ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) অধিভুক্ত ‘রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্সেস (আরআইবি)’ এর অধ্যক্ষের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার (০৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভা চলাকালে রাবির উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এফএম আলী হায়দারে নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। এসময় হামলাকারীরা সভার রেজুলেশন বহিসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং প্রতিষ্ঠানটির সাড়ে ৩ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ইনস্টিটিউট এর অধ্যক্ষ ভুক্তভোগী ড. হাফিজুর রহমান অভিযুক্ত শিক্ষক ড.এফএম আলী হায়দারকে প্রধান করে দুইজনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বিকালে নগরীর মতিহার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
থানায় দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে- মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্সেস এর সেমিনার কক্ষে সভা চলছিল। এসময় ড.এফএম আলী হায়দার সভাকক্ষে প্রবেশ করে রেজুলেশন বহিসহ সভার গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নেন। সভায় উপস্থিত সদস্যগণের সামনেই অভিযুক্ত শিক্ষক ইনস্টিউটের অধ্যক্ষ ড. হাফিজুর রহমানকে মারধর ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে প্রাণনাশের হুমকি দেন। পরে জীবন রক্ষার্থে ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ সভাককক্ষ থেকে বাইরে চলে আসলে ২ নং বিবাদী মো. মুকুলসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জন অধ্যক্ষকে এলোপাথাড়ি মারধর ও তাঁর বুকে ও মাথায় আঘাত করে। এসময় অফিসে থাকা সাড়ে ৩ লাখ টাকাও ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রাবিবর উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এফএম আলী হায়দার বলেন, ‘আমি ওই ইনস্টিটিউটের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও একজন শিক্ষক ওই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য। এছাড়া দুইজন অভিভাবক সদস্যও রয়েছেন। আমাদের এই চারজনকে মিটিং সম্পর্কে কোনোকিছু না জানিয়েই চুরি করে মিটিং করছিলো। জানতে পেরে আমি কাউকে সঙ্গে না নিয়েই একাই বাধা দিতে গিয়েছিলাম। এসময় কাগজপত্র নিয়ে একটু ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। তবে আমার বিরুদ্ধে মারধর, প্রাণনাশের হুমকি কিংবা টাকা ছিনিয়ে নেয়ার যে অডিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা।’ তিনি আরও বলেন, সে ইনস্টিউটের টাকা নিজের ব্যক্তিগত একাউন্টে নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ফরম বিক্রি বাবৎ যে টাকা উঠেছিল মিটিংয়ে সেই টাকার হিসাবেও নয়ছয় করেছে।’
ইনস্টিউটের অধ্যক্ষ ড. হাফিজুর রহমান বলেন, ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই রাবি কর্তৃপক্ষ দুই বছরের জন্য তাকে (ড. আলী হায়দার) ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেছিলেন। চলতি বছরের ২২ জুলাই তার দায়িত্ব শেষ হয়েছে। তিনি ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তবে রাবি কর্তৃপক্ষের এনওসি ছাড়া তিনি ইনস্টিটিউটের কোনো সভাতেই অংশগ্রহণ করতে পারেন না। তাকে কোনো সভায় রাখলে সেটি প্রতিষ্ঠানের বিধি মোতাবেক অবৈধ হবে। তাকে সভায় না রাখার কারণে মঙ্গলবার দুপুরে সভা চলাকালীন আমার ওপর হামলা, অকথ্য ভাষায় গালাগাল এবং কাগজপত্র ও সাড়ে ৩ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন।’
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ‘ওইভাবে হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমার জানামতে, ইনস্টিটিউটটির চারজন পার্টনার রয়েছে। তাদের মধ্যে মতাদ্ব›েদ্বর একটি ঘটনা ঘটেছে। মিটিংয়ে একজন উপস্থিত ছিল না। এই নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সবাই শিক্ষিত মানুষ। নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হতেই পারে। টিচারদের একটু অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবেন। আপনারা সাংবাদিকতা করেন, একটা শিক্ষককে যদি আমরা ওই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি আশা করি- আমাদের সমাজ উপকৃত হবে। তবে বিষয়টি আমি দেখছি।’ এসময় তিনি এই প্রতিবেদককে বিষয়টি ‘অভারলুক’ করার পরামর্শও দেন।