ঢাকা ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

উভয় লিঙ্গের শিশুর জন্ম, অসম্পূর্ণ মাথা, পৃথক অবস্থায় মগজ

জুলকার নাইন চাঁপাইনবাবগঞ্জ
ছেলে ও মেয়ের উভয়লিঙ্গ নিয়ে জন্ম নিয়েছে এক শিশু। মাথার অর্ধেক নেই, এমনকি মগজও রয়েছে পৃথকভাবে একটি থলেতে। এমন অস্বাভাবিক এক শিশুর জন্ম নিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। শুক্রবার (২৭ আগষ্ট) রাত ১০টার দিকে গোমস্তাপুর মহানন্দা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এমন শিশুর জন্ম হয়। মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ঘটনা খুবই বিরল।
গোমস্তাপুর উপজেলার বালুগ্রাম দক্ষিণটোলা গ্রামের ভ্যানচালক নাসির হোসেনের স্ত্রী জিন্নাতুন খাতুন শিশুটির জন্ম দিয়েছে। প্রতিবেদন লেখার সময় রাত ১২টা পর্যন্ত শিশুটি সুস্থ ছিল। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ, নার্স, আয়া ও শিশুটির স্বজনরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জানা যায়, প্রসব বেদনা উঠলে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্লিনিকে ভর্তি করা হয় জিন্নাতুন খাতুনকে। বাচ্চা প্রসবের নির্ধারিত তারিখের ২দিন পেরিয়ে যাওয়ার সিজার করার সীধান্ত নেয় চিকিৎসক। পরে ডাক্তার মো. হাসেম আলীর নেতৃত্বে সিজার করা হয়।
সিজারে অংশ নেয়া নার্স মোসা. ফাতেমা খাতুন  বলেন, অপারেশন থিয়েটারে সিজার করার সময়ই দেখতে পায়, বাচ্চাটির মাথা নেই। যা রয়েছে তা মাথার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। এমনকি মাথার ভেরতে থাকা মগজ বাইরে আলাদা একটি থলেতে আছে। অবাক করার বিষয় শিশুটির পুরুষাঙ্গ ও মেয়েদের প্রসবদ্বার দুটিই আছে।
তিনি আরও বলেন, অপারেশন থিয়েটারে এমন শিশু দেখে সবাই অবাক হয়েছিলাম। পরে তাদের স্বজনদের জানানো হয়। শিশুর মাকেও জানানো হয়েছে। জন্মের কিছুক্ষণ পর তার মা তাকে দেখছে।  এরপর জানাজানি হলে উৎসুক জনতা শিশুটি দেখতে ভিড় জমায়। দীর্ঘ সিজারের অভিজ্ঞতায় এমন শিশু কখনও দেখিনি।
শিশুটি জন্মের পর ক্লিনিকের আয়া মোসা. ইদন বেগম তার নাভি কেটেছে। তিনি জানান, জন্মের পর বাচ্চাটিকে আমার হাতে তুলে দেয়া হয়। বাইরে এনে নাভি কেটেছি। তার ওজনসহ বাকি সবকিছু স্বাভাবিক আছে। মুখে হাসিও দেখেছি। কিন্তু মাথা অর্ধেক নেই এবং পুরুষ ও নারীর উভয় লিঙ্গই রয়েছে। নাভি কাটার পর তাদের স্বজনদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
প্রসূতি জিন্নাতুন খাতুনের বোনের স্বামী আলামিন বলেন, আমার শালীর দ্বিতীয় শিশু এটি। এর আগে একটি ছেলে রয়েছে তার। আলট্রসোনোগ্রামেই শিশুটির অদ্ভুত আকৃতির বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছিলাম। শিশুটির মাথা নেই বললেই চলে। কপাল থেকেই শেষ হয়েছে। মগজ আলাদাভাবে একটি থলেতে আছে।
মহানন্দা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্রী নন্দন কুমার কর্মকার জানান, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে আমাদের ক্লিনিকে বহু সিজার হয়েছে। এমনকি আজকেও (শুক্রবার) ক্লিনিকে চারটি বাচ্চা প্রসব করেছে। তারমধ্যে তিনটিই সিজার হয়েছে। কিন্তু নাসির হোসেনের ও জিন্নাতুন খাতুন দম্পতির শিশুটি অদ্ভুত আকৃতি ও অঙ্গ নিয়ে জন্ম নিয়েছে। বর্তমানে মা ও শিশু দুইজনেই সুস্থ রয়েছে।
বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশন-বিএমএ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম রাব্বানী বলেন, এমন ঘটনা খুবই বিরল। উভয় লিঙ্গ নিয়ে জন্ম নেয়ার ঘটনা চিকিৎসা বিজ্ঞানে একেবারেই অদ্ভুত! তবে মাথার খুলির পরিপক্বতা না পেলে মগজ আলাদা হয়ে থাকতে পারে।
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

উভয় লিঙ্গের শিশুর জন্ম, অসম্পূর্ণ মাথা, পৃথক অবস্থায় মগজ

আপডেট টাইম : ০১:৫৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২১
জুলকার নাইন চাঁপাইনবাবগঞ্জ
ছেলে ও মেয়ের উভয়লিঙ্গ নিয়ে জন্ম নিয়েছে এক শিশু। মাথার অর্ধেক নেই, এমনকি মগজও রয়েছে পৃথকভাবে একটি থলেতে। এমন অস্বাভাবিক এক শিশুর জন্ম নিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। শুক্রবার (২৭ আগষ্ট) রাত ১০টার দিকে গোমস্তাপুর মহানন্দা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এমন শিশুর জন্ম হয়। মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ঘটনা খুবই বিরল।
গোমস্তাপুর উপজেলার বালুগ্রাম দক্ষিণটোলা গ্রামের ভ্যানচালক নাসির হোসেনের স্ত্রী জিন্নাতুন খাতুন শিশুটির জন্ম দিয়েছে। প্রতিবেদন লেখার সময় রাত ১২টা পর্যন্ত শিশুটি সুস্থ ছিল। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ, নার্স, আয়া ও শিশুটির স্বজনরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জানা যায়, প্রসব বেদনা উঠলে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্লিনিকে ভর্তি করা হয় জিন্নাতুন খাতুনকে। বাচ্চা প্রসবের নির্ধারিত তারিখের ২দিন পেরিয়ে যাওয়ার সিজার করার সীধান্ত নেয় চিকিৎসক। পরে ডাক্তার মো. হাসেম আলীর নেতৃত্বে সিজার করা হয়।
সিজারে অংশ নেয়া নার্স মোসা. ফাতেমা খাতুন  বলেন, অপারেশন থিয়েটারে সিজার করার সময়ই দেখতে পায়, বাচ্চাটির মাথা নেই। যা রয়েছে তা মাথার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। এমনকি মাথার ভেরতে থাকা মগজ বাইরে আলাদা একটি থলেতে আছে। অবাক করার বিষয় শিশুটির পুরুষাঙ্গ ও মেয়েদের প্রসবদ্বার দুটিই আছে।
তিনি আরও বলেন, অপারেশন থিয়েটারে এমন শিশু দেখে সবাই অবাক হয়েছিলাম। পরে তাদের স্বজনদের জানানো হয়। শিশুর মাকেও জানানো হয়েছে। জন্মের কিছুক্ষণ পর তার মা তাকে দেখছে।  এরপর জানাজানি হলে উৎসুক জনতা শিশুটি দেখতে ভিড় জমায়। দীর্ঘ সিজারের অভিজ্ঞতায় এমন শিশু কখনও দেখিনি।
শিশুটি জন্মের পর ক্লিনিকের আয়া মোসা. ইদন বেগম তার নাভি কেটেছে। তিনি জানান, জন্মের পর বাচ্চাটিকে আমার হাতে তুলে দেয়া হয়। বাইরে এনে নাভি কেটেছি। তার ওজনসহ বাকি সবকিছু স্বাভাবিক আছে। মুখে হাসিও দেখেছি। কিন্তু মাথা অর্ধেক নেই এবং পুরুষ ও নারীর উভয় লিঙ্গই রয়েছে। নাভি কাটার পর তাদের স্বজনদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
প্রসূতি জিন্নাতুন খাতুনের বোনের স্বামী আলামিন বলেন, আমার শালীর দ্বিতীয় শিশু এটি। এর আগে একটি ছেলে রয়েছে তার। আলট্রসোনোগ্রামেই শিশুটির অদ্ভুত আকৃতির বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছিলাম। শিশুটির মাথা নেই বললেই চলে। কপাল থেকেই শেষ হয়েছে। মগজ আলাদাভাবে একটি থলেতে আছে।
মহানন্দা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্রী নন্দন কুমার কর্মকার জানান, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে আমাদের ক্লিনিকে বহু সিজার হয়েছে। এমনকি আজকেও (শুক্রবার) ক্লিনিকে চারটি বাচ্চা প্রসব করেছে। তারমধ্যে তিনটিই সিজার হয়েছে। কিন্তু নাসির হোসেনের ও জিন্নাতুন খাতুন দম্পতির শিশুটি অদ্ভুত আকৃতি ও অঙ্গ নিয়ে জন্ম নিয়েছে। বর্তমানে মা ও শিশু দুইজনেই সুস্থ রয়েছে।
বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশন-বিএমএ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম রাব্বানী বলেন, এমন ঘটনা খুবই বিরল। উভয় লিঙ্গ নিয়ে জন্ম নেয়ার ঘটনা চিকিৎসা বিজ্ঞানে একেবারেই অদ্ভুত! তবে মাথার খুলির পরিপক্বতা না পেলে মগজ আলাদা হয়ে থাকতে পারে।