরুল। অদ্ভুত কাণ্ড। আমার নির্বাচন আমি করবো, তুমি বলার কে? আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জো বাইডেন আজকেও বলেছেন, গণতন্ত্র হুমকির মুখে। ট্রাম্পকে সামলাতে পারে না আর বাংলাদেশেকে ধমক দেয়। ওয়াশিংটন হিলে ৬ জানুয়ারি ৬টি প্রাণ ঝরলো, এ কেমন গণতন্ত্র? আপনাদের দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। এমন দিন নেই, যেদিন যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না। তাহলে আমাদের ভয় দেখান কেন? আবার দালাল লাগিয়েছেন ফখরুলকে।’
বিএনপিকে উদ্দেশ্যে করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের ৪৮ ঘণ্টা শেষ। আলটিমেটাম শেষ। খেলা হবে। ক্যাপ্টেন আমেরিকায়, তিনি এলে জোরদার খেলা হবে। আমাদের নির্বাচন আমাদের সংবিধান নির্ধারণ করবে। আমরা কীভাবে চলবো, আমরাই ঠিক করবো। আমরা তত্ত্বাবধায়ক মানি না। ওটা মরা লাশ। ওটা আমাদের কাছে এনে লাভ নেই। ২০০১ সালে দেখিছি, ফখরুদ্দীন-মঈন উদ্দিনেরটাও দেখেছি। সেই তত্ত্বাবধায়ক চালু করে বাংলাদেশে অস্বাভাবিক সরকার করবেন, সেটা আর হবে না।
মির্জা ফখরুলকে কাদের বলেন, কী করবেন? ৪৮ ঘণ্টা তো চলে গেলো। আন্দোলনে পাবলিক নেই। আন্দোলন আর দফা সবই ভুয়া। এ ভুয়া আন্দোলন এ দেশের মানুষ মানে না। কোনো ছাড় নেই। হুমকি দিয়ে লাভ নেই। বৃহৎ শক্তির হুমকিই শেখ হাসিনা পরোয়া করেন না। আপনারা? কী আশায় বাধি খেলাঘর? এ খেলাঘর ভেঙে সবই হবে বেদনার বালুচর। থাকবে আসল বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি বলেন, অনুমতি নেবেন না। আইন মানবেন না। জনগণ যখন ধাওয়া দেবে, কর্ণফুলী গিয়ে পড়বেন। আগুন নিয়ে আসবেন, নাশকতা করবেন? নাশকতার কালো হাত ভেঙে দেবো। মাঠ ছাড়বো না। ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবো।
সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাহজাহান খান, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
সভায় প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, শেখ হাসিনা থাকলে বাংলাদেশ নিরাপদে থাকে। শেখ হাসিনা ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকি। দীর্ঘদিন লড়াই সংগ্রাম করেছি, নেত্রী আপসহীন নেতৃত্বের কারণে। তিনি বলেন, আজকে বিএনপি বার বার দফা দেয়। ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে, অথচ ৫দিন হয়ে গেছে খবর নেই। ১৫ বছরে আন্দোলন করে কিছু করতে পারেনি। আগামী এক মাসে নাকি তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে আসবে।
প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ আফগানিস্তান বা পাকিস্তান না। আফগানিস্তানে বার বার পুতুল সরকার বসানো সম্ভব। পাকিস্তানেও আপনাদের ইচ্ছার প্রতিফলন সম্ভব। এটা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। এখানে দেশের জনগণ যেটা চাইবে, সেটাই হবে। তিনি বলেন, সব দিক থেকে বাংলাদেশ এখন এগিয়ে গেছে। এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও সরকার গঠনের জন্য কাজ করতে হবে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, আমরা লড়াই-সংগ্রাম করে আজ এ পর্যন্ত এসেছি। আওয়ামী লীগ ভিসানীতি পরোয়া করে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। আর সেই নির্বাচন যদি কেউ বাধাগ্রস্ত করতে আসে, তাদের আমরা রাজপথে প্রতিহত করবো। আমরা শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে আপসহীন। এসময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।